২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ১০:০৫:১১ অপরাহ্ন
প্রিমিয়াম-কমিশন প্রশ্নবিদ্ধ, বিনিয়োগ নিয়েও ধোঁয়াশা
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০৮-২০২৩
প্রিমিয়াম-কমিশন প্রশ্নবিদ্ধ, বিনিয়োগ নিয়েও ধোঁয়াশা

অর্থবছর শেষ হওয়ার পরেও গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রিমিয়াম গ্রহণ করেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স। এজেন্টদের কমিশন দিয়েছে নগদে। দুটিই বিমা আইনের পরিপন্থী। শুধু তা-ই নয়, প্রফিট পার্টিসিপেশন এবং ওয়েলফেয়ার ফান্ড গঠন না করে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগও উঠেছে বিমা কোম্পানিটির বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে ছয়টি কোম্পানিতে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ১৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা।


পপুলার লাইফের ২০২২ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে এসব অসংগতি তুলে ধরেছে নিরীক্ষক। নিরীক্ষক জানিয়েছে, পপুলার লাইফ কয়েক বছর আগে প্লেসমেন্ট পদ্ধতিতে ১৪ কোটি ৭৫ লাখ ৮ হাজার ৮০০ টাকা বিনিয়োগ করেছে কয়েকটি কোম্পানিতে। এর মধ্যে অ্যামিউলেট ফার্মা লিমিটেডে ৬ কোটি, বি. ব্রাদার্স গার্মেন্টস লিমিটেডে ৩ কোটি ৬০ লাখ, বেকা গার্মেন্টসে ২ কোটি ৪৫ লাখ, ক্রিডেন্স অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টে ১ কোটি ২৫ লাখ ৮ হাজার ৮০০, আলবি টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডে ১ কোটি ২০ লাখ এবং দেশ ডেনিমে ২৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। বিনিয়োগ করা কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয়। সেসব কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন এবং সংশ্লিষ্ট নথি পায়নি নিরীক্ষক। যার কারণে কোম্পানিগুলোর সার্বিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং পপুলার লাইফের বিনিয়োগ ফেরত পাওয়া ও সম্ভাব্য মুনাফা নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। এমনকি এই অর্থের সমন্বয় প্রয়োজন কি না, তা-ও যাচাই করতে পারেনি নিরীক্ষক।


নিরীক্ষকের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট দুটি আপত্তি উঠেছে এজেন্টদের কমিশন প্রদান ও আউটস্ট্যান্ডিং প্রিমিয়াম নিয়ে। পপুলার লাইফ এজেন্টদের কমিশনের একটি বড় অংশ নগদে প্রদান করেছে, যা ‘বিমা আইন ২০১০’-এর পরিপন্থী। একই আইনের বরখেলাপ করে কোম্পানি অর্থবছর শেষ হলেও আরও কয়েক মাস গ্রাহকদের কাছ থেকে আউটস্ট্যান্ডিং প্রিমিয়াম গ্রহণ করেছে। কত টাকা কমিশন বাবদ নগদ প্রদান এবং প্রিমিয়াম গ্রহণ করা হয়েছে, তা উল্লেখ করা হয়নি প্রতিবেদনে।


‘বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬’ ভঙ্গ করেছে পপুলার লাইফ। নিরীক্ষক জানিয়েছে, আইন অনুযায়ী, কোম্পানি ২০২২ সালের জন্য ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ড এবং ওয়েলফেয়ার ফান্ড গঠন করেনি।


এসব বিষয়ে জানতে পপুলার লাইফের কোম্পানি সচিব মোস্তফা হেলাল কবিরের মোবাইলে ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। পরে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও বি এম ইউসুফ আলীর মোবাইলে একাধিকবার কল করলে তিনিও সাড়া দেননি।


যেকোনো ধরনের আইনের ব্যত্যয় ঘটলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) পরিচালক ও মুখপাত্র (উপসচিব) জাহাঙ্গীর আলম। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিমা খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে কাজ করছে আইডিআরএ। যেকোনো অনিয়ম হলেই কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।


পপুলার লাইফের বিনিয়োগ নিয়ে আইডিআরএ মুখপাত্র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কোনো কোম্পানি বিনিয়োগ করলে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে করে। অনুমোদন ছাড়া বিনিয়োগ করতে পারে না। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যদি অনিয়ম পাওয়া যায়, তাহলে অবশ্যই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 


শেয়ার করুন