রাজধানীর রামপুরা তিতাস রোডের একটি বাসা থেকে স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁরা হলেন—দিনমজুর জুয়েল (২৮) ও তাঁর স্ত্রী গৃহপরিচারিকা নাসরিন আক্তার (২২)।
গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে পূর্ব রামপুরা তিতাস রোডের একটি টিনশেড ঘর থেকে তাঁদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য ভোরে মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।
মৃত নাসরিনের বড় ভাই মো. টিটু মিয়া বলেন, ‘জুয়েলের বাড়ি কুড়িগ্রামে। তাঁর বাবার নাম আজাদুর খন্দকার। আর আমাদের বাড়ি কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায়। বাবার নাম সিদ্দিকুর রহমান। গত সাড়ে ৩ বছর আগে নাসরিনের সঙ্গে বিয়ে হয় জুয়েলের। তাঁদের একটি সন্তান হলেও গত ৯-১০ মাস আগে মারা যায়।’
টিটু মিয়া জানান, গত ৮-৯ মাস ধরে পূর্ব রামপুরার তিতাস রোডে নোয়াখালী বাড়িতে ভাড়া থাকতেন জুয়েল ও নাসরিন। পরিবার নিয়ে পাশাপাশি ঘরে ভাড়া থাকেন তিনি নিজেও। গত এক সপ্তাহ ধরে নাসরিন জ্বরাক্রান্ত ছিলেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে কাজ থেকে বাসায় ফেরেন টিটু। তিনি জানতে পারেন, দুপুরের পর থেকে নাসরিন এবং জুয়েল তাঁদের রুমের দরজা খোলেননি। রাতে তাঁদের অনেক ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। পরে বাড়িওয়ালার মাধ্যমে তাঁদের রুমের দরজা খুলে দেখা যায়, একটি ফ্যানের সঙ্গে দুটি ওড়না বেঁধে জুয়েল ও নাসরিন গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছেন। সঙ্গে সঙ্গে থানায় খবর দেওয়া হয়।
নাসরিন অন্যের বাসায় কাজ করতেন। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে এক সপ্তাহ ধরে কাজে যেতে পারছিলেন না। জুয়েল দিনমজুরের কাজ করতেন। তবে হাতে কোনো কাজকর্ম ছিল না। হতাশাগ্রস্ত হয়ে তাঁরা দুজন আত্মহত্যা করে থাকতে পারে বলে জানান টিটু মিয়া।
রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে রাত সাড়ে ৩টার দিকে পূর্ব রামপুরা তিতাস রোডের ওই টিনশেড বাসা থেকে স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়। রাতেই সিআইডি ক্রাইম সিন ঘটনাস্থলে আসে এবং বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে।
ওসি জানান, আর্থিক অভাব অনটনের কারণে স্বামী-স্ত্রী একই ফ্যানের সঙ্গে আলাদা দুটি ওড়না বেঁধে গলার ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে ঘটনাটি আরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।