০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ১১:৫৮:০৫ অপরাহ্ন
শিক্ষকের বিরুদ্ধে ‘অপমানের’ অভিযোগ তুলে ঢাবি ছাত্রলীগ নেতার আত্মহত্যাচেষ্টা
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৩-০৩-২০২৩
শিক্ষকের বিরুদ্ধে ‘অপমানের’ অভিযোগ তুলে ঢাবি ছাত্রলীগ নেতার আত্মহত্যাচেষ্টা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা এসএম এহসান উল্লাহ ওরফে ধ্রুব তারই এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ‘অপমান’ ও ‘অন্যায়’ করার অভিযোগ তুলে ‘আত্মহত্যার চেষ্টা’ করেছেন। 

এহসান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের প্রশিক্ষণবিষয়ক উপসম্পাদক এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক তানজীমউদ্দিন খানের নাম উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে ওই দুটি অভিযোগ তুলে গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাত সাড়ে আটটার দিকে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন এহসান। এরপরই তার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না বলে জানান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

পরে রাত পৌনে একটার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী। এরপর সেখানে এসে জড়ো হতে থাকেন বিভিন্ন হল থেকে ছাত্রলীগের আরও নেতাকর্মী। ‘শিক্ষকদের নগ্ন কাজ, রুখে দাঁড়াও ছাত্রসমাজ’, ‘শিক্ষার্থীর ওপর নির্যাতন কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘শিক্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘আমার ভাই নিখোঁজ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন তারা।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অবস্থান চলাকালে রাত দেড়টার দিকে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌ হলের পুকুরপাড়ে এহসানকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। তখন তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। তার রাজনৈতিক সহকর্মী ও বন্ধুদের থেকে জানা যায়, একসঙ্গে অনেকগুলো ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন এহসান। এহসানের ফেসবুক পোস্টে একই ইঙ্গিত রয়েছে।

এদিকে এহসানকে পাওয়া গেলেও উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান চালিয়ে যেতে থাকে ছাত্রলীগ। এ অবস্থায় রাত দুইটার দিকে সেখানে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান। সেখানে যান প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রাব্বানী। প্রক্টরের কাছ থেকে বিচারের আশ্বাস পাওয়ার পর রাত আড়াইটার পর থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে চলে যেতে থাকেন নেতাকর্মীরা।

এদিকে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর তার ফেসবুকে এহসানকে খুঁজে পাওয়া ও হাসপাতালে নেওয়ার ছবি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি লিখেন, ‘আমার ভাইয়ের কিছু হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ছাত্রলীগেরও রক্তের মূল্য আছে। প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে রক্তের মূল্য আদায় হবে। জয় বাংলা।’

হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার শহীদ ওরফে শুভ অভিযোগ করেন, ‘ছাত্রলীগ করার কারণে এহসানকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক তানজীমউদ্দিন খান অপমান করেছেন। এ অপমান সহ্য করতে না পেরে এহসান আত্মহননের চেষ্টা করেছেন।’

তবে এহসানকে ‘অপমান’ করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শিক্ষক তানজীমউদ্দিন।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের বেশ কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এহসানের সঙ্গে বিভাগের এক ছাত্রীর বন্ধুত্ব ছিল। এহসান তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু ছাত্রী তা প্রত্যাখ্যান করেন। পরে ছাত্রী অন্য একজনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান। এরপর থেকে দুজনের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। কয়েক দিন আগে বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা শিক্ষাসফরে যান। সফরের দায়িত্বে ছিলেন বিভাগের শিক্ষক তানজীমউদ্দিন। সফরকে কেন্দ্র করে ছাত্রীর নামে নানা অশালীন কথা ছড়িয়ে পড়ে। গত মঙ্গলবার শিক্ষক তানজীমউদ্দিনের সঙ্গে এহসানের কথা হয়। তিনিও ওই ছাত্রী সম্পর্কে নানা অভিযোগ করেন। একে ‘গুজব’ বলে আখ্যা দেন তানজীমউদ্দিন। তিনি বৃহস্পতিবার বিকালে ক্লাশে এহসানকে দাঁড়াতে বলেন, গুজব ছড়ানো বন্ধ করতে বলেন। গুজবটি কারা ছড়িয়েছেন, তাদের নামও জানতে চান তানজীমউদ্দিন। কিন্তু এহসান কারও নাম বলতে চাননি। এহসান কথা বলতে থাকলে তাকে ধমকের সুরে থামিয়ে দেন তানজীমউদ্দিন। 

