৩০ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৬:২১:৩৬ অপরাহ্ন
পরকীয়ার জন্য ছেলেকে হত্যা, মা ও প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-০৮-২০২৩
পরকীয়ার জন্য ছেলেকে হত্যা, মা ও প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড

চাঁদপুরের হাইমচরে পরকীয়া প্রেমিকসহ ভাড়া করা লোক দিয়ে সন্তানকে হত্যার দায়ে মাসহ দুজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে আরও দুই সহযোগীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।


আজ বুধবার দুপুরে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ফারহানা ইয়াসমিন এই রায় দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) বদিউজ্জামান কিরন।


মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—খুকি বেগম (৪৩)। তিনি হাইমচর উপজেলার দক্ষিণ আলগী ইউনিয়নের মিজানুর রহমান খানের স্ত্রী ও হত্যাকাণ্ডের শিকার আরিফ হোসেনের (২৫) মা। অপরজন মো. জয়নাল গাজী (২৪)। তিনি ফরিদগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম লাড়ুয়া গ্রামের গাজী বাড়ির গণি গাজীর ছেলে।


যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—ফরিদগঞ্জ উপজেলার উত্তর বিষকাটালি গ্রামের মোল্লা বাড়ির হোসেন মোল্লার ছেলে ইউছুফ মোল্লা (২৭) ও একই গ্রামের বিল্লাল মোল্লার ছেলে মাহবুব মোল্লা (২৬)।


মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, হত্যার শিকার আরিফ হোসেন তাঁর মা খুকি বেগমের সঙ্গে আসামি জয়নাল গাজীর পরকীয়া সম্পর্কের কথা জানতেন। এই বিষয়ে মা-ছেলের সম্পর্কের অবনতি হয়। ২০১৫ সালের শুরুতে আরিফ হোসেন প্রেমের সম্পর্ক করে পার্শ্ববর্তী উত্তর আলগী ইউনিয়নের মিজি বাড়ির আব্দুস সালাম মিজির মেয়ে আসমা আক্তারকে (১৯) বিয়ে করেন। আরিফের মা খুকি বেগম প্রথমে তাদের বিয়ে মেনে না নিলেও একপর্যায়ে মেনে নেন। এরপর মা, ছেলে ও ছেলের স্ত্রী মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে ঝগড়া বিবাদ হতো। এরই মধ্যে খুকি বেগম ছেলেকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।


সেই অনুযায়ী ২০১৫ সালের ১৬ নভেম্বর ছেলের স্ত্রী আসমাকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেন। এরপর ১৮ নভেম্বর পরিকল্পিতভাবে খুকি বেগম নিজ বাড়িতে পরকীয়া প্রেমিক জয়নাল গাজী ও সহযোগীদের দিয়ে আরিফকে ঘুমন্ত অবস্থায় হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে, দা দিয়ে কুপিয়ে এবং ব্লেড দিয়ে পোছ মেরে মৃত্যু হয়েছে মনে করে ঘরের মেঝেতে ফেলে চলে যায়। 


পরদিন ১৯ নভেম্বর সকালে খুকি বেগম আরিফের স্ত্রী আসমাকে ফোন করে জানায়, ডাকাতেরা আরিফকে জখম করে ফেলে গিয়েছে। আসমা তাৎক্ষণিক স্বামীর বাড়িতে চলে আসেন এবং আরিফকে উদ্ধার করে প্রথমে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে ঢাকা নেওয়ার পথে মতলব ফেরিঘাটে পার হওয়ার পর সকাল ৯টার দিকে আরিফের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় ওই দিনই আসমা তার শাশুড়ি খুকি বেগমসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হাইমচর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। 


শেয়ার করুন