বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাতের পক্ষে ছিলেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম। এবার তিনি তৎপর হয়েছেন বরিশাল-৫ (সদর) আসনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে। পাশে পাচ্ছেন খোকন সেরনিয়াবাতকে। অন্যদিকে দলীয় সিদ্ধান্তে সিটি নির্বাচন থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন খোকনের ভাতিজা সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। নির্বাচন ঘিরে তিনিও মাঠে নেমেছেন। কাছে টানছেন দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের।
স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সূত্রে জানা গেছে, শক্তির জানান দিতে এরই মধ্যে দুই পক্ষ পৃথক কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। সিটি নির্বাচনের মতো সংসদ নির্বাচনেও খোকন-জাহিদ জুটির লক্ষ্য এককাট্টা হয়ে বিভাগের সবচেয়ে মর্যাদার আসনটি দখলে নেওয়া। এ জন্য জাহিদ ফারুকের সঙ্গে মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন মেয়র খোকন। অন্যদিকে বর্ধিত সভাসহ দলীয় কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন সাদিক।
অনুসারীরাও তাঁকে বরিশাল-৫ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) হিসেবে দেখতে চান।
গত শনিবার রাতে নগরের পোর্ট রোডে সদর থানা মৎস্য অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে একটি স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাদিক বলেন, ‘কেউ কেউ আমাকে এমপি দেখতে চান। আমাদের অভিভাবক আছেন, এটা তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন। একতাবদ্ধ থেকে নৌকা মার্কা যে নিয়ে আসবেন, তাঁকেই আমরা জয়লাভ করাব।’
গত ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নগরীতে বড় শোভাযাত্রা করেন সাদিক আবদুল্লাহ। নিজ বাসভবনে বিভিন্ন ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেছেন। এ ছাড়া সম্প্রতি সদরের চরকাউয়া ইউনিয়ন সফর করেন। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনিরুল ইসলাম জানান, সাদিক আবদুল্লাহ ইউনিয়নের দিনার এলাকায় গিয়েছিলেন। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছেন।
সাদিক আবদুল্লাহর তৎপরতার বিষয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আনোয়ার হোসাইন বলেন, জাতীয় নির্বাচনে বরিশাল-৫ আসন থেকে মনোনয়ন চাইবেন মেয়র সাদিক, এমনটাই প্রত্যাশা করেন অনেক নেতা-কর্মী। সাদিককে মনোনয়ন না দিলে আসনটি বিএনপি দখলে নেবে।
পৃথক কর্মসূচি পালনের বিষয়ে আনোয়ার হোসাইন বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রী, নবনির্বাচিত মেয়র যদি দলীয় কর্মসূচির বাইরে জাতীয় অনুষ্ঠানের কর্মসূচি দেন, তাহলে আমরাও তাতে অংশ নেব।’
সাদিকের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী জাহিদ ফারুক আসনটির বর্তমান এমপি। ৭ জুলাই সার্কিট হাউসে এক অনুষ্ঠানে তিনি খোকনের সঙ্গে মিলে বরিশাল নগরকে নতুন করে সাজানোর ঘোষণা দেন। ১৪ জুলাই রাতে অসহায় হতদরিদ্রদের মাঝে খাদ্যসহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানেও মেয়র খোকনের নির্বাচনী কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকীসহ ভবিষ্যতে সব কর্মসূচি ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠান যৌথভাবে আয়োজনের বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেন। মসজিদ, মাদ্রাসায়ও আজকাল প্রতিমন্ত্রী এবং মেয়রকে একসঙ্গে দেখা যাচ্ছে।
মেয়র খোকনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির দপ্তর প্রধান লস্কর নুরুল হক বলেন, নবনির্বাচিত মেয়র সিটি নির্বাচনে ভূমিকা রাখার জন্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-৫ আসনে জাহিদ ফারুক আবার মনোনয়ন পাবেন বলেও আশা প্রকাশ করেছেন। এ জন্য তাঁরা একসঙ্গে কাজ করবেন।
লস্কর নুরুল হক বলেন, ‘আশা করছি জাহিদ ফারুক আবারও মনোনয়ন পাবেন। সাদিক আবদুল্লাহ মনোনয়ন চাইতেই পারেন। তিনি
পেয়ে গেলেও আমরা নৌকার পক্ষেই কাজ করব।’