২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ০৬:০২:৫৬ অপরাহ্ন
গণভবনে বসছে জনপ্রতিনিধির মিলনমেলা
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-০৯-২০২৩
গণভবনে বসছে জনপ্রতিনিধির মিলনমেলা

দেশে প্রথমবারের মতো জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস পালন করতে যাচ্ছে সরকার। ‘সেবা ও উন্নতির দক্ষ রূপকার, উন্নয়নে-উদ্ভাবনে স্থানীয় সরকার’ স্লোগানে আজ দিবসটি উদযাপন করা হবে। এ উপলক্ষে দেশের সব সিটি করপোরেশন, জেলা-উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের ৮ হাজার জনপ্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বসবে জনপ্রতিনিধির এই মিলনমেলা। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ সব দলের জনপ্রতিনিধি আমন্ত্রণ পেয়েছেন। অতীতে এত বিপুল সংখ্যক জনপ্রতিনিধির সঙ্গে দেশের কোনো প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের এমন নজির নেই। এ ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এই বৈঠকের একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। বৈঠক থেকে তাদের কিছু বার্তা দেওয়া হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

 জানা গেছে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠক থেকে প্রতিবছর জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারিকে স্থানীয় সরকার দিবস হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। পরে তারিখ পরিবর্তন করে ১৪ সেপ্টেম্বরকে স্থানীয় সরকার দিবস ঘোষণা করে সরকার।

 

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, দিবসটি পালনের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার ও সাধারণ জনগণের মেলবন্ধন আরও দৃঢ় হবে এবং সেবাপ্রাপ্তি প্রদানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ দেশের জনগণ। সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমে জনগণকে আরও সম্পৃক্ত করতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্থানীয় সরকারকে আরও সেবামুখী কাজ করতে হবে।   জানা গেছে, আমন্ত্রণের ক্ষেত্রে দলীয় বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। মূলত স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতেই প্রধানমন্ত্রীর এ উদ্যোগ। বর্তমানে দেশে ৪ হাজার ৫৭৭টি ইউনিয়ন পরিষদ, ৩২৯টি পৌরসভা, ৪৯৫টি উপজেলা পরিষদ, ৬১টি জেলা পরিষদ, ১২টি সিটি করপোরেশনসহ ৫ হাজার ৪৭৪টি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধিদের বাদ দিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করা সম্ভব নয়। সেদিক থেকেও আজকের এই স্থানীয় সরকার দিবসের একটি বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। পাশাপাশি এসব জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে সরকারের একটি বার্তা দেওয়ারও চেষ্টা থাকবে। আর দলীয় কোনো অনুষ্ঠান না হওয়ায় দলমত নির্বিশেষে সব দলের জনপ্রতিনিধিরা এতে অংশ নেবেন বলে জানা গেছে।

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় বিএনপি নেতা বাহারুল আলম বাহার গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সমকালকে বলেন, এটা কোনো রাজনৈতিক সভা নয়; স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সভা। জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি আমন্ত্রণপত্র পেয়েছি। সভায়ও যথাসময়ে যোগ দেব। গতকাল তিনি ঢাকায় পৌঁছেছেন বলে জানান। তাঁর সঙ্গে থাকা একই উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় জাতীয় পার্টির নেতা ফখরুল ইসলাম বলেন, আমাদের দলের সবাই কর্মসূচিতে যোগ দেবে।

স্থানীয় সরকার বিভাগ জানিয়েছে, এরই মধ্যে আমন্ত্রিত সব জনপ্রতিনিধির কাছে সরকারের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আমন্ত্রিতদের মধ্যে রয়েছেন– সব সিটি করপোরেশনের মেয়র, ঢাকার দুই সিটির সব কাউন্সিলর, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান এবং সব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। যেসব জনপ্রতিনিধি বরখাস্ত ও কোনো মামলার চার্জশিটে নাম আছে, তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে জানান স্থানীয় সরকার বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তা হেমায়েত আকবর টিপু। তিনি জানান, প্রায় ৮ হাজার জনপ্রতিনিধি আমন্ত্রণপত্র পেয়েছেন।

আজকের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া সরকারের আরও কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং শীর্ষপর্যায়ের কর্মকর্তাও উপস্থিত থাকবেন।   

শেয়ার করুন