০২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১০:২৫:৫৩ পূর্বাহ্ন
বাংলাদেশে মার্কিন কোম্পানিগুলোর বৃহত্তর বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩১-০৮-২০২৩
বাংলাদেশে মার্কিন কোম্পানিগুলোর বৃহত্তর বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিশেষ করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি, আইসিটি ও অবকাঠামো খাতে মার্কিন কোম্পানিগুলোকে বৃহত্তর বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় গণভবনে ‘ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের’ উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আহ্বান জানান তিনি।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার বিশ্বাস মার্কিন কোম্পানিগুলো বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, আইসিটি, অবকাঠামো, হালকা প্রকৌশল এবং ইলেকট্রনিক্স, অটোমোবাইল শিল্প, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, ফার্মাসিউটিক্যালস, সিরামিকের মতো সম্ভাব্য ও উৎপাদনশীল খাতে আরও সুবিধা নেবে এবং বিনিয়োগ করবে।’


শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে উন্মুক্ত প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ নীতি রয়েছে।’


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বন্ধুত্ব ও অংশীদারিত্ব উভয় দেশের জন্য সহায়ক  এবং দুই দেশের পারস্পরিক বিশ্বাস অত্যন্ত  গভীরে প্রোথিত।’


সরকারপ্রধান বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বিশ্বস্ত উন্নয়ন অংশীদার এবং আমাদের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে অবদান রেখে চলছে। আমার বিশ্বাস বাংলাদেশের জন্য এফডিআই ও রপ্তানি বাজারের একক বৃহত্তম উৎস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর প্রবৃদ্ধির গতিপথকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে।’


প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার নাগরিকদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি টেকসই প্রবৃদ্ধির কৌশল অনুসরণ করছে। এই টেকসই কৌশল  বিশ্ব অর্থনীতিবিদ ও সংস্থাগুলো স্বীকার করেছে।


সরকারপ্রধান বলেন, তাঁরা এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ এবং ২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক্ষেত্রে অনেক বেশি সম্ভাবনা থাকায় আমাদের ব্যবসা ও বিনিয়োগ নীতিকে সহজ করতে এবং এটিকে আপনাদের জন্য  সহায়ক  করতে আমি সর্বোত্তম সম্ভাব্য নীতি কাঠামোর বিষয়ে আশ্বস্ত করতে চাই।’


শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করেন, ইউএস-বাংলাদেশ এনার্জি টাস্কফোর্স ও ইউএস-বাংলাদেশ ডিজিটাল ইকোনমি টাস্কফোর্স তাদের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার মাধ্যমে উভয় দেশের কোম্পানিগুলোর সহযোগিতা আরও গভীর করতে অবদান রাখবে।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় পরিবেশ নিশ্চিত করেছে, যার মধ্যে রয়েছে একটি উদারীকৃত শিল্পনীতি, ওয়ান-স্টপ সার্ভিস, ১০০ শতাংশ বিদেশি মালিকানার জন্য ভাতা, সহজ প্রস্থান নীতি, ১৫ বছরের কর অব্যাহতি, আমদানি করা যন্ত্রপাতির জন্য ভ্যাট অব্যাহতি, সুগমিত পরিষেবা এবং আরও অনেক কিছু।’


সরকারপ্রধান বলেন, শিল্পায়নের সুবিধার্থে তাঁরা সারা দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, ১০৯টি হাই-টেক ও সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক এবং আইটি প্রশিক্ষণ ও ইনকিউবেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করছে।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত বছর চালু হওয়া পদ্মা সেতু দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে সরাসরি সড়ক ও রেল যোগাযোগ স্থাপন করেছে।


প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তাঁরা শিগগিরই মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকায় মেট্রোরেলের অংশ বিশেষ  এবং চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু টানেলের মতো আরও কিছু মেগা প্রজেক্ট চালু করতে যাচ্ছেন।


শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই অবকাঠামোগুলো  সংযোগ ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য উভয়কেই আরও প্রসারিত করবে। একইসঙ্গে প্রবৃদ্ধির জন্য অনুঘটক হিসেবেও কাজ করবে।’


১৭০ মিলিয়ন মানুষের বাজার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ প্রায় তিন বিলিয়ন গ্রাহকের বাজারের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছে। এ কারণেই সরকার প্রতিবেশীদের সঙ্গে কানেকটিভিটির ধারণাকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে, যা বর্তমানে বাস্তবে রূপ নিচ্ছে।’


এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।


ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট, দক্ষিণ এশিয়া ইউএস চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রদূত (অব.) অতুল কেশপ, এক্সেলারেট এনার্জি (বোর্ড চেয়ার এবং মিশন প্রধান) সভাপতি, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টিভেন কোবোস অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।


শেয়ার করুন