২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১০:৪৫:০১ অপরাহ্ন
ঋণ পরিশোধ শুরু করল শ্রীলঙ্কা
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০৮-২০২৩
ঋণ পরিশোধ শুরু করল শ্রীলঙ্কা

শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার অন্যতম উৎস ট্যুরিজম। বৈদেশিক মুদ্রার তীব্র সংকট বেসামাল করে তুলেছিল দ্বীপরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে। তবে ট্যুরিজমে ভর করে ঘুরে দাঁড়ানো পথে দেশটির অর্থনীতি। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ (আইএমএফ) বিদেশি ঋণ পেয়েছে দেশটি। এতে দেশটির ভঙ্গুর অর্থনীতি শক্তিশালী হচ্ছে।


এর প্রমাণ মিলেছে বাংলাদেশ থেকে নেওয়া ২০ কোটি ডলার ঋণের প্রথম কিস্তি পরিশোধের মধ্য দিয়ে। গত বৃহস্পতিবার প্রথম কিস্তিতে ৫ কোটি ডলার পরিশোধ করে দেশটি। এর ফলে আমাদের দেশের রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়েছে। সর্বশেষ রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার।


ঋণ ফেরত পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, ‘আমরা প্রথম কিস্তির অর্থ ফেরত পেয়েছি। ৩০ আগস্ট আরও একটি কিস্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। শ্রীলঙ্কা পুরো ঋণ এ বছরের মধ্যে পরিশোধ করবে বলে আশাবাদী বাংলাদেশ ব্যাংক।’


তিন মাসের মধ্যে ফেরত দেওয়ার শর্তে কারেন্সি সোয়াপ পদ্ধতির আওতায় ২০২১ সালে ঋণ নেয় শ্রীলঙ্কা। কিন্তু যথাসময়ে ফেরত দিতে পারেনি। এরপর কয়েক দফা সময় চায় দেশটি। উপায় না থাকায় বাংলাদেশও কয়েক দফা সময় দেয়। সর্বশেষ আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এবার ওয়াদা ঠিক রাখতে প্রথম কিস্তির অর্থ ফেরত দিল দেশটি।


এ প্রসঙ্গে পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে ধস নামার পর বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ হস্তক্ষেপ করে। আইএমএফ নতুন ঋণও দেয়। অপরদিকে সেখানে বৈদেশিক আয়ের অন্যতম উৎস ট্যুরিজম খাত ঘুরে দাঁড়ানোর পথে। অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তারা ঋণের প্রথম কিস্তির ৫ কোটি ডলার ফেরত দিয়েছে। এটা বাংলাদেশের জন্য সুখবর।


বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, শ্রীলঙ্কাকে প্রথম দফায় ২০২১ সালের ১৯ আগস্ট ৫ কোটি ডলার ছাড় করে বাংলাদেশ ব্যাংক। দ্বিতীয় দফায় ১০ কোটি ডলার দেওয়া হয় একই বছরের ৩০ অক্টোবর। এরপর ৫ কোটি ডলার দেওয়া হয় নভেম্বরে। বিদ্যমান চুক্তির আওতায় গত বছরের আগস্ট, অক্টোবর ও নভেম্বরের মধ্যে সুদসহ অর্থ ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। ঋণের বিপরীতে লন্ডন আন্তব্যাংক অফার রেট বা লাইবর যোগ করে তার সঙ্গে আড়াই শতাংশ সুদ পাওয়ার কথা বাংলাদেশের।


বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার পর্যন্ত দেশের রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৯৩৭ কোটি ডলার (২৯ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন) ডলার। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে হিসাব করতে গিয়ে ৬২৩ কোটি ৭৬ লাখ ডলার বাদ দেওয়া হয়েছে। সেই হিসাবে প্রকৃত রিজার্ভ নেমে দাঁড়িয়েছে ২৩ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলারে। প্রতি মাসে ৬ বিলিয়ন ডলার হিসাবে এ রিজার্ভ দিয়ে চার মাসের মতো আমদানি ব্যয় মেটাতে পারবে বাংলাদেশ।


জানা গেছে, গত বছর শেষে শ্রীলঙ্কার মোট ৯ হাজার ৭০০ কোটি (৯৭ বিলিয়ন) ডলার ঋণের মধ্যে বিদেশি ঋণ ৫ হাজার ১০০ কোটি (৫১ বিলিয়ন) ডলার। মোট ঋণ জিডিপির ১১৯ শতাংশ। বিদেশি ঋণের মধ্যে আন্তর্জাতিক সভরেন বন্ডের (আইএসবি) ১ হাজার ১৮০ কোটি ডলার (৩৬.৪ শতাংশ), এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) ৪৬০ কোটি ডলার (১৪.৩ শতাংশ), জাপানের ১৮০ কোটি ডলার (১০.৯ শতাংশ) এবং চীনের ১৭০ কোটি ডলার (১০.৮ শতাংশ) এবং বাংলাদেশের ২০ কোটি ডলার (.০৪ শতাংশ প্রায়)।


শেয়ার করুন