ক্লাশে এহসানকে শিক্ষক তানজীমউদ্দিন বলেন, প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার কারণে সহপাঠী সম্পর্কে তিনি (এহসান) এভাবে কুৎসা রটাতে পারেন না। পরে তানজীমউদ্দিন চলে যান। এরপর এহসান আবার তানজীমউদ্দিনের কাছে গিয়ে বলেন, তিনি (তানজীমউদ্দিন) তাকে অপমান করেছেন। 

পরে এহসান ও তার কয়েকজন বন্ধুকে ফুচকা খাওয়ান তানজীমউদ্দিন। বিষয়টি নিয়ে আবার তাদের মধ্যে কথা হয়। পরবর্তীতে সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করার বিষয়ে ইঙ্গিত দেন। এতে এহসান লিখেন ‘প্রিয় তানজিম স্যার, আপনার পরে আমার আর কোনো রাগ নেই। ভালো থাকবেন। বাবা মা, ক্ষমা করে দিও।’  

এরপর রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদুল্লাহ হলের পুকুর পাড় থেকে তাকে উদ্ধার করা হয় এবং চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। তার বন্ধুদের দাবি, এহসান আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন। 

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান তাদের এক নেতাকে ক্লাশে অপমান করেছেন। সে অপমান সহ্য করতে না পেরে এহসান আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। তার জন্য তারা তানজীমউদ্দিনের বিচার চান। পরবর্তীতে প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রাব্বানীর বিচারের আশ্বাসে রাত আড়াইটার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে তারা অবস্থান তুলে নেন।

শিক্ষার্থীকে অপমানের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান বলেন, ‘গত সোমবার এহসান আমার রুমে আসে। রুমে এসে সে নিজের পরিচয় দিয়ে গত বছর হওয়া একটি ট্যুর নিয়ে একটা মেয়েকে ঘিরে খুব অশ্লীল কথা বলে। এরপর আমি তাকে বলি, তুমি কার সামনে এসব কথা বলছ? আমি তোমার শিক্ষক। আর আমিই তো তাদের ট্যুরে নিয়ে গেছি। আর আমি কি এতটাই দায়িত্বজ্ঞানহীন যে, আমার উপস্থিতিতে আমার শিক্ষার্থীরা এসব কাজ করবে? এরপর সে বলে, স্যার এটা সত্য। এটা অনেকেই বলাবলি করছে। তারপর আমি বলি, যারা বলছে, তুমি আমাকে নামগুলো বলো। ডিপার্টমেন্ট নিয়ে এত বাজে কথা; এগুলো বন্ধ হওয়া জরুরি। এর মধ্যে সে ওই মেয়েটাকে নিয়ে অনেক কথা বলার চেষ্টা করছে। আমি তাকে বলি, এটা তোমাদের পারসোনাল সমস্যা। আমি এটা নিয়ে আলাপ করতে চাই না।’

তিনি বলেন, ‘পরে শুনেছি এই ছেলের (এহসান) সঙ্গে সেই মেয়ের বন্ধুত্ব ছিল। একপর্যায়ে এই ছেলে সেই মেয়েকে প্রোপোজ করে, কিন্তু মেয়েটি রাজি হয়নি। এহসানের ভাষ্য, রিজেক্ট করার পর থেকে সেই মেয়ে এবং তার বন্ধুরা তাকে অপদস্ত করে বেড়ায়।’

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এ অধ্যাপক বলেন, ‘সর্বশেষ গতকাল (বৃহস্পতিবার) এক শিক্ষকের অনুরোধে আমি তাদের একটা ক্লাশ নিতে যাই। যদিও তাদের কোনো কোর্স আমি পড়াই না। তখন ক্লাশ শেষে আমি তাকে দাঁড় করাই। তাকে বলি, তুমি যে সুন্দরবন ট্রিপ নিয়ে এত আজেবাজে কথা বলছো আর সেটি আমার রুমে গিয়ে আমাকেও বলেছ, এটা কি ঠিক? তোমার আশেপাশে থাকা সবাই তো তোমার বন্ধু। তাদের সম্পর্কে কি এত আজেবাজে কথা বলা যায়? এরপর আমি তাকে বলি, এই রিউমারটা থামানো জরুরি। কারণ এটি আমার এবং ডিপার্টমেন্টের জন্য খারাপ। তুমি যদি অনেস্ট (সৎ) হও তাহলে যারা এটি তোমাকে বলেছে তাদের নামগুলো বলো। কারণ এটি আর বেশিদূর আগানো উচিত না। এরপর সে নাম বলতে না চাইলে আমি তাকে বলি, ওকে। এবার মুখটা স্টপ করে বসো। আমি আর এই বিষয়ে কথা বলতে চাই না।’

