০৬ জুলাই ২০২৫, রবিবার, ০২:৪০:৪৫ পূর্বাহ্ন
বিয়ের চাপ দেওয়ায় নিজের পুরুষাঙ্গ কেটে ফেললো যুবক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০৭-২০২৫
বিয়ের চাপ দেওয়ায় নিজের পুরুষাঙ্গ কেটে ফেললো যুবক

পাবনার বেড়া উপজেলায় বিয়ের জন্য পরিবারের চাপ সইতে না পেরে নিজের পুরুষাঙ্গ ও অন্ডকোষ কেটে ফেলেছেন নাজমুল হোসেন (২২) নামের এক যুবক। বর্তমানে তিনি পাবনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কৈটলা ইউনিয়নের মানিকনগর গ্রামে। নাজমুল ওই গ্রামের মন্টু মোল্লার ছেলে।


ঘটনাটি ঘটেছে ২৬ জুন (বুধবার) দুপুরে। তবে পরিবার প্রথমে বিষয়টি গোপন রাখলেও এখন তা জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।


নাজমুলের পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, পেশায় এস্কেভেটর চালক নাজমুলের তিন বোনের মধ্যে একজন বিবাহিত, বাকিরা এখনও অবিবাহিত। পরিবার থেকে নিয়মিত তাকে বিয়ের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু নাজমুল বিয়েতে রাজি ছিলেন না। ঘটনার দিনও বিয়ের প্রসঙ্গে পরিবারের সঙ্গে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে তিনি বাজার থেকে ব্লেড কিনে এনে বাথরুমে ঢুকে নিজের পুরুষাঙ্গ ও অন্ডকোষ কেটে ফেলেন।


তার চিৎকার শুনে পরিবারের লোকজন প্রথমে তাকে উদ্ধার করে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে ছয় ঘণ্টার বেশি সময় পার হয়ে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন অঙ্গ জোড়া লাগানো সম্ভব হয়নি। বর্তমানে তিনি পাবনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, নাজমুলের নানা, দুলাভাই এবং মা প্রায়ই বিয়ের জন্য চাপ দিতেন। কেউ কেউ দাবি করছেন, ঘটনার দিন কেউ তাকে 'হিজড়া' বলে কটূক্তি করেছিল। সেই অপমান থেকেই হয়তো সে এমন ভয়ানক সিদ্ধান্ত নিতে পারে।


ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কৈটলা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য রফিক বলেন, “নাজমুলকে ঢাকায় নেওয়া হলেও বিষয়টি পুলিশ কেস হওয়ায় তাৎক্ষণিক ভর্তি সম্ভব হয়নি। পরে ভর্তি করা গেলেও ছয় ঘণ্টা দেরি হওয়ায় তার অঙ্গ জোড়া লাগানো যায়নি।”


নাজমুলের বাবা বলেন, “বিয়ের কথা বলাটাই স্বাভাবিক। তবে আমি ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলাম না। আমার ছেলে এক সময় মানসিক সমস্যায় ভুগলেও চিকিৎসার পর সে অনেকটাই সুস্থ ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে এমন ভয়ানক কাজ কেন করল, বুঝতে পারছি না।”


পাবনা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. জাহিদুল ইসলাম জানান, “ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে সে আশঙ্কামুক্ত রয়েছে। আমরা তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে পর্যবেক্ষণে রেখেছি।”


এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে উদ্বেগ দেখা দিলেও পরিবার ও চিকিৎসকদের মতে, নাজমুলের মানসিক অবস্থা এবং পারিপার্শ্বিক চাপ থেকেই এমন অঘটন ঘটেছে।

শেয়ার করুন