আমের রাজধানী রাজশাহীর বাজারে উঠেছে বাহারি আম। গ্রামগঞ্জের ছোট ছোট হাট-বাজার থেকে শুরু করে শহরের বড় বড় আড়তে এখন আমের স্তূপ।
আর এই পাকা আমের ম ম গন্ধে মাতোয়ারা চারদিক। যে দিকেই চোখ যায়, চারদিকে শুধু আম আর আম। আর প্রতিবারের মতো এবারও রাজশাহীর আমের সবচেয়ে বড় হাট বসেছে পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজারে।
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মৌসুমি আম ব্যবসায়ীরা ভিড় করেন এই হাটে। পাইকারি বাজার হলেও এখানে খুচরা আম কিনতে পাওয়া যায়। তাই অনেকে আসেন পরিবারের জন্যও সুমিষ্ট আম কিনতে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বানেশ্বর বাজারের আশপাশের সড়কগুলোতে এখন শুধুই আম ভর্তি ভ্যান ও ট্রলির আনাগোনা। সবার গন্তব্য বানেশ্বর বাজার। বাজারের অসংখ্য আড়তে উঠেছে নানা জাতের আম।
প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় মুখরিত থাকে বানেশ্বর বাজার। এ বাজার থেকেই আম যায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। প্রায় শতাধিক আড়তদার এখানে ব্যবসা করেন।
বানেশ্বর বাজারের আড়তদার মানিক মিয়া জানান, এ বাজারে পুঠিয়া, চারঘাট, বাঘা, বেলপুকুর, মনিহার, দুর্গাপুরসহ রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আম আসে। গুঁটি, গোপালভোগ, হিমসাগর, লক্ষণভোগ, ল্যাংড়া, আম্রপালিসহ বাহারি আম বাজারে এসেছে।
বাজারে প্রতি মণ গুটি আম ৭০০-১০০০ টাকা, গোপালভোগ ১৫০০-২০০০ টাকা, লকনা ৯০০-১০০০ টাকা, হিমসাগর ১৫০০-২০০০ টাকা, লক্ষণভোগ ১০০০-১২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
আড়তদাররা জানান, সবগুলো আড়তেই টাটকা আমের আমদানি। এখন আড়তে যেসব আম আছে, তার অধিকাংশই গাছ পাকা। আর শক্ত থাকতেই গাছ থেকে নামানো হয়েছে যেসব আম তা দূর-দূরান্তে পাঠানোর জন্য।
এখানকার এসব টাটকা আম ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আম পাঠানো হয় জানান তারা। বানেশ্বর হাটে আম কিনতে ভিড় করেছেন কয়েকজন ক্রেতা।
বাজারে আসা আম চাষি রফিকুল জানান, জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা ও বেঁধে দেওয়া সময় সূচি মেনে রাজশাহীতে গাছ থেকে আম পাড়া শুরু হয়েছে।
জৈষ্ঠ্যের তাপদাহ যতই বাড়ছে বিভিন্ন জাতের আম ততই পেকে যাচ্ছে। তবে এবার ফলন খুব ভালো হলেও দাম কম পাওয়া যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন জানান, বানেশ্বর হচ্ছে আমের সবচেয়ে বড় বাজার। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসে এখান থেকে আম কেনেন। এখানে আমাদের একটা নিরাপত্তার বিষয় আছে।
ব্যবসায়ীরা যাতে নির্বিঘ্নে আম বেচা কেনা করতে পারে, তাদের মালামাল নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে এই বিযয় গুলোতে আমরা গুরুত্ব দিয়ে থাকি।
আমের সময় রাস্তাটা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়, আমরাও বেশ সচেতন থাকি। যাতে চুরি-ডাকাতি না হয়, যানবহন চলাচল স্বাভাবিক থাকে, ট্রাফিকটা সুন্দর থাকে আমরা সে বিষয় লক্ষ্য রাখা হয় বলেও জানান তিনি।