তানজীমউদ্দিন বলেন, ‌এরপর সে বসা থেকে আবার উঠে দাঁড়ায়। সে বলে, স্যার আমি কিন্তু ঠিক আছি। তখন আমি বলি, আমি এটা নিয়ে আর কোনো কথাই বলতে চাই না। এরপর আমাদের ক্লাশ শেষ হয়ে যায়। তখন সে আবার আমার সামনে আসে। আমি তাকে বলি, তুমি আমার থেকে দূরে থাকো। আমি কথা বলতে চাই না।  এরপর আমি আরও কিছুদূর আগানোর পর সে আবার আসে। বলে, স্যার আপনি আমাকে হিউমিলিয়েট (অপমান) করেছেন। মেয়েটা এবং তার বন্ধুরাও আমাকে হিউমিলিয়েট করে। আমি তাকে বলি, তাদের হিউমিলিয়েশনের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নাই। আমি তোমার কাছে শুধু জানতে চেয়েছি, কারা এগুলো ছড়াচ্ছে। এর বেশি কিছু তো আমি তোমার কাছ থেকে জানতে চাইনি। এরপর আমি যখন লিফটের সামনে যাই, তখন সে কান্নাকাটি করে আমাকে বলে, আমি আত্মহত্যা করলে আপনি দায়ী থাকবেন। এসব বলে সে চলে যায়।’

পরের অবস্থা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এ শিক্ষক বলেন, ‘পরে আমি নিচে নেমে তার দুজন সহপাঠীর সঙ্গে কথা বলছিলাম। তখন ধ্রুব (এহসান) আমাদের ক্রস করে চলে যাচ্ছিল। তখন আমি তাদের দুজনকে বললাম যে, ধ্রুবকে একটু ডাকো; আমি একটু কথা বলি। সে আসলে আমি তাকে বলি, তুমি কি কোনো মানসিক চাপে আছো? আমি তাকে বলি, তুমি কি দুপুরবেলা বা সকালে খেয়েছ? সে বলে, না স্যার। তখন আমি তাকেসহ আরও কয়েকজনকে নিয়ে খেতে যাই।  এরপর ফুচকা খাই। এ সময় আমি তাকে বোঝালাম যে, একটা মেয়ের ঘটনা নিয়ে কেন তুমি পেছনে পড়ে থাকছো? তোমার কাজ তো পড়ালেখা করা। মন দিয়ে পড়াশোনাটা করো। তখন সে আবারও বলল যে, আমি তাকে হিউমিলিয়েট করেছি। আমি বলি, তুমি মানসিক চাপে আছো। তোমার বাবার নম্বরটা আমাকে দাও। আমি কথা বলি।  এরপর সে আবার বলে, স্যার আপনি আমাকে হিউমিলিয়েট করেছেন, কারণ আমি ছাত্রলীগ করি। তার কথা শুনে আমি আকাশ থেকে পড়ি। বলি ছাত্রলীগের সঙ্গে এটার কী সম্পর্ক? এটাকে এভাবে দেখো না। সে বলে, না, ছাত্রলীগ করি বলেই আপনি আমাকে অপমান করেছেন। এরপর তাকে আরও বুঝিয়ে আমি বাসায় চলে যাই।  এরপর রাতে যখন আমি শিক্ষক ক্লাবে যাই, তখন একজন ছাত্রের মাধ্যমে আমি পোস্টের বিষয়টা জানতে পারি। এরপর তার বাবাকে ফোন দিই। তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তার মা ফোন ধরেন। উনার সঙ্গে আমি কিছুক্ষণ কথা বলি। এরপর আমি তার হলে তার কয়েকজন বন্ধুকে পাঠাই। তারা তাকে খুঁজে পায়নি। পরে আমি তাকে কল দিই। সে ফোন কেটে দেয়। এরপর আমার সাবেক এক শিক্ষার্থীকে আমি তার নাম্বারটা দিয়ে তাকে লোকেট করতে বলি। পরে তার অবস্থান জানা যায়।’

