২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৭:২৫:১৫ অপরাহ্ন
দুর্বলতার ফাঁকফোকর দিয়ে জঙ্গিরা বেরিয়ে গেছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-১১-২০২২
দুর্বলতার ফাঁকফোকর দিয়ে জঙ্গিরা বেরিয়ে গেছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, জঙ্গিরা দীর্ঘদিন পরিকল্পনা করেই ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ঘটিয়েছে। যেখানে আমাদের দুর্বলতা ছিল, সেই দুর্বলতার ফাঁকফোকর দিয়েই এরা (জঙ্গি) বেরিয়ে গিয়েছে। সে জন্যই এ দুর্বলতা, এটা কে তৈরি করে দিলো? কারা এর জন্য দায়ী, কারা সুযোগ-সুবিধা অভার লুক করেছে কিংবা কার গাফিলতি আছে, এর জন্য দুটি তদন্ত কমিটি আমরা করে দিয়েছি। 

তিনি বলেন, এ তদন্ত কমিটির রিপোর্ট এখনো আমাদের কাছে আসেনি। তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে, ওই রিপোর্ট অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেব। কাশিমপুর হাই সিকিউরিটিতেই জঙ্গিদের বেশিরভাগই রাখা হয়েছে। আমরা উদ্বিগ্ন যে, এখানো কোনরকম গ্যাপ আছে কিনা, সেটা আমরা ক্ষতিয়ে দেখছি। যারাই এ কাজের সঙ্গে জড়িত, সংশ্লিষ্ট বা গাফিলিত যেটাই হোক কোন দুর্বলতা যদি থাকে তাদের সে অনুযায়ী বিচারের আওতায় আনা হবে।

মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারা কমপ্লেক্স প্যারেড গ্রাউন্ডে ৬০তম ব্যাচ কারারক্ষী বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের প্রশিক্ষণার্থীদের শপথ এবং সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী, কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএসএম আনিসুল হক, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম, ঢাকা বিভাগীয় কারা উপ-মহাপরিদর্শক একেএম ফজলুল হক, কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেল সুপার মো. আমিরুল ইসলাম প্রমুখ।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, কারাগার ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। জনজীবনে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সমাজ ও রাষ্ট্র বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের কারাগারে নিরাপদে আটক রাখা হয়। কারাগারকে সংশোধনাগারে রূপান্তর করতে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে চলেছে। কারাগারে আটক বন্দিদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে দেশ ও বিদেশের শ্রম বাজারের চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দেশের ৩৮টি কারাগারে যুগোপযোগী ৩৯টি ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে দেশের সব কারাগারকে এ প্রশিক্ষণের আওতায় আনয়নের পরিকল্পনা রয়েছে।

তিনি বলেন, কারাগারে আটক কয়েদি বন্দিদের শ্রমে উৎপাদিত পণ্যসামগ্রীর বিক্রয় অর্থ হতে ৫০% লভ্যাংশ বন্দিদের মজুরি হিসেবে প্রদান করা হচ্ছে; যা বন্দিরা তাদের পরিবারের কাছে প্রেরণ করতে পারছেন।

কারাবন্দিদের সংশোধনের বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত করে কারা আইনকে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রিজন্স অ্যান্ড কারেকশনাল সার্ভিস অ্যাক্ট-২০২১ প্রণয়নের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কারাগারের বন্দি ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি, জীবনমান উন্নয়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করণার্থে বিভিন্ন মেয়াদি ৮টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে এবং আরও কয়েকটি নতুন প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কারাগারে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম বিভাগের ৩২টি কারাগারে বিভিন্ন নিরাপত্তা সামগ্রী সরবরাহ ও স্থাপন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের সকল কারাগারে নিরাপত্তা সামগ্রী সরবরাহ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শারীরিক উৎকর্ষ ও কর্ম দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বর্তমানে রাজশাহীতে কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়াও ঢাকার কেরানীগঞ্জে “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি' নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

কারারক্ষীদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, কারাভ্যন্তর হতে জঙ্গি ও শীর্ষ সন্ত্রাসীরা যাতে কোনরূপ সমাজ ও রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা চালাতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকবেন। এছাড়া জঙ্গি ও শীর্ষ সন্ত্রাসী বন্দিদের কারাগার হতে হাজিরার জন্য আদালতে প্রেরণ, চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ এবং অন্য কারাগারে স্থানান্তরকালে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করবেন।

৬০তম ব্যাচ কারারক্ষী বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সটি কাশিমপুরে গত ২৯ মে শুরু হয়ে ২৯ নভেম্বর শেষ হয়। প্রশিক্ষণে মোট ৩০১ জন কারারক্ষী অংশগ্রহণ করেন। এদের মেধ্যে বেস্ট ফায়ারার হিসেবে মেহেরপুর জেলা কারাগারের মো. ইমানুর রহমান শিপন, ড্রিলে প্রথমস্থান অধিকার করে নরসিংদী জেলা কারাগারের মো. রনি দেওয়ান, পিটিতে প্রথমস্থান করে খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারের মো. রবিউল ইসলাম এবং সর্ব বিষয়ে চৌকস নির্বাচিত হয়ে মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারের মিন্টু ঘোষ পুরস্কার গ্রহণ করেছেন।

শেয়ার করুন