২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০৬:১০:২৭ অপরাহ্ন
স্মার্ট বাংলাদেশের ইশতেহার ২৭ ডিসেম্বর ঘোষণা করবেন শেখ হাসিনা
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-১২-২০২৩
স্মার্ট বাংলাদেশের ইশতেহার ২৭ ডিসেম্বর ঘোষণা করবেন শেখ হাসিনা

শিল্পায়ন-কর্মসংস্থানের রোডম্যাপ : স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট ইশতেহার > ২৭ ডিসেম্বর ঘোষণা করবেন শেখ হাসিনা

২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘দিনবদলের সনদ’ স্লোগানে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রæতি দিয়ে তরুণ সমাজকে টার্গেট করে জনগণের বিপুল ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল আওয়ামী লীগ। ২০১৪ সালে ‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ শিরোনামের ইশতেহারে স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশের। একই ধারবাাহিকতায় ২০১৮ সালে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ স্লোগানে আমার গ্রাম আমার শহর প্রত্যয়ে জনগণের জীবনমান উন্নয়নের স্বপ্ন দেখানো হয়েছে। আর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে আগামী বুধবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহার ঘোষণা করবেন দলীয়প্রধান শেখ হাসিনা। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ, এবার হবে কর্মসংস্থান’- স্লোগানে দেশের যুব সমাজকে আকৃষ্ট করতে এবারের ইশতেহারে শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থানের ওপর সব চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এছাড়া থাকবে সুশাসন নিশ্চিত করা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা, প্রযুক্তি ও কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা। রূপকল্প-২০৪১ এবং ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ কে মূল ভিত্তি ধরে টেকসই উন্নয়নের অভীষ্ট পূরণে ইশতেহার তৈরি করেছে ক্ষমতাসীনরা।

সূত্র মতে, আওয়ামী লীগের এবারের ইশতেহারে রয়েছে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের রূপরেখা। ‘স্মার্ট নাগরিক’, ‘স্মার্ট সোসাইটি’, ‘স্মার্ট ইকোনমি’ ও ‘স্মার্ট সরকার’ গড়ার সুষ্পষ্ট ব্যাখ্যা থাকবে। তবে এবারের ইশতেহারে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে কর্মসংস্থান ও শিল্পোন্নয়ন। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব উপযোগী জনবল গড়ে তোলায় গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি। ইশতেহারে রয়েছে তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বিনিয়োগ আকৃষ্ট ও শিল্পোন্নয়নের রোডম্যাপ। এই লক্ষ্যে দেশের অর্থনীতিকে শক্ত ভিতের ওপর দাড় করাতে ‘উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য’ নির্ধারণ করে কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, সহজলভ্য প্রযুক্তির ব্যবহার, আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা আনা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দুর্নীতি রোধের

বিষয়গুলোকেও বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে ইশতেহারে।

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা : ইশতেহার প্রণয়ন


কমিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ইশতেহারে বিগত নির্বাচনে দেয়া প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়নের হিসাব-নিকাশ যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে নতুন নতুন চমক। অর্থনৈতিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ গঠন, বিদেশনির্ভরতা কমানো এবং বিদেশি ষড়যন্ত্র রোধে কর্মসূচিও রয়েছে। চলমান মেগা প্রকল্পগুলো সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে যথাসময়ে শেষ করার পরিকল্পনা থাকবে ইশতেহারে। রয়েছে অবকাঠামো খাতে সুষম উন্নয়নের রূপরেখা। এদিকে এসডিজি টেকসই উন্নয়নের ১৭টি শর্ত পূরণ করার দিকনির্দেশনা রয়েছে ইশতেহারে। ফলে আগের ইশতেহারগুলোর তুলনায় এবারের ইশতেহারে কিছু মৌলিক পরিবর্তনও আনা হয়েছে। ইশতেহার প্রণয়ন উপকমিটির আহ্বায়ক ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, উন্নয়নে কেউ পিছিয়ে থাকবে না। আমরা এক সঙ্গে এগিয়ে যাব। এটিই আমাদের এবারের ইশতেহারের মূল বিষয়।

জানা গেছে, ইশতেহারের প্রথমাংশে থাকবে গত নির্বাচনের অঙ্গীকারের বাস্তবায়নের চিত্র। টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের তুলনামূলক চিত্র। আর দ্বিতীয়াংশে রয়েছে আবারো ক্ষমতায় এলে আগামী পাঁচ বছর মেয়াদে কী কী করা হবে, সেসব অঙ্গীকার। পাশাপাশি রয়েছে টেকসই উন্নয়নের রূপরেখা। সেখানে খুব সুনির্দিষ্টভাবে বলা থাকবে পাঁচ বছরে জনগণের জন্য কী করা হবে বা ১০ বছরে কী করা হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে টেকসই উন্নয়নের পথে নিয়ে যেতে ইশতেহারে নানা প্রতিশ্রæতি দেয়া হচ্ছে। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়া, করোনা মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সারা বিশ্বে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবিলা করে বাংলাদেশের উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করা এবং যুগান্তকারী উন্নয়নের সুফল যাতে মানুষ পায়, সেটা নির্বাচনী ইশতেহারে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। জিডিপি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ ভাগের ওপরে। সুশাসন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, জ্বালানি সংকট মোকাবিলা, শহর ও গ্রামে সুসম রাষ্ট্রীয় সেবা নিশ্চিত করার বিষয়ের পদক্ষেপ নেয়ার কথা রয়েছে ইশতেহারে।

ইশতেহার প্রণয়ন উপকমিটির সদস্য সচিব ড. সেলিম মাহমুদ ভোরের কাগজকে বলেন, আগামী পাঁচ বছরের জন্য আমাদের কী অঙ্গীকার জনগণের কাছে, সেটা থাকবে। সেখানে খুব সুনির্দিষ্টভাবে বলা থাকবে। পাশাপাশি পাঁচ বছর পর কী করব বা দশ বছরে কী করব এটার একটা রূপরেখা জানানো হবে। ইশতেহারে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা থাকবে। যার সুফল পাবে আগামী কয়েকটি প্রজন্ম।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ইশতেহারে স্মার্ট বাংলাদেশের পথে দেশকে এগিয়ে নিতে তরুণ প্রজন্মকে কাজে লাগানোর নানা পরিকল্পনার কথা রয়েছে। যেখানে তরুণদের চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উপযোগী স্মার্ট জনশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে তরুণদের কর্মসংস্থান, তরুণ ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তাদের জন্য নেয়া পদক্ষেপগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খ তুলে ধরা হয়েছে।

ইশতেহার প্রণয়ন উপকমিটির সদস্য সাব্বির আহমেদ ভোরের কাগজকে বলেন, রূপকল্প-২০৪১ ঘিরেই মূলত. আমাদের ইশতেহার পরিকল্পনা। কর্মসংস্থান এবং শিল্পায়নকে সবচেয়ে বেশি গুরত্ব দেয়া হয়েছে। আগামী পাঁচ বছর কি কি করা হবে এর পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বিগত ইশতেহার ধরে ধরে বাস্তবায়ন করেছে। ইতোমধ্যেই আমার গ্রাম আমার শহর, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, বঙ্গবন্ধু টানেল বাস্তবায়ন হয়েছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে মোকাবিলায় এবার শিল্পায়নের ওপর অনেক বেশি গুরত্ব দেয়া হয়েছে। তবে কৃষি, যোগাযোগ ও অন্যান্য খাতেও অবহেলা করা হয়নি।


শেয়ার করুন