নিজ দফতরে ঘুষ গ্রহণের সময় হাতেনাতে গ্রেফতার হওয়া রাজশাহীর কর কর্মকর্তা মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হয়েছে। বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) রাজশাহীর সহকারী পরিচালক মো. আমির হোসাইন।
মহিবুল ইসলাম ভুঁইয়া রাজশাহী কর অঞ্চলের সার্কেল-১৩ এর উপ-কর কমিশনার ছিলেন। গত ৪ এপ্রিল একজন চিকিৎসকের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার সময় দুদক কর্মকর্তাদের হাতে গ্রেফতার হন তিনি। এ নিয়ে দুদক তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করে। পরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গ্রেফতার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করে।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, রাজশাহীর চিকিৎসক ফাতেমা সিদ্দিকা রাজশাহী কর অঞ্চলের একজন নিয়মিত করদাতা। তিনি সর্বশেষ গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর ২০২২-২০২৩ করবর্ষের আয়কর বাবদ ১১ লাখ ১৩ হাজার ৮৯৫ টাকা কর দিয়েছেন। আয়কর রিটার্ন দাখিলের কিছুদিন পরে কর কর্মকর্তা মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়া তাকে ডেকে পাঠান এবং ঘুষ দাবি করেন। চাহিদা মোতাবেক ঘুষ না দিলে তাঁর আয়কর নথিটি আবার উম্মোচন করা হবে বলে হুমকি দেন।
কিন্তু এই চিকিৎসক প্রথমে ঘুষ দিতে চাননি। তাই মহিবুল ইসলাম এই চিকিৎসকের ২০১৮-২০১৯, ২০১৯-২০২০, ২০২০-২০২১, ২০২১-২০২২ ও ২০২২-২০২৩ করবর্ষের আয়কর নথি পুণরায় উম্মোচন করে নোটিশ দেন। এ ক্ষেত্রে কোন ধরনের প্রাক যাচাই-বাছাই বা সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য না থাকলেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই চিকিৎসকের বিগত ৫ বছরের আয়কর নথি উম্নোচন করা হয়। কর কর্মকর্তা এই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মনগড়াভাবে আয়কর ফাঁকির অভিযোগ আনেন। এ কারণে ঘুষ দিতে রাজি হন ডা. ফাতেমা।
কর কর্মকর্তা মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়া তখন ডা. ফাতেমা সিদ্দিকার আয়কর নথিটি হালনাগাদ ও আয়কর অধ্যাদেশ-৯৩ ধারায় পুনরায় উন্মোচন মামলা নিষ্পত্তি করে দেবেন বলে মোট ৬০ লাখ টাকা ঘুষ চান। এরমধ্যে প্রথম কিস্তি বাবদ ১০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার সময় তিনি গ্রেফতার হন।
তদন্ত কর্মকর্তা মো. আমির হোসাইন জানান, মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ১০ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। কমিশন তদন্ত প্রতিবেদনে সন্তোষ প্রকাশ করে অভিযোগপত্র দাখিলের অনুমোদন দেয়। তাই গত সোমবার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। এখন মামলার বিচার শুরু হবে।