দক্ষিণ কোরিয়ায় গত চার দিনের টানা বর্ষণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। এ পর্যন্ত ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখনো অনেকেই নিখোঁজ রয়েছেন।
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার চেয়ংজু শহরে মাটির ৪৩০ মিটার গভীর টানেলের ভেতর আটকে পড়া যানবাহন উদ্ধারে বেগ পেতে হচ্ছে উদ্ধারকারীদের। টানেলের ভেতর যানবাহন থেকে এ পর্যন্ত ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ রোববার বিবিসি, আল জাজিরা ও এএফপির প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, টানেলের ভেতর ঠিক কতজন যাত্রী ও চালক আটকে আছেন সেটি নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। ৬৮৫ মিটার দৈর্ঘ্যের এই টানেলের ভেতর অন্তত ১৫টি যানবাহন আটকে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গতকাল শনিবার দক্ষিণ কোরিয়া জুড়ে প্রায় ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, টানা কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিতে মিহো নদীর তীর ধসে পড়ে। এতে গত শনিবার টানেল প্লাবিত হয়। টানেলটি খুব কম সময়ের মধ্যেই প্লাবিত হয়। ফলে যানবাহনগুলো বেরিয়ে যেতে পারেনি।
টানেলের ভেতর আটকা পড়াদের সন্ধান পেতে ছুটে আসছেন পরিবারের সদস্যরা। সন্তানের খোঁজে আসা এক ব্যক্তি ইয়ুনহাপকে বলেন, ‘আমি কোনো আশা দেখছি না। তবুও আমি এই জায়গা ছেড়ে যাব না। ঠান্ডা পানির ভেতর আমার সন্তানের যে কতটা কষ্ট হচ্ছে সেটা ভেবে আমার হৃদয় চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাচ্ছে।’
দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ইয়ুনহাপ জানিয়েছে, প্রবল বৃষ্টিপাত ও বন্যায় কয়েক হাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এদের মধ্য প্রায় ৬ হাজার ৪০০ জনকে তাদের নিজ বাড়ি থেকে সরিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রবল পানির তোড়ে প্রায় ১৯টি গাড়ি ভেসে গেছে।
কোরিয়া রেলরোড করপোরেশন জানিয়েছে, তারা সব ধীরগতির ট্রেন ও কিছু বুলেট ট্রেনকে থামিয়ে দিচ্ছে। অন্য বুলেট ট্রেনগুলো ধীরগতির কাজের কারণে বিলম্বিত হতে পারে।
এদিকে সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু সামরিক বাহিনীকে সক্রিয়ভাবে উদ্ধার কার্যক্রমে যোগদান, সরঞ্জাম সরবরাহ ও জনবল সংগ্রহের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।