চারদিনের সরকারি সফরে জাপান পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে আজ মঙ্গলবার বিকেলে টোকিও পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) জাপানের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে টোকিওর হানেদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান।
বিমানবন্দরে জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তাকেই সানসুকে ও জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাহাবুদ্দিন আহমেদ প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান। এরপর বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
এর আগে জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ১৫ দিনের সরকারি সফরের প্রথম পর্যায়ে টোকিওর উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী। মঙ্গলবার সকাল ৭টা ৫৬ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমান।
টোকিওর বিমানবন্দর থেকে আনুষ্ঠানিক মোটর শোভাযাত্রা সহকারে প্রধানমন্ত্রীকে আকাসাকা প্রাসাদে নিয়ে যাওয়া হয়। জাপান সফরকালে প্রধানমন্ত্রী টোকিওর এই প্রাসাদেই অবস্থান করবেন। সফরকালে টোকিওর সঙ্গে আটটি চুক্তি সই হবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন জানান, দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পর কৃষি, মেট্রোরেল, ইন্ডাস্ট্রিয়াল আপগ্রেডেশন, শিপ রিসাইক্লিং, কাস্টমস ম্যাটারস, ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি, ডিফেন্স কো-অপারেশন, আইসিটি ও সাইবার সিকিউরিটি কো-
এছাড়াও জাপান সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, জাইকার প্রেসিডেন্ট, জাপান বাংলাদেশ পার্লামেন্টরি ফ্রেন্ডশিপ লীগের প্রেসিডেন্ট, জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এর গভর্নর, জাপানের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের স্ত্রী।
জাপান সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট, জাপানে বসবাসরত বাংলাদেশ কমিউনিটি আয়োজিত সংবর্ধনাসহ অনেকগুলো কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।
জাপান সফরে প্রধানমন্ত্রী মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য বিশিষ্ট জাপানিজ নাগরিকদের সম্মাননা দেবেন। এছাড়া তিনি মিরাইকান জাতীয় জাদুঘর পরিদর্শন করবেন।
শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) স্থানীয় সময় বিকেলে টোকিও থেকে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থানীয় সময় বিকেলে ওয়াশিংটন ডালাস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন প্রধানমন্ত্রী। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তিনি সফরকালীন আবাসস্থলে যাবেন।
সোমবার (১ মে) বিশ্বব্যাংক সদরদপ্তরে বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে সম্পর্কের ৫০ বছর উপলক্ষে ‘রিফ্লেকশন অন ৫০ ইয়ার্স অব ওয়ার্ল্ড ব্যাংক– বাংলাদেশ পার্টনারশিপ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন।
একইদিন প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ভাইস-প্রেসিডেন্টদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন। এছাড়া বিশ্বব্যাংকের বোর্ড মেম্বারদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
আরও পড়ুন: দুর্নীতিবাজরা উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ঠেকাতে মাঠে নেমেছে
সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন যুক্তরাষ্ট্র চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধি দল।
ওয়াশিংটন সফরকালে প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগদানসহ বেশ কিছু কর্মসূচিতে যোগ দেবেন।
বৃহস্পতিবার (৪ মে) ওয়াশিংটন থেকে যুক্তরাজ্যের লন্ডন যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের আমন্ত্রণে লন্ডন সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
শুক্রবার (৫ মে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাকিংহাম প্যালেসে নতুন রাজা এবং রানির রাজ্যাভিষেকের আগাম সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এছাড়া এদিন শেখ হাসিনা কমনওয়েলথ নেতাদের সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন।
শনিবার (৬ মে) ওয়েস্ট মিনিস্টারে রাজা ও রানির রাজ্যাভিষেকের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন।
লন্ডন সফরে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কর্মসূচি এবং যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন।
তিন দেশ সফর শেষে মঙ্গলবার (৯ মে) সকালে দেশে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।