২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৭:৩০:৫৮ অপরাহ্ন
অদলবদলে ব্যাপক সাড়া, রিজার্ভে ৫৯ কোটি ডলার যোগ হলো ১২ দিনে
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-০২-২০২৪
অদলবদলে ব্যাপক সাড়া, রিজার্ভে ৫৯ কোটি ডলার যোগ হলো ১২ দিনে

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সঙ্গে টাকার ও ডলার অদলবদলের (সোয়াপ) মাধ্যমে ডলার সংগ্রহে বেশ সাড়া পড়েছে। ১৫ ফেব্রুয়ারি চালুর পর মাত্র ১২ দিনেই ১২টি ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সোয়াপ পদ্ধতিতে জমা করেছে ৫৮৭ মিলিয়ন (৫৮ কোটি ৭০ লাখ) ডলার, যা টাকার অঙ্কে প্রায় ৬ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা। এ লেনদেনে প্রতি ডলারের দর ধরা হয়েছে ১১০ টাকা। নতুন এ ব্যবস্থায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সর্বনিম্ন ৫ মিলিয়ন বা ৫০ লাখ ডলার লেনদেন করতে পারবে।


আর সর্বনিম্ন ৭ থেকে সর্বোচ্চ ৯০ দিনের জন্য টাকা-ডলার অদলবদল করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ডলার কেনায় রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ করা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 


বাণিজ্যিক ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, ডলার-সংকটে রিজার্ভে মারাত্মক ধরনের টান পড়েছে। ডলারের সরবরাহ বাড়াতে ব্যাংকগুলোকে কড়া নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। 


মো. মেজবাউল হক বলেন, ডলার-সংকট সামলাতে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিয়ম সহজ করতে সোয়াপ চালু করা হয়েছে। এতে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জোর-জবরদস্তি করছে না। ১৫ ফেব্রুয়ারি সোয়াপ চালুর পরই ১১টি ব্যাংক থেকে টাকার বদলে ৫৮৭ মিলিয়ন ডলার কেনা হয়েছে, যা রিজার্ভের জন্য ইতিবাচক বলা যায়। এ ছাড়া ব্যাংকগুলোর ডলার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সরাসরি নজরে থাকছে। 


জানা গেছে, ডলারের বেলায় সুদহার নির্ধারিত হবে সোফের (সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেট) ৯০ দিনের সুদহার অনুযায়ী। এ সুদহার প্রকাশ করে যুক্তরাজ্যের আর্থিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউকে ফাইন্যান্সিয়াল কন্ডাক্ট অথরিটির (এফসিএ) অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান সিএমই গ্রুপ। সিএমই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, সিএমইর তিন মাসের সুদহার ছিল ৫ দশমিক ৩২ শতাংশ। আর টাকার বেলায় সুদহার নির্ধারণ করা হবে ব্যাংক রেট অনুযায়ী। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে যে সুদহারে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেয়, তাকে বলে ব্যাংক রেট। শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকের জন্য মুনাফার হার ঠিক হবে শরিয়াহ অনুযায়ী। 


মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘প্রবাসী আয় আগের তুলনায় বেড়েছে। রপ্তানি আয় ভালো। এমন পরিস্থিতিতে টাকা-ডলার অদলবদল বা সোয়াপ পদ্ধতিতে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে। 


বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে উদ্বৃত্ত ডলার থাকলে এখন তা বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিয়ে তারা সমপরিমাণ টাকা ধার নিতে পারবে। এতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংক উভয় পক্ষই লাভবান হবে। কারণ উদ্বৃত্ত ডলারের বিপরীতে ব্যাংকগুলো তাৎক্ষণিকভাবে টাকা পেয়ে যাবে। আবার নির্ধারিত সময় পর টাকা ফেরত দিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সমপরিমাণ ডলার নিতে পারবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ১৫ ফেব্রুয়ারি একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। 


বর্তমানে ব্যাংকগুলো প্রায় ৩.৯৭ বিলিয়ন ডলার ধারণ করছে। আর বিদেশে পড়ে রয়েছে আরও ৬ বিলিয়ন ডলার। সেগুলোও আনার জন্য চাপ রয়েছে ব্যাংকের ওপর। তবে কোনো কোনো ব্যাংক দর কম হওয়ায় ডলার দিতে কিছুটা নিমরাজি বলে অভিযোগ রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘোষিত ১১০ টাকায় প্রতি ডলার অদলবদল করলে, তাদের লোকসান হয় বলেও কথা শোনা যাচ্ছে। তাই তাদের অনেকে সোয়াপে আগ্রহ দেখাচ্ছে না বলে জানা যায়। 


শেয়ার করুন