১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০১:৪৮:০৯ পূর্বাহ্ন
দেশের রপ্তানি আয় ১৪ বিলিয়ন ডলার বাড়িয়ে দেখানোর নেপথ্যে
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০৭-২০২৪
দেশের রপ্তানি আয় ১৪ বিলিয়ন ডলার বাড়িয়ে দেখানোর নেপথ্যে

বাংলাদেশে রপ্তানি বাৎসরিক হিসেবে প্রকৃত পরিমাণের চেয়ে ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বেশি দেখানোর ঘটনা বিভিন্ন মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।


রপ্তানির মতো গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর একটি খাতকে নিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভুল তথ্য প্রকাশের এমন ঘটনায় একই সঙ্গে বিস্ময় ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদরা। 


মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে বিবিসি বাংলা। 


প্রতিবেদনে বলা হয়, মূলত একটি দেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি থেকে শুরু করে অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক নির্ধারণ এবং অর্থনৈতিক নানান নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়নে রপ্তানি আয়ের প্রকৃত হিসাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।


কিন্তু রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) থেকে প্রকাশিত বাংলাদেশের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দশ মাসের রপ্তানি আয়ের হিসেবে বড় ধরনের অসামাঞ্জস্য ধরা পড়েছে।


ফলে দেশটির জিডিপি, মোট জাতীয় উৎপাদন (জিএনপি), বিদেশি বিনিয়োগ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, ঋণ গ্রহণের নীতি লেনদেনের ভারসাম্য-সহ অর্থনীতির অনেক সূচক এবং নীতির যথার্থতা নিয়েও এখন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।


সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, সব মিলিয়ে এটি দেশের ভাবমূর্তিকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছে। কাজেই কীভাবে এমন একটি ঘটনা ঘটলো, সেটি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। 


কীভাবে ঘটল এত বড় ভুল?


রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) অসামাঞ্জস্যপূর্ণ তথ্য নিয়ে সমালোচনার মধ্যেই জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে রপ্তানির প্রকৃত তথ্য প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।


সেখানে দেখা গেছে যে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশের প্রকৃত রপ্তানি ইপিবির দেওয়া তথ্যের চেয়ে প্রায় ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কম ছিল।


কেন্দ্রীয় ব্যাংক এমন তথ্য প্রকাশের পরে ইপিবিও তাদের রপ্তানির তথ্য সংশোধন করেছে।


কিন্তু রপ্তানি বেশি দেখানোর ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছে, ইপিবির পক্ষ থেকে সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও বক্তব্য জানানো হয়নি।


তবে বিষয়টিকে একটি ‘ভুল’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।


তার মতে, রপ্তানিযোগ্য একই পণ্যের মূল্য দুইবার ধরে হিসেব করার কারণেই তথ্যে অসামাঞ্জস্য দেখা দিয়েছে।


তিনি বলেন, ইপিবির যেটা ভুল হয়েছে, ইপিজেড থেকে যে রপ্তানি হয়, তা একবার হিসাবে ধরা হয়। আবার যখন গার্মেন্টস থেকে রপ্তানি হয়, সেটা আবার ধরা হয়। এখানে ডাবল হিসাব হয়। 


ডলার সংকটের কারণে গত কয়েক বছর ধরেই দেশের লেনদেনের আর্থিক হিসেবে ঘাটতি দেখা যাচ্ছিলো।


সম্প্রতি ঘাটতি আরও বাড়তে থাকায় রপ্তানির প্রকৃত অবস্থা জানতে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো এবং রাজস্ব বোর্ডের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত বছরের সেপ্টেম্বরে কমিটির সদস্যরা রপ্তানির তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই শুরু করে।


শেয়ার করুন