শেষ মুহূর্তে আটকে গেল বিশ্বের উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর জোট ব্রিকস সম্প্রসারণের উদ্যোগ। বুধবার জোটটির সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে জোটের সম্প্রসারণের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় কিন্তু দেশগুলোর নেতাদের মধ্যে ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারায় আটকে গিয়েছে জোট সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিশ্বের উদীয়মান পাঁচ অর্থনীতির দেশ—ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা মিলে পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলোর কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। অর্থনীতির বাইরেও বিভিন্ন দিকে নিজেদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। এ লক্ষ্যে মস্কো এবং বেইজিং জোটের অন্য সদস্যদের তুলনায় জোট সম্প্রসারণে বেশি আগ্রহী। তবে শেষ মুহূর্তে জোট সম্প্রসারণের বিষয়টি আটকে যাওয়ায় তা বেইজিং বা মস্কোর জন্য সুখকর হবে না।
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে চলমান তিন দিনব্যাপী সম্মেলনে আলোচনার সবচেয়ে বড় ইস্যুই ছিল জোটের সম্প্রসারণ। এমনকি সামনাসামনি জোটের নেতারা সম্প্রসারণের বিষয়ে একাত্ম পোষণ করলেও এ বিষয়ক বৈঠকে ব্রাজিলের পক্ষ থেকে দ্বিমত পোষণ করা হয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী নালেডি প্যান্ডর বুধবার জানিয়েছিলেন, ব্রিকস নেতারা জোট সম্প্রসারণের বিষয়ে একমত হয়েছেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা জোট সম্প্রসারণের বিষয়ে একমত হয়েছি। আমরা কিছু নথি প্রস্তুত করেছি এবং সেগুলো গ্রহণ করেছি যাতে ব্রিকসের সদস্য হতে চাওয়া দেশগুলোর জন্য নির্দেশিকা এবং নীতিমালা এবং সদস্য গ্রহণের প্রক্রিয়া নির্ধারণ করা হয়েছে...এটি খুবই ইতিবাচক।’
তবে একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে জানিয়েছে, জোটের নেতারা এখনো এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি। গত বুধবার একটি প্লেনারি সেশনের পর চূড়ান্তভাবে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করার কথা ছিল। কিন্তু ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সদস্য গ্রহণের জন্য নতুন শর্ত আরোপ করলে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল হয়।
ব্রিকসের এক কর্মকর্তা বলেছেন যে, মোদি নতুন সদস্য ভর্তির ক্ষেত্রে যেসব মানদণ্ড তুলে ধরেছেন তার রয়েছে—যেসব দেশ আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত সেগুলোকে সদস্য না করা এবং সম্ভাব্য প্রার্থী ইরান এবং ভেনেজুয়েলাকে জোটে গ্রহণ না করা। মোদি সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে দেশগুলোর জিডিপির একটি ন্যূনতম অবস্থান নির্ধারণের কথাও বলেছেন।
মোদির শর্ত আরোপের পাশাপাশি ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা ইনাসিও দ্য সিলভাও জোট সম্প্রসারণের বিষয়টি নাকচ করেছেন। তাঁর মতে পশ্চিমা বিশ্ব বিশেষ করে জি-৭ সহ অন্যান্য জোটের বিরোধিতা করা ব্রিকসের লক্ষ্য হওয়া উচিত নয়।