২৭ নভেম্বর ২০২৪, বুধবার, ১০:০১:৩৮ অপরাহ্ন
ব্যবহার হয়েছে ৩ লাখ ৯৭ হাজার টন লোহা
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-০৬-২০২২
ব্যবহার হয়েছে ৩ লাখ ৯৭ হাজার টন লোহা

পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যবহার করা হয়েছে ৩ লাখ ৯৭ হাজার ১৬৮ টন লোহা বা স্টিল প্লেট। এ প্রকল্পে শুধু ইট লেগেছে ১ কোটি ২০ লাখ ৯৭ হাজার ৯১৪টি। পাথর লেগেছে ৩২ লাখ ৩৭ হাজার ১৩০ ঘনমিটার।

মূল পদ্মা সেতু, নদী শাসন ও সংযোগ সড়ক নির্মাণে এসব উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। এ প্রকল্পের সার্বিক ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। পদ্মা সেতু প্রকল্পের এক হিসাবে এ তথ্য উঠে এসেছে।

রোববার পদ্মা সেতু এলাকায় গিয়ে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, পদ্মা সেতু নির্মাণে এমন কিছু উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে যা বিশ্বের অন্য কোনো সেতুতে ব্যবহার করা হয়নি। তিনি বলেন, বিভিন্ন দিক দিয়ে পদ্মা সেতু বিশ্বের রেকর্ড করেছে।

ভূমিকম্প বেয়ারিং টেস্টিং করার জন্য চীন থেকে আমেরিকায় নিয়ে যেতে এবং আসতে শুধু প্লেন ভাড়াই খরচ হয়েছে ২ কোটি টাকা। এ সেতু নির্মাণে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হ্যামার ব্যবহার করা হয়েছে। সেতুর পাইল ১২২ মিটার লম্বা ও এর ডায়ামিটারের আয়তন তিন মিটার। বিশ্বের কোনো সেতুতে এ ধরনের পাইল ব্যবহার করা হয়নি। 

সেতুসংশ্লিষ্টরা জানান, মূল পদ্মা সেতু ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। সংযোগ সেতু ও সেতুর মোট দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার। প্রকল্পে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হলেও রেল লাইনসহ দ্বিতল সেতুর নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১২ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

১৪ কিলোমিটার নদীশাসন কাজে ৯ হাজার ৪০০ কোটি টাকা, পুনর্বাসনে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, ২৭০০ হেক্টর জমি অধিগ্রহণে ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা, ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ ৬ লেন সংযোগ সড়ক নির্মাণে ১ হাজার ৯০৭ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এছাড়া পরামর্শক, সেনা নিরাপত্তা, কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড ও অন্যান্য ব্যয় দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, পদ্মা সেতুতে ২৯৪টি পাইল রয়েছে। এসব পাইলের গড় গভীরতা ১২২ মিটার; যা ৪০ তলা ভবনের সমান। নদীর তলদেশের মাটির অবস্থা খারাপ হওয়ায় ২২টি পিলারেরর ৭১টি পাইলে স্কিন গ্রাউট করতে হয়েছে।

পাইলের ডায়ামিটারের আয়তন তিন মিটার। রোববার ওবায়দুল কাদের জানান, এ ধরনের পাইল বিশ্বের কোনো সেতুতে ব্যবহার করা হয়নি। 

প্রকৌশলীরা জানান, মাটির নিচ থেকে পানির কিছুটা উপর স্তর পর্যন্ত পাইলের অবস্থান। কয়েকটি পাইলের উপর একটি করে পাইল ক্যাপ বসানো হয়েছে। ওই ক্যাপের উপর সেতুর পিলার নির্মাণ করা হয়েছে।

সেতুতে মোট পিলার রয়েছে ৪২টি। পিলারের উপর এমন উচ্চতায় সেতু নির্মাণ করা হয়েছে যে, ১৮ দশমিক ৩ মিটার উচ্চতার জাহাজ অনায়াসে সেতুর নিচ দিয়ে যাতায়াত করতে পারবে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে-মূল সেতু, নদীশাসন ও সংযোগ সড়ক নির্মাণে পাথর ব্যবহার করা হয়েছে ৩২ লাখ ৩৭ হাজার ১৩০ টন। স্টিল প্লেট ও ডিফরমড বার ব্যবহার করা হয়েছে ৩ লাখ ৯৭ হাজার ১৬৮ টন।

সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে ৬ লাখ ৮৫ হাজার ৮১৯ টন। সাধারণত সিমেন্ট ব্যাগ হিসাবে পরিবহণ করা হয়। এ সেতুতে অনেক পরিমাণে সিমেন্ট ব্যবহার হওয়ায় তা টনে হিসাব করা হয়েছে।

বিশেষ ধরনের মাইক্রোফাইন সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে দুই হাজার ১১৪ টন। প্রকল্পে ইট লেগেছে ১ কোটি ২০ লাখ ৯৭ হাজার ৯১৪ পিস। নদীশাসনে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে ১ কোটি ৯০ লাখ ৯০ হাজার ৫২১টি। আর কনক্রিট ব্লক ফেলা হয়েছে ৮০ লাখ পিস।

শেয়ার করুন