ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে এক সদস্য প্রার্থীকে জিতিয়ে দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার তৎকালীন নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। যদিও পরে তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁকে স্বপদে ফেরানো হয়। সেই কর্মকর্তাকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে রাজশাহীর সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন প্রার্থীরা।
আব্দুল হান্নান বর্তমানে রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া থানা নির্বাচন কর্মকর্তা। গত ১৩ মার্চ তিনি এখানে যোগ দেন। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন।
এর আগে, গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি ইউপি নির্বাচনে প্রার্থীকে জিতিয়ে দিতে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে নির্বাচন কমিশন তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করেছিল। সে সময় অর্থ লেনদেন নিয়ে এক প্রার্থীর সঙ্গে আলোচনার একটি অডিও ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে আব্দুল হান্নানের কণ্ঠের সঙ্গে মিলে যাওয়া এক ব্যক্তিকে ওই প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলতে শোনা যায়। তবে দেড় বছরের মধ্যেই অভিযোগ থেকে দায়মুক্তি পেয়ে আবার তিনি নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দিয়েছেন।
এ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা বলেন, ‘বিতর্কিত কেউ যেন নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে না থাকেন—সেই নির্দেশনা ইসিই দিয়েছেন। তারপরও এ আসনে এমন বিতর্কিত ব্যক্তিকে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা করা হয়েছে। একজন নির্বাচন কর্মকর্তা যেখানে ইউপি নির্বাচনে মেম্বার প্রার্থীর কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে বরখাস্ত হন, সেখানে তাঁকে সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব দেয় কীভাবে?’
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রাজশাহী মহানগরের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল বলেন, ‘এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, সেটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। যেহেতু তাঁর বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ উঠেছিল, সেহেতু তাঁকে এমন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে না রাখাই উচিত ছিল। আশা করি নির্বাচন কমিশন বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।’
একই কথা বলেছেন জাসদ মনোনীত প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মাসুদ শিবলী। তিনি বলেন, ‘বিষয়গুলো আমি আগে জানতাম না। কে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা সেটিও জানতাম না। এখন জানলাম। অভিযোগটি তো খারাপ, যদিও অভিযোগ থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন বলে শুনলাম। তারপরও নির্বাচন কমিশনের উচিত বিষয়টি ভালোভাবে খতিয়ে দেখা।’