২৪ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ০৮:১৬:২০ পূর্বাহ্ন
বাংলাদেশের যেসব অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌মোচা
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-০৫-২০২৩
বাংলাদেশের যেসব অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌মোচা

কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ ঘূর্ণিঝড় মোচা নিয়ে আগাম বার্তা দিয়েছেন। আবহাওয়ার খবর বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল হতে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে ৮ থেকে ৯ মের মধ্যে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে আন্দামান ও নিকবার দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে লঘুচাপ সৃষ্টি হয়ে ১০ মের মধ্যে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়া ও ১১ মে পুর্নাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা নির্দেশ করছে। 

একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল প্রায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ সম্ভাবনার কথা নির্দেশ করছে, যে আগামী ১০ মে আন্দামান ও নিকবার দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে ঘূর্ণিঝড় মোচা সৃষ্টি হবে। 

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল হতে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাষ অনুসারে ঘূর্ণিঝড় মোচা ১৪ মে মধ্যরাতের পরে থেকে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় এলাকা দিয়ে সরাসরি স্থল ভাগে আঘাত করার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। আমেরিকার আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল গ্লোবাল ফোরকাস্ট সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে স্থলভাগে আঘাত করার সময় ঘূর্ণিঝড়টি খুবই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝঢ়ে পরিণত হয়ে আঘাত করার সম্ভাবনা রয়েছে। সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে ঘূর্ণিঝড় মোচা স্থলভাগে আঘাতের সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতি থাকতে পারে ১৪০ থেকে ১৭০ কিলোমিটার। 

ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বড় জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ১৪ মে সন্ধ্যার পর থেকে যদি ঘূর্ণিঝড়টি স্থাল ভাগে আঘাত হানা শুরু করে তবে কমপক্ষে ১০ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের চর ও উপকূলীয় এলাকাসমূহ। ঘূর্ণিঝড়টির সৃষ্টি ও স্থাল ভাগে আঘাত করার সময় যদি মাত্রা ৩ দিন পিছিয়ে ১৭ থেকে ১৮ মে হয় তবে ১৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের চর ও উপকূলীয় এলাকাসমূহ। কারণ ১৮ মে আমাবস্যার রাত।

ঘূর্ণিঝড়ের আগাম বার্তা দিয়ে তিনি সচেতনতা জারি করেছেন-

১) উপকূলীয় ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রগুলো আগামীকাল থেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

২) দেশের কৃষক ভাইদের সকল পাকা ধান মে মাসের ১২ তারিখের মধ্যে কেটে গোলায় তোলার অনুরোধ জানাচ্ছি 

৩) উপকূলীয় এলাকার মৎসচাষিদের জলোচ্ছ্বাস থেকে মাছের ঘের রক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি

৪) লবণ চাষিদের মে মাসের ১২ তারিখের মধ্যে সকল লবণ তুলে ফেলার অনুরোধ জানাচ্ছি

৫) জেলে ভাইদের অনুরোধ জানাচ্ছি ১০ তারিখের পরে নতুন করে সমুদ্রে মৎস্য আহরণে না যাওয়ার জন্য। গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া চট্টগ্রাম বিভাগের জেলেরা যেন অবশ্যই ১১ মে এর মধ্যে ও খুলনা বিভাগের জেলেরা অবশ্যই ১২ মে এর মধ্যে উপকূলে ফিরে। ১১ মে এর পরে যদি কোনো জেলে সমুদ্রে মাছ ধরতে যায় তবে প্রাণ নিয়ে ফেরার সম্ভাবনা খুবই কম। 

৬) বন্যা ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রতি বিনীত অনুরোধ উপকূলীয় সকল বেড়িবাঁধের সকল ত্রুটি কিংবা দুর্বল স্থানগুলো মে মাসের ১২ তারিখের পূর্বেই মেরামত করার জন্য।  

তিনি বলেন, পুরো এপ্রিল মাস উত্তর ও মধ্য বঙ্গোপসাগরে কোনো লঘু চাপ সৃষ্টি হয়নি। ফলে ব্যাপক পরিমাণ শক্তি জমা হয়েছে বঙ্গোপসাগরের সমুদ্রের পানিতে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় মোচা খুবই শক্তিশালী হবে। 

মে মাসের ৩ তারিখের মধ্যে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ও মে মাসের ৫ তারিখের মধ্যে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ নিশ্চিত হওয়ার যাবে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় মোচা ঠিক কোন শক্তিতে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। 

শেয়ার করুন