২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৫:৫৩:১৯ অপরাহ্ন
বিএনপি থেকে অনেকেই যাচ্ছে তৃণমূল বিএনপিতে: সাক্ষাৎকারে তৈমূর আলম
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৯-২০২৩
বিএনপি থেকে অনেকেই যাচ্ছে তৃণমূল বিএনপিতে: সাক্ষাৎকারে তৈমূর আলম

নাজমুল হুদার মৃত্যুর পর তাঁর প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল তৃণমূল বিএনপিকে পুনর্গঠন করতে আজ মঙ্গলবার দলের কাউন্সিল হতে যাচ্ছে। দলটির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এই দলের নেতৃত্বে আসতে যাচ্ছেন বিএনপি সাবেক দুই নেতা তৈমূর আলম খন্দকার ও সমশের মবিন চৌধুরী। কাউন্সিলে সমশের মবিন চৌধুরীকে চেয়ারম্যান এবং তৈমূর আলম খন্দকারকে মহাসচিব হিসেবে নাম প্রস্তাব করা হবে।


এসব বিষয় নিয়ে গতকাল সোমবার রাতে বিএনপির বহিষ্কৃত উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তৈমূর আলম খন্দকার কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আগামীকাল (আজ) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে তৃণমূল বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। আলাপ-আলোচনায় শুনেছি সেখানে আমার নাম মহাসচিব হিসেবে এবং সিনিয়র ব্যক্তি হিসেবে সমশের মবিন চৌধুরীর নাম চেয়ারম্যান পদে প্রস্তাব করা হবে। বাকিটা কাল কাউন্সিলের পরে বোঝা যাবে।’


সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন একটি দলের নেতৃত্বে যাচ্ছেন, রাজনৈতিক ভাবনা কী? এ প্রশ্নের জবাবে তৈমূর আলম বলেন, ‘যেহেতু আমি রাজনীতি করতে চাই, কথা বলতে চাই, গণমানুষের পক্ষে থাকতে চাই, সরকারের স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে কথা বলতে চাই। এ জন্যই আমি এই প্ল্যাটফর্মে গেছি। আমি তো জীবনের যে অবস্থায় ছিলাম সেই অবস্থাতেই সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের রাজনীতি করেছি। আমি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী মানুষ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসী মানুষ। নতুন দলে এটাই হবে আমার রাজনৈতিক ভূমিকা।’


সমশের মবিন চৌধুরীর সঙ্গে এসব নিয়ে কথা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তৈমূর আলম বলেন, ‘উনার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে ৷ উনি যোগ দেওয়ার কথা আমার কাছে স্বীকার করেছেন। তা ছাড়া, বিএনপি থেকে সাবেক বা বহিষ্কার হওয়া অনেকেই এখানে যোগ দেবেন।নতুন আসা অনেকেই সাবেক বিএনপির হবে। তবে তাঁদের নাম-পরিচয় আপাতত বলা যাচ্ছে না।’


অন্য দলে যোগ দিচ্ছে—এ খবর গণমাধ্যমে আসার পরও তাঁর সঙ্গে বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি বলে জানান তৈমূর আলম।


বিএনপির প্রতি কোনো ক্ষোভ থেকে দল পরিবর্তন করছেন কি না, জানতে চাইলে তৈমূর আলম বলেন, ‘ক্ষোভ না, আমার রাজনীতি করার ইচ্ছা থেকেই এই দলে যোগ দেওয়া। রাজনীতিতে চলমান থাকার জন্যই এই সিদ্ধান্ত ৷ যেহেতু আমার দল আমাকে বহিষ্কার করে দিছে।’


সামনে জাতীয় নির্বাচন, বিরোধী জোটগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। এই ক্ষেত্রে আগামী নির্বাচন নিয়ে ভাবনা কী? এ প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই সাবেক নেতার জবাব, ‘নির্বাচন কমিশন তো জনগণকে আস্থায় আনতে পারছে না। কারণ রাষ্ট্রপতি বলেন, উন্নয়ন দেখে ভোট দেবেন। ডিসি বলেন, নৌকার পক্ষে ভোট দেবেন। পুলিশও বলে হাত-পা বাইরায়া ভাইঙ্গা দেব বাড়াবাড়ি করলে। পুলিশও বলে নৌকার পক্ষে ভোট দেবেন।’


ভোট হেফাজত করার দায়িত্ব যাদের তারাই যদি পক্ষপাতিত্ব করে সেখানে নির্বাচনটা আগে জনগণের আস্থায় আনতে হবে বলে মনে করেন তৈমূর আলম। তিনি বলেন, ‘সেই আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করার দায়িত্ব হলো সরকারের। তৃণমূল বিএনপি ভোটে যাবে কি না, এটা আগে কাউন্সিল হোক, তারপর পরিষ্কার বলা যাবে। তবে এই দল ব্যক্তিমালিকানার দল হবে না।’


আপনি কি স্বেচ্ছায় এই দলে যোগ দিচ্ছেন নাকি দল থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে? জানতে চাইলে তৈমূর বলেন, ‘তাদেরও প্রস্তাব আছে।আর আমিও চিন্তা করে দেখলাম জীবনভর বিএনপি করছি। নামের সঙ্গে মিল আছে। সেই হিসেবে নামটা আমার পছন্দ হইছে। আর আমি তৃণমূলের রাজনীতি করি। তৃণমূলও আছে। এই সবকিছু মিলিয়ে...দলের গঠনতন্ত্রে লেখা আছে, দলের মধ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’


বিএনপি থেকে যোগাযোগ করা হলে আবার নিজ আঙিনায় ফিরবেন কি না? এ প্রশ্নে তৈমূরের জবাব, ‘এখন আর সুযোগ কই? তবে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য রাজনীতির জন্য যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে বিএনপির সঙ্গে জোট হতে পারে।’ 


শেয়ার করুন