রাজশাহী-৬ আসন থেকে তিনবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম। তিনি শুরু থেকেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৮ সালে তার বার্ষিক আয় ছিল ৯৭ লাখ ৭৩ হাজার ৯৪৯ টাকা। ২০২৩ সালে এসে তার বছরে আয় হয়েছে ৭ কোটি ৯২ লাখ ৯১ হাজার ২৫৪ টাকা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
এছাড়াও ২০০৮ সালে স্ত্রীর নামে ছিল ২৭ ভরি স্বর্ণ। শাহরিয়ার আলমের নামে ছিল ১৫ ভরি স্বর্ণ। ২০১৩ সালের হলফনামায় দেখা গেছে, নিজের নামে স্বর্ণের মূল্য দেখিয়েছেন ৭৫ হাজার টাকা ও স্ত্রীর নামে দেখিয়েছেন ৩ লাখ টাকার স্বর্ণ। ২০১৮ সালে তিনি একই দেখান। ২০২৩ সালে এসে স্ত্রীর নামে হয়েছে ১৭৫ ভরি স্বর্ণ। নিজের নামে দেখান ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণ।
শাহরিয়ার আলমের ২০১৮ সালের হলফনামায় দেখা গেছে, ওই সময় তার বার্ষিক আয় ছিল ৩ কোটি ৪ লাখ ৫৩ হাজার ৩৮৮ টাকা। এখন তা আড়াই গুণেরও বেশি বেড়ে হয়েছে ৭ কোটি ৯২ লাখ ৯১ হাজার ২৫৪ টাকা। শাহরিয়ার আলমের হাতে নগদ টাকাও বেড়েছে তিন গুণের বেশি। ২০১৮ সালে নগদ ছিল ৬ কোটি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৭০৬ টাকা। এখন আছে ২১ কোটি ৪৫ লাখ ৪৯ হাজার ১৫৩ টাকা।
শাহরিয়ার আলমের শেয়ার আছে ৬৬ কোটি ৪১ লাখ ৩২ হাজার ৭০০ টাকার। আগে শেয়ার ছিল ৫৮ কোটি ৬ লাখ ৫৩ হাজার ৩৫০ টাকার। আগে সঞ্চয়পত্র ছিল ১০ লাখ টাকার, এখন ৩০ লাখ টাকার। পাঁচ বছর আগে শাহরিয়ারের গাড়ির দাম ছিল ৭৬ লাখ ৬৩ হাজার ৩১৫ টাকা। এখন বিলাসবহুল গাড়ির দাম ১ কোটি ১০ লাখ ৩ হাজার ১০০ টাকা।
২০০৮ সালে শাহরিয়ার যখন প্রথমবার এমপি হন, তখন তার হাতে নগদ টাকা ছিল ১ কোটি ৬৬ লাখ ৪০ হাজার ৫৬৫ টাকা। ব্যাংকে ছিল মাত্র ৪ হাজার ১৩৬ টাকা। ২০১৩ সালের নির্বাচনের সময় ব্যাংকে কোনো টাকাই ছিল না নিজের নামে। এখন স্ত্রী-সন্তানদের নামেও বিপুল সম্পদ রয়েছে।
হলফনামার এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমকে ফোন করা হলেও ধরেননি। তাই তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। শাহরিয়ার আলম কোম্পানির শেয়ার, কৃষি খাত, প্রতিমন্ত্রী হিসেবে পাওয়া সম্মানী ও দোকান এবং অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়াকে নিজের আয়ের উৎস হিসেবে দেখিয়েছেন।
হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেনুল হকের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ। তিনি ব্যবসা থেকে বছরে ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা ও মুক্তিযোদ্ধা ভাতা হিসেবে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা পান। তার হাতে এখন ১ লাখ আর ব্যাংকে প্রায় ৬ লাখ টাকা আছে। স্ত্রীর নামে ব্যাংকে আছে ২৫ লাখ টাকা। কোনো কৃষিজমি নেই। রাহেনুল হকের নামে কোনো মামলাও নেই।
জাসদের প্রার্থী জুলফিকার মান্নান জামীর শিক্ষাগত যোগ্যতা মাস্টার্স। তার নামে কোনো মামলা নেই। তিনি বছরে ৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা আয় করেন ব্যবসা থেকে। এখন তাঁর হাতে ১২ লাখ ৬৬ হাজার ৬০০ টাকা আছে। ব্যাংকে কোনো টাকা নেই। স্ত্রী কিংবা তাঁর নামে অন্য কোনো সম্পদ নেই।
এনপিপির প্রার্থী মহসিন আলী পড়াশোনা করেছেন এসএসসি পর্যন্ত। তিনিও কোনো মামলার আসামি নন। তিনি ব্যবসা করে বছরে ২ লাখ টাকা আয় করেন। এখন হাতে ৫০ হাজার ও ব্যাংকে ৫০ হাজার টাকা আছে। স্থাবর-অস্থাবর তাঁর নামে আর অন্য কোনো সম্পদ নেই।
জাকের পার্টির প্রার্থী রিপন আলীর শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি। পেশায় তিনিও ব্যবসায়ী। বার্ষিক আয় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তাঁর হাতে নগদ টাকা আছে ২০ লাখ। মাছের খামারে বিনিয়োগ আছে প্রায় ১৬ লাখ টাকা। প্রায় ৫ লাখ টাকা মূল্যের কৃষিজমি রয়েছে। তাঁর নামে কোনো মামলা নেই।
বিএনএমের প্রার্থী আবদুস সামাদ অর্থনীতিতে এমএ করেছেন। তার নামেও কোনো মামলা নেই। তিনি অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। এখন কোনো আয় নেই। হাতে আছে নগদ ১৩ লাখ টাকা। ব্যাংকে কোনো টাকা নেই। কোনো কৃষিজমি নেই। স্ত্রীর নামে আছে ৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র।#
ৃ