২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৮:২০:০০ অপরাহ্ন
রাশিয়ার ‘নিষেধাজ্ঞার স্বর্ণে’ হাসছে ৩ দেশ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-০৫-২০২৩
রাশিয়ার ‘নিষেধাজ্ঞার স্বর্ণে’ হাসছে ৩ দেশ

উৎপাদন করা সোনার পাহাড় নিয়ে বড় বিপদে পড়ে যাচ্ছিল রাশিয়া৷ বছরে উৎপাদিত ৩২৫ টন সোনার পুরোটাই দেশের সীমানায় বন্দি থাকলে বড় বিপর্যয় নামতে পারতো রুশ অর্থনীতিতে৷ তবে সুকৌশলে সেই বিপদ এড়িয়েছে ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ। আর এতে লাভবান হয়েছে সংযুক্ত আমিরাত, চীন ও তুরস্ক৷

রাশিয়ার আবগারি বিভাগের বরাত দিয়ে ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা নেমে আসার পর সে দেশ থেকে প্রায় এক হাজার সোনার চালান গেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে৷ এই সময়ে সেখানে রুশ সোনার আমদানি না কমে বরং বেড়েছে৷ নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগের বছর, অর্থাৎ ২০২১ সালে ৭৪ দশমিক ৩ টন সোনা রাশিয়া থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে গেছে। অথচ ২০২২ সালে সেখানে আমদানিকৃত সোনা ১ দশমিক ৩ টন বেড়ে হয়েছে ৭৫ দশমিক ৭ টন৷

ইউক্রেনে হামলা চালিয়ে নিষেধাজ্ঞার চাপে পড়া রাশিয়ার সোনার সবচেয়ে বড় ক্রেতা এখন সংযুক্ত আরব আমিরাত৷ তার ঠিক পরেই রয়েছে চীন ও তুরস্ক৷ ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ৩ মার্চ পর্যন্ত এই দুটি দেশে ২০ টন করে সোনা রপ্তানি করেছে রাশিয়া৷

জার্মান সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, রাশিয়ার কাস্টমস বিভাগের নথিভুক্ত তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে বড় দেশটি নিষেধাজ্ঞা শুরুর পর থেকে যে পরিমাণ সোনা রপ্তানি করেছে, তার ৯৯ দশমিক ৮ শতাংশই গেছে উল্লিখিত তিন দেশ, অর্থাৎ সংযুক্ত আরব আমিরাত, চীন ও তুরস্কে৷

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞার খড়গ নেমে আসার আগে রাশিয়ার সোনা সবচেয়ে বেশি যেতো ব্রিটেনে৷ কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলো নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর বিশ্বের অনেক বহুজাতিক ব্যাংক, ধাতু পরিশোধন ও ক্রয়-বিক্রয় প্রতিষ্ঠান মস্কোর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়৷ ২০২২ সালের ৭ মার্চ লন্ডন বুলিয়ন মার্কেট অ্যাসোসিয়েশনও রাশিয়া থেকে সোনার বার আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করে৷ ২০২২ সালের আগস্টের মধ্যে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ), সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং জাপানও রাশিয়ার সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দেয়৷

রাশিয়ার কৌশল

নিষেধাজ্ঞা শুরুর পর পরই টিকে থাকার কৌশল ঠিক করে নেয় রাশিয়া৷ পুতিন আক্রমণ থামাবেন না, তাই নিষেধাজ্ঞা থাকবেই৷ এ অবস্থায় যেসব দেশ নিষেধাজ্ঞা দেয়নি তাদের সঙ্গে আগের চেয়ে বেশি হারে সোনা রপ্তানির চেষ্টা শুরু করেন রুশ উৎপাদনকারীরা৷ ক্রেতাদের প্রকৃত বাজারমূল্যের চেয়ে ১ শতাংশ কমে ক্রয়ের সুযোগ দেন তারা৷

রাশিয়ার এ কৌশলকে অকার্যকর করার চেষ্টা হয়েছে অনেক, কিন্তু তাতে কাজ হয়নি৷ যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি হুমকি দিয়েছিল তুরস্ক ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে৷ ওয়াশিংটন বলেছিল, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে- এমন কোনো দেশ বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক টিকিয়ে রাখলে দেশ দুটি জি-৭ অঞ্চলের বাজারে প্রবেশাধিকার হারাবে৷

তবে তিন দেশে রপ্তানি অব্যাহত রাখতে পারলেও উৎপাদিত সব সোনা যে রাশিয়া বিক্রি করতে পারছে, বিষয়টা তেমন নয়৷ ২০২২ সালে মোট ৩২৫ টন সোনা উৎপাদন করেছে রাশিয়া৷ সেখান থেকে এ পর্যন্ত রপ্তানি হয়েছে মাত্র ১১৬ দশমিক ৩ টন৷

শেয়ার করুন