রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচন থেকে সরে যেতে চান জাতীয় পার্টির মেয়রপ্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন। ইভিএমে সুষ্ঠু ভোট হবে না, এমনটি দাবি করে তিনি বলেন, নির্বাচনে আসার সিদ্ধান্তটাই ছিল ভুল। এখন নির্বাচন থেকে সরে যেতে চায়। এ জন্য কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত জানতে চেয়েছি। রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত কেন্দ্র থেকে কিছু জানানো হয়নি। তাই সরে যেতে পারছি না।’
এদিকে, নির্বাচন থেকে সরে যেতে চাইলেও টুকটাক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন লাঙ্গল প্রতীকের এই প্রার্থী। রোববার বিকালে নগরীর দরগাপাড়া এলাকায় তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করছিলেন। সেখানেই তিনি জানান, ভোট চাইতে তিনি সাধারণ মানুষের কাছে যখন যাচ্ছেন, তখন তারা বলছেন এই নির্বাচনের ফল আগেই প্রস্তুত হয়ে গেছে। ইভিএমে সুষ্ঠু ভোট হবে না। শুধু শুধু ভোটের মাঠে এসে কষ্ট করার দরকার নেই। বরিশাল ও খুলনার নির্বাচন দেখার পর তাঁর কাছেও বিষয়টি এমন মনে হচ্ছে। তাই তিনি সরে যেতে চান।
সাইফুল ইসলাম স্বপন জাপার রাজশাহী মহানগর কমিটির আহ্বায়ক। এছাড়া দলের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যানও তিনি। এর আগে স্বপন আগে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি করতেন। ২০১৮ সালে তিনি রাজশাহী-২ (সদর) আসনে দলটির এমপি প্রার্থীও হয়েছিলেন। দলীয় আম প্রতীকে তিনি ভোট পেয়েছিলেন ২০৭টি। রাজশাহী সদর সংসদীয় আসনের এলাকাটিই সিটি করপোরেশন। সিটি নির্বাচনে সাইফুল ইসলামের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী ও সদ্য সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নের জন্য শহরে তাঁর জনপ্রিয়তা এবং গ্রহণযোগ্যতা এবার বেড়েছে। তাঁর দলের সাংগঠনিক শক্তিও জাপার চেয়ে অনেক বেশি।সেখানে সাইফুল ইসলাম স্বপনের উল্লেখযোগ্য কিছুই নাই।
এইসব কারণেই সাইফুল ইসলাম স্বপন নির্বাচন থেকে সরে যেতে চাচ্ছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জনপ্রিয়তা তো মেশিন দিয়ে মাপা যায় না। সুষ্ঠু নির্বাচন হতো ব্যালটের মাধ্যমে, তাহলে না জনপ্রিয়তা বোঝা যেত। আমরা মনে করেছিলাম, ইভিএমে ভোট হলেও সরকার অন্তত দেখানোর জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন করবে। কিন্তু আসলে তা না। নির্বাচন একজনের জন্য হয়ে গেছে। আমাদের কোন সুযোগই দিচ্ছে না। তাই সরে যাওয়ায় ভাল।’
সরে যেতে চাইলেও প্রচারণা চালানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন থেকে সরে যাওয়াটাই ভাল হবে। কারণ, এখানে সাধারণ মানুষের মতামতের কোন মূল্য থাকবে না। বিষয়টি আমি আমার দলকে জানিয়েছি। কেন্দ্র থেকে এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। শেষপর্যন্ত যদি দল ভোটে থাকতে বাধ্য করে তাহলে থাকতে হবে। সে জন্য টুকটাক প্রচারণা চালাচ্ছি।’
আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন ছাড়া অন্য আরেকজন প্রার্থী হলেন জাকের পার্টির গোলাপ ফুল প্রতীকের প্রার্থী লতিফ আনোয়ার। এই নির্বাচন নিয়ে লতিফ আনোয়ার এখনও কোন অভিযোগ তোলেননি। সবকিছু ঠিকঠাকই দেখছেন তিনি।
তবে বরিশাল সিটি নির্বাচনে দলীয় মেয়রপ্রার্থীর ওপর হামলার প্রতিবাদে রাজশাহী সিটি নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুরশিদ আলম। যদিও ইভিএমে হাতপাখা প্রতীক থাকবে। কেউ চাইলে সেখানে ভোটও দিতে পারবেন। আগামী ২১ জুন রাজশাহী সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে।