আমাদের এই আধুনিক জীবনের ‘ফাস্ট লাইফ’ ফাস্ট ফুডে অভ্যস্ত। এ ধরনের খাবার তৈরি করা ও খাওয়া যায় দ্রুত। কিন্তু আমাদের শরীর এমন দ্রুত নয়। বিশেষ করে আমাদের হজম প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে খাদ্যরস ও তার পাচনক্রিয়া সবই স্লো বা ধীর।
ফাস্ট ফুড খাওয়ার কারণে আমাদের শারীরিক সমস্যাগুলোও ফাস্ট বা দ্রুত হচ্ছে। সে কারণে অল্প বয়স থেকেই আমরা বয়ে বেড়াই ডায়াবেটিক, উচ্চ রক্তচাপ, থাইরয়েড, হার্ট, প্রস্রাব কিংবা হজমের সমস্যা। এসব থেকে দূরে থাকতে এই ফাস্ট লাইফে ফাস্ট ফুডের চেয়ে স্লো ফুড খাওয়ার অভ্যাস করা খুব জরুরি। স্লো ফুড অনেক আছে। সেগুলোর মধ্যে আমাদের কাছে সবচেয়ে পরিচিত হলো ছাতু।
যে কারণে ছাতু স্লো ফুড
ছাতুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুব কম। এটি ধীরে ধীরে হজম হয়। ফলে ছাতু খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে। এ জন্য এটি স্লো ফুড। অর্থাৎ, ছাতু শরীরের হজম প্রক্রিয়ায় চাপ তৈরি করে না। এতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম থাকে। সে কারণে এর স্বাস্থ্যসুবিধাগুলো পাওয়া যায়।
ছাতু খাওয়ার উপকার
⊲ এটি ওজন কমাতে সহায়তা করে
⊲ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে
⊲ রক্তে উপস্থিত বিষাক্ত উপাদান বেরিয়ে যেতে শুরু করে এটি নিয়মিত খেলে
⊲ ছোট-বড় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার
আশঙ্কা কমে যায়
⊲ এতে থাকা প্রোটিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট—এ দুটি উপাদান ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে
⊲ ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি করে
⊲ এটি খেলে শক্তির মাত্রা বাড়তে শুরু করে, কম খেয়েও শরীর সবল থাকে
⊲ বয়সকালীন রোগ শরীরে বাসা বাঁধার সুযোগ পায় না
⊲ কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যার প্রকোপ কমতে শুরু করে
⊲ হজমক্ষমতার উন্নতি ঘটে
⊲ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কাজ করে
ছাতুতে কী কী থাকে
মূলত যবের ছাতু হচ্ছে সবচেয়ে ভালো। এর সঙ্গে ক্যালসিয়ামের ভান্ডার হিসেবে পরিচিত সাদা তিল, ফ্যাটি অ্যাসিডে ভরপুর তিসি, চিনাবাদাম মিশিয়ে নিতে পারেন।
ছাতু খাওয়ার উপায়
ছাতু আপনি এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে গুলিয়ে খেতে পারেন। তাতে গুড় বা মধু মিশিয়ে নিতে পারেন যদি ডায়াবেটিস না থাকে। যবের ছাতু দিয়ে রুটি কিংবা চাপড়ি বানিয়ে খেতে পারেন।
প্রতিদিন সকাল অথবা বিকেলের নাশতায় এটি রাখা যেতে পারে। ডায়াবেটিস ও কিডনি সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন, তাঁদের জন্য এটি চমৎকার পথ্য।