২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ১১:৪৬:৩৩ পূর্বাহ্ন
বিদেশি ঋণ পরিশোধে চাপ বাড়ছে
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-১১-২০২৩
বিদেশি ঋণ পরিশোধে চাপ বাড়ছে

সরকারের বেশ কিছু প্রকল্পের বিপরীতে নেওয়া বিদেশি ঋণের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়ে আসায় তা পরিশোধের চাপ বাড়ছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) যেখানে সুদাসলে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ছিল মাত্র ১৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার, সেখানে চলতি অর্থবছরের একই সময়ে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭ কোটি ৮০ লাখ ডলারে, যা প্রায় তিনগুণ।


ইআরডির তথ্যানুযায়ী, বৈশ্বিক মহামারী করোনার শুরু থেকে গত অর্থবছর পর্যন্ত বাংলাদেশ বাজেট সহায়তা হিসাবে ৬.৪৬ বিলিয়ন ডলার ঋণ নেয়। এর মধ্যে কিছু ঋণের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকের (এআইআইবি) ২৫০ মিলিয়ন ডলার এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ২৫০ মিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা। এ দুটি ঋণের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়েছে গত মে মাসে। এ ছাড়া আগামী জুনে ২৫০ মিলিয়ন ডলারের আরও একটি বাজেট সহায়তার গ্রেস পিরিয়ড শেষ হচ্ছে।


বিষেশজ্ঞদের মতে, গত অর্থবছর থেকে আর্থিক হিসাবে যে ঘাটতি দেখা দিয়েছে, সেটি আগের মতো উদ্বৃত্তে আনার পথে ঋণের আসল পরিশোধ বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। একের পর এক বড় ঋণগুলোর গ্রেস পিরিয়ড শেষ হওয়ার কারণে আর্থিক হিসাবে আসল পরিশোধ আগামীতে বাড়তেই থাকবে।


ইআরডির পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বৈদেশিক ঋণের আসল পরিশোধ ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণের আসল বাবদ ১৭৩ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়েছিল। প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, আগামী অর্থবছরে আসল পরিশোধ করতে হবে প্রায় ২৯০ কোটি ডলার এবং পরের অর্থবছরে এটি বেড়ে দাঁড়াবে ৩৩১ কোটি ডলার। জানা গেছে, ২০২৭ সালে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে নেওয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ঋণের আসল পরিশোধ শুরু হবে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি ঋণের গ্রেস পিরিয়ডও শেষ হতে থাকবে। তখন ঋণ পরিশোধের পরিমাণ আরও বাড়বে।


সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরে উন্নয়ন প্রকল্পের ঋণ এবং বাজেট সহায়তার ঋণের জন্য ১১৯ কোটি ডলার সুদ পরিশোধ করতে হবে। আগামী ২০২৪-২৫ এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সুদ পরিশোধের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে যথাক্রমে ১৩১ কোটি ডলার এবং ১৪১ কোটি ডলার। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে ঋণের সুদ পরিশোধে ব্যয় হয়েছে ৪৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার। সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরের ১৬ জুন পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের হিসাব ছিল ৯৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার।


পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর মনে করেন, ঋণের বোঝার কারণে অনেক দেশই ঝুঁকিতে পড়েছে। ঋণের পরিমাণ বাড়লে কি অবস্থা দাঁড়ায় এটি দৃশ্যমান হচ্ছে- পাকিস্তান, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা ও মালয়েশিয়ায়। এ জন্য ঋণের সঠিক ব্যবহার করতে হবে। তা না হলে আগামীতে এই বোঝা ভারী হবে।


শেয়ার করুন