এদিকে এহসান শুক্রবার দুপুরে তার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া এক পোস্টে লিখেন, ‘আমি স্যারকে স্বপ্রণোদিত হয়ে কোনো দিন কিছু বলতে যাইনি। স্যারের কাছে আমি গিয়েছিলাম তিন দিন আগে। আমার নামে স্যারের কাছে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল সেই প্রেক্ষিতে আমি যে দোষী না সেটা বলতে গিয়েছিলাম। স্যারের মুখ থেকেই শুনলাম আমি ছাত্রলীগ করি, ছাত্রলীগের বড় বড় নেতারা আমাকে চিনে। স্যার বামপন্থী, (স্যার আমার দেখা সবচেয়ে ভালো একজন শিক্ষক) তার কাছে আমার ছাত্রলীগ ট্যাগ আমার বিরুদ্ধে ব্যবহার করে কান ভারী করা হয়।  ডিপার্টমেন্টের শিক্ষকদের কাছে আমি শুধুমাত্র ডিপার্টমেন্টের একজন ছাত্র এবং একজন ফটোগ্রাফার হিসেবেই পরিচিত। কোনো রাজনৈতিক পরিচয়ে পরিচিত না।  আমি আমার পক্ষের সব কথা স্যারকে বলি। প্রুফসহ স্যারকে দেখাতে চেয়েছিলাম। স্যার ওগুলো দেখতে চাননি।  স্যারকে বলি আমি এই ব্যাপারে দোষী না।’

তিনি আরও লিখেন, গতকাল ক্লাশ ছিল। ক্লাশে আমি আধঘণ্টা পরে ঢুকি। স্যার ক্লাশ শেষে হঠাৎ আমাকে দাঁড়াতে বলেন। তিনি বলেন, এবার বলো এই রিউমার কারা কারা ছড়িয়েছে। আমি বলি, I can show you screenshots sir (as proofs) but I can't tell you my friends name. স্যার এরপরে সবার সামনে আমাকে খুব বাজেভাবে ইন্সাল্ট (অপমান) করেন, এমনকি আমার পারসোনাল লাইফ নিয়েও ইন্সাল্ট করেন।  আমি যত বড় নেতাই হই না কেন তিনি ছয়তলা থেকে ধরে আমাকে ফেলে দিবেন। আমি তাকে বিনীতভাবে বলি I want to say something। তিনি আমাকে কিছুই বলতে দেননি।  ক্লাশ শেষে আমি স্যারের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলাম স্যারকে কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলাম স্যার আমি তো এই কাজ করিনি, আমাকে অনেকে বলেছে। কিন্তু তাদের নামতো আমি বলতে পারব না। আপনি কেন সবার সামনে আমাকে এইভাবে ইন্সাল্ট করলেন।  স্যার তখনো আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেন। তখন স্যারকে বলি আমি যদি আজকে সুইসাইড করে বসি এই দায়ভার আপনার স্যার। স্যার তখন আমাকে কয়েকবার ডাকেন। আমি স্যারের ডাক না শুনে চলে আসি। নিচে গিয়ে দেখি স্যার আমাদের কয়েকজন ব্যাচমেটের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছেন। আমি ইগনোর করে চলে আসছিলাম। আমাদের একজন ব্যাচমেট রিকোয়েস্ট করে স্যারের কাছে নিয়ে যান। স্যার জোর করে ধরে নিয়ে গিয়ে ফুচকা খাওয়ান। আমি স্যারকে তখন আবারও বলি স্যার ফুচকা খাওয়ালে তো আর আমাকে যে অন্যায়ভাবে অপমান করা হলো সেটা তো আর ঠিক হয়ে যাবে না!’

ঢাবির প্রক্টর একেএম গোলাম রব্বানী যুগান্তরকে বলেন, এহসান ঘুমের ওষুধ খেয়ে অচেতন হয়ে শহীদুল্লাহ্ হলের পুকুরপাড়ে পড়েছিল। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে জরুরি চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। তাকে দেখতে আমি গতরাতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। বিভাগের চেয়ারম্যান বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত হয়েছেন। এ নিয়ে কিভাবে অগ্রসর হওয়া যায়, সে ব্যাপারে তিনি বিভাগের একাডেমিক কমিটি ও শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

শেয়ার করুন