২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৭:৪৪:৪১ অপরাহ্ন
পূর্ণ হলেই ছাড়ছে লঞ্চ, সদরঘাটে চাপ কম
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৪-২০২৩
পূর্ণ হলেই ছাড়ছে লঞ্চ, সদরঘাটে চাপ কম

শুক্রবার সকালে সদরঘাটে যাত্রীর কিছুটা চাপ ছিল। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই চাপ কমে গেছে। এখন আর কোনো সময়সূচি মেনে ছাড়ছে না লঞ্চ। যাত্রী পূর্ণ হয়ে গেলেই লঞ্চ ছেড়ে দিচ্ছে।


যাত্রীর চাপ থাকায় সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সদরঘাট থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ৩১টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। আজও দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ১০০টির মতো লঞ্চ সদরঘাট ত্যাগ করতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।



চাঁদ দেখা সাপেক্ষে শনিবার (২২ এপ্রিল) কিংবা রোববার (২৩ এপ্রিল) দেশে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাস ও ট্রেনের মতো লঞ্চেও রাজধানী ছাড়ছেন বিপুল সংখ্যক মানুষ।


সদরঘাটে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে অবস্থান করে দেখা গেছে, যাত্রীদের চাপ কম। বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তা ও লঞ্চ সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, ঈদের আগের দিন সদরঘাটের অবস্থা এমন থাকে না। এ সময়ে পন্টুনে পা ফেলার জায়গা থাকে না। সেখানে টার্মিনালের অনেক স্থানই খাঁ খাঁ করছে। অনেক লঞ্চ খালি পড়ে আছে। মূলত পদ্মা সেতু হওয়ার পর লঞ্চের যাত্রী ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমে গেছে।



তবে বিকেলে যাত্রীদের চাপ কিছুটা বাড়তে পারে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট।


সদরঘাটে আসতে আগে যেমন গুলিস্থান, রায়সাহেব বাজার, ভিক্টোরিয়া পার্ক এলাকায় তীব্র যানজটের কাবলে পড়তে হতো, এখন পথের সেই দুর্ভোগও নেই।


আবার অনেক লঞ্চ যাত্রীতে পূর্ণ হলেও সেগুলো ছাড়ছে না। এতে যাত্রীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ঢাকা-বেতুয়া (চরফ্যাশন) রুটে চলাচল করা এমভি টিপু-১৪ লঞ্চের ডেক যাত্রীতে পূর্ণ হয়ে যায় সকাল দশটার মধ্যেই। এ লঞ্চের যাত্রী নওয়াব আলী বলেন, এই গরমের মধ্যে সকাল থেকে লঞ্চে বসে আছি, ছাড়ার নাম নাই। কখন ছাড়বে সেটাও তারা বলছে না। আগে বললে আমরা অন্য লঞ্চে চলে যেতাম।



পূর্ণ হলেই ছাড়ছে লঞ্চ, সদরঘাটে চাপ কম


মো. আবুল কাশেমও বললেন একই কথা। তিনি বলেন, লঞ্চ যাত্রীতে ভরা। কেন ছাড়ছে না জানি না। বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে তো আর গরমে টিকতে পারছি না।


তবে টিপু-১৪ লঞ্চের স্টাফ মো. রাকিব বলেন, আমাদের এখনো অনেক কেবিন খালি আছে। যাত্রী আসলে আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল ছেড়ে দেওয়ার পর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।



বিআইডব্লিউটিএ’র ঢাকা নদীবন্দরের (সদরঘাট) যুগ্ম পরিচালক মো. কবির হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, সকালে যাত্রীর বেশ চাপ ছিল। তাই সকাল থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত ৩১ টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে।


হাতিয়া, বেতুয়া, চরফ্যাশন, ভোলা, বরগুনা, বরিশাল, পটুয়াখালী রুটের লঞ্চ ছেড়ে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, যাত্রী পূর্ণ হলে এখন লঞ্চ ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে যাত্রীর সংখ্যা আগের তুলনায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কম।


বুধবার ১০৭ এবং বৃহস্পতিবার ১৪৪ টি লঞ্চ সদরঘাট থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে বলেও জানান যুগ্ম পরিচালক।




পূর্ণ হলেই ছাড়ছে লঞ্চ, সদরঘাটে চাপ কম


নৌপুলিশের ঢাকা অঞ্চলের পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, লঞ্চে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে গত ১৭ এপ্রিল থেকে আমরা তৎপর রয়েছি। সার্বক্ষণিক টহল দেওয়া হচ্ছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে না।


কোনো কোনো রুটে যাত্রীর চাপ থাকলেও কোনো কোনো রুটে যাত্রীর সংখ্যা একেবারেই কম। সংশ্লিষ্ট জানিয়েছেন ভোলা, চরফ্যাশন, বরগুনা রুটে যাত্রীর চাপ রয়েছে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও বরগুনা ও ভোলা রুটের কোনো কোনো লঞ্চের ছাদেও যাত্রীদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। তবে যাত্রী কম বরিশালে রুটে। কারণ পদ্মা সেতু হওয়ার কারণে এখন তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা থেকে বরিশাল যাওয়া যায়।


বরিশাল রুটে যাত্রীর সংখ্যা ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ কমে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।


বেলা ১১টার দিকে বরিশাল রুটে চলাচলকারী পারাবত-১২ লঞ্চে গিয়ে দেখা গেছে, লঞ্চ প্রায় খালি। এ লঞ্চের ম্যানেজার সুমন খান বলেন, যাত্রী খুবই কম। আমরা প্রতিদিনই লস দিচ্ছি। আমরা মনে করি ৬০ শতাংশ যাত্রী কমে গেছে।


তিনি বলেন, আমার লঞ্চে মোট কেবিন রয়েছে ২৬১টি, ভিআইপি কেবিন রয়েছে সাতটি। এখন পর্যন্ত মাত্র আমার ১৫টি সিট বুকিং হয়েছে। মূলত পদ্মা সেতু হওয়ার পর আমাদের ব্যবসা শেষ হয়ে গেছে।

শেয়ার করুন