নাটোরের লালপুরে নান্দরায়পুর মনসা পূজার মেলায় ছুরিকাঘাতে নাজমুল হোসেন (২৫) নামে এক যুবক খুন হয়েছেন। শনিবার (১৯ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে উপজেলার ওয়ালিয়া ইউনিয়নের নান্দরায়পুর (বটতলা) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নাজমুল হোসেন নান্দরায়পুর গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে। তিনি পেশায় প্রসাধন ব্যবসায়ী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাত ৮টার দিকে উপজেলার ওয়ালিয়া ইউনিয়নের নান্দরায়পুর (বটতলা) গ্রামে মনসা পূজার মেলায় নাজমুল হোসেন মোটরসাইকেল গ্যারেজের সামনে যান। এ সময় গ্যারেজের কর্মচারীরা তাঁকে মোটরসাইকেল গ্যারেজ করতে বলেন। এ নিয়ে গ্যারেজ মালিকসহ অজ্ঞাত ৪ / ৫ জনের মধ্যে তর্কবিতর্ক শুরু হয়। একপর্যায়ে গ্যারেজের মালিক একই গ্রামের জমসেদ আলীর ছেলে জিয়াউর রহমানের (২৪) হাতে থাকা চাকু দিয়ে নাজমুল হোসেনকে ডান পায়ের ঊরুতে আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিক আমির হোসেন নামে একজন আত্মীয় মোটরসাইকেল যোগে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. সোহেল রানা বলেন, ‘ওই ব্যক্তির ডান পায়ের ঊরুতে আড়াই থেকে তিন সেন্টিমিটার গভীর ক্ষত হয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে হাসপাতালে আনার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। সাধারণত এ ধরনের জখমের পাঁচ মিনিটের মধ্যেই রক্তক্ষরণে একজন মানুষ মারা যেতে পারে।’
নাজমুল হোসেনের মা শবজান বেগম হাসপাতাল চত্বরে ছেলের জন্য আহাজারি করতে করতে বলেন, তিন বছর হলো ছেলের বিয়ে দিয়েছেন। তাঁর স্ত্রী রিমা খাতুনের পেটে সন্তান।
উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি দীপেন্দ্রনাথ সাহা ও সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় কুমার কর্মকার বলেন, সন্ধ্যায় তাঁরা মণ্ডপ ত্যাগ করার পরেই এ ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে এসে মৃত্যুর খবর পান।
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. উজ্জ্বল হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নাটোরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনার পর থেকেই গ্যারেজ মালিক জিয়াউর রহমান ও তাঁর সহযোগীরা পালিয়ে যান। তাঁদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’
উল্লেখ্য, নান্দরায়পুর মনসা পূজার অনুষ্ঠানে সন্ধ্যায় নাটোর–১ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল ও বিকেলে সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ এবং আওয়ামী লীগ ও পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতারা যোগ দেন।
