১২ ডিসেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৪:০৬:১৮ অপরাহ্ন
বিটিএমসির বন্ধ মিলগুলো লিজ দেয়ার উদ্যোগ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-১১-২০২৩
বিটিএমসির বন্ধ মিলগুলো লিজ দেয়ার উদ্যোগ

বন্ধ থাকা বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশনের (বিটিএমসি) নিয়ন্ত্রণে থাকা ১৬টি মিল আবার ইজারা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। মিলগুলোর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পুনঃচালুর লক্ষ্যে ইজারার শর্তাবলী পদ্ধতি ও ইজারা প্রস্তাব চূড়ান্ত করার জন্য দশ সদস্যের একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় ওয়ার্কিং কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এই ওয়ার্কিং কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব। সম্প্রতি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো: আলমগীর হোসেন স্বাক্ষরিত একটি সার্কুলারে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

জানা গেছে, কমিটি মিলগুলোর ইজারা প্রস্তাবগুলো চূড়ান্ত করার সুপারিশ করবে। ইজারার বিপরীতে বিভিন্ন প্রস্তাব নিষ্পত্তির জন্য পরার্মশও দিবে এ কমিটি। এর আগে, ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের সময় বিটিএমসির বন্ধ মিল চালুর বিষয়ে নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার পরিপ্রেক্ষিতে বিটিএমসির বন্ধ মিলগুলো পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মন্ত্রণালয়।


সূত্র জানায়, বিটিএমসির ২৫টি মিলের ৬৩৬ দশমিক ৩৮ একর জমি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ১৬টি মিল পিপিপির মাধ্যমে চালু করার অনুমোদন দেয়। এর মধ্যে ১৪টি মিল চালুর কোনো প্রক্রিয়াই শুরু করতে পারেনি। সম্প্রতি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনায় চাপ প্রয়োগ করে বিক্রি হওয়া মিল চালুর বিষয়ে সুপারিশ করে সংসদীয় কমিটি।

সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিটিএমসির ১৬টি মিল চালুর সর্বশেষ বিষয় নিয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। সেখানে বলা হয়, প্রথম পর্যায়ে ঢাকার ডেমরায় অবস্থিত আহমেদ বাওয়ানী টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড ও গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত কাদেরিয়া টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড শীর্ষক প্রকল্প দু’টি পিপিপির মাধ্যমে পরিচালনার জন্য অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

২০১৭ সালের ১৪ জুন অর্থনৈতিক বিষয় সম্পর্কিত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এ বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। আন্তর্জাতিক টেন্ডার প্রক্রিয়ায় ওরিয়ন কনসোর্টিয়াম কাদেরিয়া টেক্সটাইল মিল পরিচালনার জন্য নির্বাচিত হয়। ২০১৯ সালের ২১ জুলাই ওরিয়ন কাদেরিয়া টেক্সটাইলসের সাথে বিটিএমসির চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর কাদেরিয়া টেক্সটাইলের জমি গ্রিন ফিল্ড হিসেবে ওরিয়নের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মিলের সীমানা প্রাচীর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের বিস্তারিত পরিকল্পনা অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।


সূত্র জানায়, টেন্ডার প্রক্রিয়ায় আহমেদ বাওয়ানী টেক্সটাইল মিলটি পায় কনসোর্টিয়াম অব তানজিনা ফ্যাশন লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠান। ২০১৯ সালের ২৫ জুন মিলটি পরিচালনা করতে তাদের সাথে বিটিএমসির চুক্তি হয়। মিলটির প্রাইভেট পার্টনার আপফ্রন্ট প্রিমিয়াম বাবদ ৭ কোটি টাকা এবং মিলের বিদ্যমান স্থাপনা ও মেশিনারিজ বাবদ ৬ কোটি ৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। অর্থাৎ মিলটি পরিচালনা করতে ১৩ কোটি ৫ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হতো তানজিনা ফ্যাশনকে। বিটিএমসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পিপিপি চুক্তিতে আহমেদ বাওয়ানী টেক্সটাইল মিলের জন্য টাকা পরিশোধ না করায় বাস্তবায়ন দীর্ঘায়িত হচ্ছে।

এ দিকে টাঙ্গাইলের গোড়াইয়ে অবস্থিত টাঙ্গাইল কটন মিলস লিমিটেড পিপিপির মাধ্যমে পরিচালনার জন্য ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি অর্থনৈতিক বিষয় সম্পর্কিত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে নীতিগত অনুমোদন পায়। পরে ২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়। তবে দরপত্র আহ্বানের পর স্বাধীনতার আগে মিলের ২০ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা দাবি করে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে একটি পক্ষ। তখন হাইকোর্ট থেকে টেন্ডার কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। মামলা চলমান থাকায় প্রকল্প বাস্তবায়ন দীর্ঘায়িত হচ্ছে। তবে শিগগিরই অন্য মিলগুলো চালু করার উদ্যোগ নেয়া হবে বলে সূত্র জানায়।


শেয়ার করুন