বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সবকিছুই ধর্ষিত- এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
গয়েশ্বর রায় বলেছেন, আজকের পরিস্থিতে বিশ্ববাসী বুঝতে পেরেছে এদেশে কোনো সভ্য লোক বাস করার মতো পরিস্থিতি নেই। এরা (আওয়ামী লীগ) আমাদের একটা অসভ্য জাতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এই ভাষার মাসে এদেশের তরুণরা রক্ত দিয়েছিল। আর আজকে এক নারী রক্ত দিয়েছে জাহাঙ্গীর নগরের এক তরুণের জন্য। সুতরাং আমি মনে করি আজকে বাংলাদেশ ধর্ষিত। এ দেশের স্বাধীনতা ধর্ষিত। এ দেশের সার্বভৌমত্ব ধর্ষিত।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত ‘নারী সমাজের ওপর অপমানের শেষ কোথায়?’ শীর্ষক এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
নারী ধর্ষণের প্রতিবাদে গয়েশ্বর রায় বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী অনেক উন্নয়ন করেছেন। অনেক প্রতিষ্ঠান করেছেন। তবে একটা প্রতিষ্ঠান করা কেন বাদ রাখলেন। আর যেটা করেছেন সেটা কেন পদ্মার ওপারে গোয়ালন্দে করলেন। সেটা কেন আপনার আশপাশে করলেন না? তাহলে তো আপনার সোনার ছেলেরা তাদের শখ-খায়েশ মেটাতে পারত। তাহলে আর তারা কোনো নারীর প্রতি অবৈধভাবে সম্পর্ক করত না।
সীমান্তে হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, আজকে রাখাইন থেকে সৈন্যরা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। আবার তাদের নিক্ষেপ করা বোমায় এদেশের মানুষ আহত ও নিহত হয়। এটা আসলে কিসের লক্ষণ, আমার জানা নেই। বিএসএফ এত লোককে গুলি করে মারল, এর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই আপনারা নিলেন না। এমনকি একটা প্রতিবাদও পর্যন্ত করলেন না। আগে যখন বিডিআর ছিল তখন বিএসএফ থেকে একটা গুলি করলে জবাবে এপার থেকে দশটা গুলি করা হতো। কিন্তু এখন এর কোনো প্রতিবাদ না করে উলটো তাদের সঙ্গে এক হয়ে নাস্তা করেন। যেমনি আমার সীমান্তরক্ষী শেষ করলেন তেমনি আমার সেনাবাহিনীর ৫৭ জন চৌকষ অফিসারকে খুন করলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে এমন চৌকস অফিসার পাঁচজনও মারা যায়নি। তারপরও আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। সুতরাং সব অপকর্ম করে পার পেয়ে যান। আমার মনে হয় সব অপকর্মের জবাব আপনাকে একদিন একবারেই দিতে হবে। বারবার দেওয়ার সুযোগ পাবেন না।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আইনমন্ত্রী যখন বলেন-সাগর রুনির হত্যা মামলার রায় পঞ্চাশ বছরেও হবে না। তখন আমাদের কি দায়িত্ব না যে এই সরকারকে ৫০ দিনও ক্ষমতায় না রাখা। তাদের ক্ষমতায় রাখলে এদেশের কেউ নিরাপদে থাকবে না। মান সম্মান তো দূরের কথা, জীবনটা নিয়েও বেঁচে থাকার কোনো সুযোগ থাকবে না।
গয়েশ্বর রায় বলেন, আদালত যদি অন্ধ হয়ে যায় এবং বিচার বিভাগ যদি পঙ্গু হয়ে যায়, আর বিচারকদের বিবেক যদি জাগ্রত না হয়ে তারা শুধুমাত্র চাকরি করার জন্য সরকারের পক্ষে কথা বলেন। তাহলে দেশের বিচার বিভাগ কলঙ্কিত হয়ে যায়। আর এ বিচার বিভাগকে মানুষ কলঙ্কিত করেন না।
তিনি বলেন, আদালতের প্রতি মানুষের যথেষ্ট সম্মান বোধ রয়েছে। আর দেশের এমন পরিস্থিতি থেকে যদি মুক্তি পেতে চায় তাহলে বিচার বিভাগই পারে এ করুণ অবস্থা থেকে মানুষকে মুক্ত করতে।
মানববন্ধনের সভাপতিত্ব করেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। সঞ্চালনা করেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, আব্দুল আওয়াল মিন্টু, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমীন গাজী, সাংবাদিক নেতা কাদের গণি চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বনির্ভর বিষয়ক সহ-সম্পাদক শিরিন সুলতানা, নিলোফার চৌধুরী মনি, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিন, ছাত্রদলের সাবেক নেতা ওমর ফারুক কাওসার, পার্থদেব মণ্ডল, বর্তমান যুগ্ম সম্পাদক রিয়াদ রহমান, আহি আহম্মেদ জুবায়ের, বিএনপি নেত্রী নাদিয়া পাঠান পাপন, আরিফা সুলতানা রুমা, উর্মি আক্তার, শাহীনুর সাগর প্রমুখ।