রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে আবারও এক কৃষকের ধান ক্ষেতে পানি না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন থেকে পানির জন্য ডিপ-টিউবওয়েল অপারেটরের কাছে ধর্না দিয়ে কোন প্রতিকার না পেয়ে উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জানে আলমের কাছে মৌখিক ভাবে অভিযোগ করেছেন। মৌখিক অভিযোগে পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কৃষককে পানি না দেওয়ার বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (বিএমডিএ)।
উপজেলার রিশিকুল ইউনিয়নের ঝিকড়াপাড়া গ্রামের কৃষক জারমান আলী অভিযোগ করেন, এবারের রোপা-আমন মৌসুমে জমির মালিক শামসুল সরকারের ছেলে সোহেল সরকারের কাছে থেকে ৪ বিঘা জমি বর্গা চাষ নিয়ে ধান চাষ করি। ধান চাষের পর থেকেই বিএমডিএর আওতাধীন পূর্ব বামনাইল-৭ এর স্কীমে জমিটি হওয়ায় সেই ডিপ-টিউবওয়েলের অপারেটর পশ্চিম বামনাইল গ্রামের মৃত মুনসুর সরকারের ছেলে রায়হান আমাকে জমিতে পানি দিতে চায় না।
আশেপাশের সকল কৃষক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানালে তার ডিপ ড্রাইভারকে পানি দিতে বললেও সে কারো কথা কর্ণপাত করে না। প্রচন্ড খরা হলে এতদিনে আমার জমির ধান শুকিয়ে মারা যেতো। ঘনঘন বৃষ্টির পানি হওয়ায় ধান বাঁচাতে পারছি ।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, তার সাথে আমার কোন দেনা পাওয়া নাই এলাকার সকলেই জানে তবে সে আমার সাথে অব্যাহত ভাবে খারাপ ব্যবহার করে আসছে। আমি গরীব মানুষ জমি আধি (বর্গা) নিয়ে জমি চাষ করছি। পূর্ব কোন শত্রুতা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কৃষক জারমান আলী জানান, রায়হায় একজনের জমি জবর দখল করে ভোগ করে আসছিলো। ১০-১২ বছর আগে সেই জমির প্রতিবাদ করে যার জমি তাকে ফেরত দিয়ে সহযোগিতা করেছিলাম সেই রাগ থেকে আমাকে এমন হয়রানী করে থাকতে পারে। আমাকে কোন মতেই পানি দিবে না ডিপ-ড্রাইভারের বিএমডিএর প্রধান কার্যালয়ে কোন এক কর্মকর্তার সাথে সু-সম্পর্ক আছে তাই তাকে ড্রাইভারি থেকে কেউ সরাতেও পারবে না বলে হুমকি দেয় দিয়ে আসছে।
ডিপ-ড্রাইভার রায়হান আলী বলেন, সে হঠাৎ করেই জমিতে এসে পানি চাওয়ায় আমি তাকে পানি দেয়নি। এর আগে সে কোনদিন জমিতে আসেনি তাই পানি দেয়নি। জমি ডিপের স্ক্রীমের অন্তভূক্তকিনা জানতে চাইলে সে বলে এই জমি তার না আর জমিটি স্কীমের আওতায় নাই বলে জানান। রায়হান আরো বলে, সে উশৃঙ্খল ছেলে আমাকে যখন তখন গালি গালাজ করে তাই পানি দেয় না। তবে কেনো গালি দেয় এমন জানতে চাইলে সঠিক কোন জবাব না দিয়ে বলেন, আমি তাকে পানি দেব না, আমি ডিপের ড্রাইভারি ছেড়ে দিলে সে পানি নিবে তাতে কোন সমস্যা নেই।
কৃষককে পানি না দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে গোদাগাড়ী বিএমডিএ-২ জোনের সহকারি প্রকৌশলী হাবিবুল বাশারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এই বিষয়টি আমি তদন্তের জন্য লোক পাঠিয়েছি। তারা আসলে বিস্তারিত জানতে পারব বলে জানান।
এই বিষয়ে উপজেলা সেচ-কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জানে আলম বলেন, পানি না পাওয়ার বিষয়টি সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এক কৃষক মোবাইলে ফোন করে জানিয়েছিলেন। আমি বিএমডিএর প্রকৌশলীকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে নির্দেশ দিয়েছিলাম তবে সর্বশেষ কি অবস্থা তা খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে বলে জানান।