সনদের গলদ ধরা পড়েছে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষে (জাগৃক)। গলদ থাকায় শাস্তি হিসেবে সম্প্রতি তিন কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁদের একজন ১৬ বছর এবং দুজন ১৩ বছর চাকরি করছেন। সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন আরও কয়েকজন। এই পরিস্থিতিতে যাচাইয়ের জন্য সনদ চেয়ে সব স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চিঠি দিয়েছে জাগৃক।
জাগৃকের চেয়ারম্যান মো. মুনিম হাসান তাঁর নিজ দপ্তরে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ধরনের বেশ কিছু অভিযোগ নিয়ে কাজ শুরু করেছি। কয়েকজনকে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। আরও কেউ কেউ এসব ঘটনা ঘটিয়েছেন। তাঁরাও শাস্তির আওতায় আসবেন। আমরা সবার সনদ চেয়েছি। সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হবে।’
সনদ জালিয়াতির অভিযোগে যাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তাঁরা হলেন উচ্চমান সহকারী দেলোয়ার হোসেন, অফিস সহকারী কাম ডেটা এন্ট্রি অপারেটর শওকত আহমেদ ও বীণা রানী।
জাগৃক সূত্র জানায়, উচ্চমান সহকারী দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালে জাল সনদে চাকরি নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ ছিল। কুমিল্লার কোম্পানীগঞ্জ বদিউল আলম উচ্চবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসির সনদে তাঁর বাবার নাম মো. আব্দুল ওহিদ। তবে এইচএসসির সনদে বাবার নাম শিশু মিয়া। জাগৃকের তদন্তে বিষয়টি ধরা পড়ে। জাল সনদে চাকরি নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে দেলোয়ারকে ১ আগস্ট গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে আটক করে পুলিশে তুলে দেওয়া হয়। পরে শাহবাগ থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। বর্তমানে তিনি জেলহাজতে রয়েছেন।
সূত্রটি জানায়, সংস্থার চেয়ারম্যানের গত ১৮ জুলাইয়ের এক চিঠিতে বলা হয়, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসিতে কমপক্ষে দ্বিতীয় বিভাগ/ জিপিএ-২ (সি-গ্রেড) পেয়ে উত্তীর্ণের উল্লেখ থাকলেও অফিস সহকারী কাম ডেটা এন্ট্রি অপারেটর শওকত আহমেদ তৃতীয় বিভাগে উত্তীর্ণের সনদ দিয়ে চাকরি নেন। এ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে তদন্ত চলমান। সরকারি চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী তাঁকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। তিনি ২০১০ সালে জাগৃকে চাকরি নেন। তবে তাঁকে গত মঙ্গলবার ভূমি শাখায় অফিস করতে দেখা যায়।
শওকত আহমেদ মঙ্গলবার গৃহায়ণ ভবনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি মাস্টাররোলের কর্মচারী ছিলাম। পরে স্থায়ী পদে চাকরি দেওয়া হয়েছে। এখানে আমার কোনো দোষ নেই।’
জাগৃকের সূত্র বলেছে, পরিচালক (ভূমি) দপ্তরের সাময়িক বরখাস্ত অফিস সহকারী বীণা রানী মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ২০১০ সালে চাকরি নেন। তবে মুক্তিযোদ্ধার ওই সনদ জাল বলে ধরা পড়েছে।
জাগৃকের সূত্র বলেছে, ২০০৬ সালে নিয়োগ পরীক্ষায় পাস না করেও চাকরি করা উপবিভাগীয় (মিরপুর) প্রকৌশলী দীপক কুমার সরকারসহ কয়েকজনের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।