নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নাটোর-৪ আসনের (বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুর) সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
আজ বুধবার সকাল ৭টা ২২ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। আব্দুল কুদ্দুস শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁর ছেলে আসিফ আব্দুল্লাহ বিন শোভন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে নিজ বাসভবনে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে প্রয়োজনীয় মেডিকেল সাপোর্ট নিয়ে দ্রুত রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে যাচ্ছিল, যার কারণে আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানেই বুধবার সকালে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস মিয়াজী বলেন, তিনি স্ত্রী, এক কন্যা ও এক ছেলে রেখে গেছেন। তিনি সাতবার এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে পাঁচবার সাংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
ছাত্ররাজনীতির মাধ্যমে রাজনীতিতে হাতেখড়ি প্রবীণ ও বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের। ১৯৬৮-৭২ সাল পর্যন্ত বৃহত্তর রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানের সময় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলের সভাপতি ছিলেন। অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস রাজশাহী অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি (১৯৭২-১৯৭৪) রাজশাহী কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচিত ভিপি হন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী রাজশাহী জেলায় যে ব্যক্তিকে প্রথম গ্রেপ্তার করে তিনি অব্দুল কুদ্দুস। ১৯৮২-৮৬ পর্যন্ত রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন অব্দুল কুদ্দুস। রাজশাহী মহানগর গঠিত হলে ১৯৮৬-১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি প্রথমবার সংসদ সদস্য হন।
বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল, নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রত্না আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন।
