২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ০৬:৪৫:১২ অপরাহ্ন
খাদ্য বিতরণে জোর
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৬-১২-২০২৩
খাদ্য বিতরণে জোর

প্রথম পাঁচ মাসে বেড়েছে ২৩ শতাংশ, পরিস্থিতি সামাল দিতে আগেভাগেই আমদানি  

দেশে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সরকার সারাদেশে খাদ্যশস্য বিতরণ রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে সাধারণ মানুষের মধ্যে খাদ্যশস্য বিতরণ ২৩ শতাংশের বেশি বেড়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে কম দামে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে এই খাদ্য বিতরণ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগেভাগেই আমদানি করা হচ্ছে পর্যাপ্ত খাদ্য। ফলে দেশে খাদ্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকার পাশাপাশি নি¤œ আয়ের মানুষের মধ্যেও স্বস্তি বিরাজ করছে। বিশ্ব মন্দার মধ্যেও সরকারের দায়িত্বশীল উদ্যোগের ফলে এটি সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা।  

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, চলতি অর্থবছরের গত নভেম্বর পর্যন্ত খোলা বাজারে বিক্রি (ওএমএস) ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মতো প্রকল্পগুলোর আওতায় ১২ লাখ ৯২ হাজার টন চাল ও গম বিতরণ করা হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে তা ছিল সাড়ে ১০ লাখ টন।

গত ১৮ মাস ধরে মূল্যস্ফীতি বাড়তে থাকায় তা সরকারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। খাদ্যপণ্যের উচ্চমূল্য মোকাবিলায় সরকার বেশ চাপেও ছিল। কিন্তু সরকারের পদক্ষেপে তা স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হয়েছে। 

গত বছরের নভেম্বরে সরকার বলেছিল, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করছে। এই পরিস্থিতি এড়াতে বাংলাদেশকে অবশ্যই প্রতিইঞ্চি জমিতে ফসল ফলাতে হবে এবং সঞ্চয়ের পাশাপাশি খরচ কমাতে হবে এমন নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি আগেভাগে চাল আমদানি করে সরকার পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে। যে কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য ঘাটতি থাকলেও বাংলাদেশে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। আগেভাগে বাস্তব পদক্ষেপ না নিলে বাংলাদেশকে আজ অনেক কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হতো বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। 


বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যে জানা যায়, গত অক্টোবর থেকে টানা তৃতীয় মাস দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ শতাংশের বেশি ছিল। এটি গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার পর থেকে অর্থনীতিবিদরা মানুষের উপকারের কথা বিবেচনা করে সরকারকে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচির পরিধি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

বেশি পরিমাণে বিতরণের কারণে বর্তমান পরিস্থিতিতেও সরকারের খাদ্য মজুদ রয়েছে ১৩ লাখ ৯৩ হাজার টন। এটি এর আগের বছরের একই দিনে ছিল ১৫ লাখ ৮২ হাজার টন। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, সাম্প্রতিক মাসগুলোয় দেশে খাদ্য মজুদ ছিল গড়ে ১৮-১৯ লাখ টন।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের মহাপরিচালক কাজী শাহাবুদ্দীন বলেন, এক সময় ১০ লাখ টন খাদ্যশস্য মজুদ দেশের জন্য যথেষ্ট বলে ধরে নেওয়া হলেও এখন তা ১০-১৫ লাখ টন হওয়া উচিত। সুতরাং সেই হিসাবে দেশের বর্তমান খাদ্য মজুদ ঠিক আছে। তিনি সরকারের খাদ্যশস্য মজুদের ব্যবস্থাকে ‘সুড়ঙ্গ’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, এটি একদিকে ভরা হয় ও অন্যদিক থেকে বিতরণ করা হয়। তিনি মনে করেন, বেশি বিতরণের ফলে মজুদ কমে গেলেও আমন সংগ্রহের পর তা বাড়বে।


শেয়ার করুন