২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০৮:০৪:২৫ অপরাহ্ন
আগুন-সন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তির বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-০৭-২০২৩
আগুন-সন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তির বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

আন্দোলনের নামে দেশে ২০১৩-১৪ সালের মতো আগুন-সন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তি যাতে কেউ করতে না পারে, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমি সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে কেউ ২০১৩-১৪ সালের মতো আগুন-সন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তি করে বাংলাদেশের ক্ষতি করতে না পারে।’


প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে পঞ্চম ধাপে আটটি বিভাগের ৩৪টি জেলায় আরও ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন। এ পর্যন্ত সারা দেশে ৯ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মীয়মাণ ৫৬৪টির মধ্যে ২৫০টি মসজিদ উদ্বোধন করেছেন তিনি। 


গতকাল শনিবার বেশ কয়েকটি বাসে বিএনপির অগ্নিসংযোগের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের চরিত্র আপনারা ভালো করেই জানেন, এরা সন্ত্রাসী। গতকালও তারা বেশ কয়েকটি বাসে আগুন দিয়েছে। তারা ২০১৩-১৪ সালেও চলন্ত বাস, ট্রেন ও লঞ্চে আগুন দিয়ে মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছে। দেশের মানুষ গতকাল তাদের (বিএনপি) ভয়ংকর চেহারা দেখেছে। কারণ, তারা আবারও আগুন-সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা ইসলামের নামে রাজনীতি করেছে, কিন্তু ইসলামের প্রতি তাদের ভালোবাসা নেই। ইসলামের প্রচার ও প্রসারে তাদের কোনো অবদানও নেই।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা এবং তাবলিগ জামাতের জন্য টঙ্গীতে এক টুকরো জমি বরাদ্দ করে সারা দেশে ইসলামের সত্য বাণী ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ শুরু করেছিলেন। সৌদি আরবে হজের পর টঙ্গীতে দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম সমাবেশ করার জন্য বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও অর্জন করেছিলেন। দেশবাসী যাতে স্বল্প খরচে সৌদি আরবে পবিত্র হজ পালন করতে পারেন, সে জন্য বঙ্গবন্ধু হিজবুল বাহার জাহাজ কিনেছিলেন। বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে জাতির পিতার আন্তরিক উদ্যোগে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) সদস্যপদ লাভ করে। 


মডেল মসজিদের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা আরও বলেন, তাঁর সরকার সারা দেশে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করে সমাজে ইসলামের প্রকৃত চেতনা ছড়িয়ে দিতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। সরকার প্রতিটি জেলায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অফিস স্থাপন এবং বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উন্নয়ন করেছে। 


এ সময় প্রধানমন্ত্রী আলেম-ওলামা, ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের নামাজের সময় মসজিদে বিশেষ করে জুমার নামাজের সময় সামাজিক হুমকি সম্পর্কে ওয়াজ করতে বলেন। যেন যুবকেরা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতি এবং অন্যান্য অভিশাপ থেকে দূরে থাকতে পারে। তিনি বলেন, ‘আলেম-ওলামাদের এমনভাবে ওয়াজ করা উচিত—যাতে যুবকেরা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ এবং মাদকের সঙ্গে জড়িত না হয়।’ 


এর আগে ২০২১ সালের ১০ জুন, ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি, ১৬ মার্চ, ১৭ এপ্রিল ও আজ ৩০ জুলাই—প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম ধাপে প্রতিটিতে ৫০টি করে মসজিদ উদ্বোধন করেন। অবশিষ্ট মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের নির্মাণকাজ ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। মডেল মসজিদ এবং ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের মধ্যে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থাসহ অজু ও নামাজের জন্য আলাদা জায়গা রয়েছে। 


এ ছাড়া হজযাত্রীদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, গবেষণা কেন্দ্র ও ইসলামিক লাইব্রেরি, অটিজম কর্নার, দাফনের আগে আচার ব্যবস্থা, গাড়ি পার্কিং সুবিধা, হাফেজখানা, প্রাক্‌-প্রাথমিক শিক্ষা ও কোরআন শিক্ষার ব্যবস্থা, ইসলামিক সাংস্কৃতিক কার্যক্রম এবং ইসলামি দাওয়াতের জন্য কনফারেন্স রুম, ইসলামি বই বিক্রয় কেন্দ্র, মসজিদের সঙ্গে দেশি-বিদেশি অতিথিদের জন্য বোর্ডিং সুবিধা থাকবে মসজিদে। 


আজকের অনুষ্ঠানে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান ও একই মন্ত্রণালয়ের সচিব এ হামিদ জমাদ্দার বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া। 


অনুষ্ঠানে কক্সবাজার সদর উপজেলা ও খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার স্থানীয় সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতারা, সরকারি কর্মকর্তা, আলেম-ওলামাসহ সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।


শেয়ার করুন