দেশের নাগরিকদের পেনশনব্যবস্থার আওতায় আনতে সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি (স্কিম) চালু করেছে সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় সরকারের সার্বজনীন পেনশন স্কিম গ্রহনে রাজশাহীর পবা উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ও উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের সহযোগিতায় বিভিন্ন শ্রেণীপেশার সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
প্রতিদিন অনেকেই এসে এ সম্পর্কে তথ্য জানতে চাওয়ার পাশাপাশি খোঁজ খবর নিয়ে সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি (স্কিম) গ্রহন করছেন।
সাধারণ মানুষ লেনদেনে এখন অনেক সচেতন। সরকার ঘোষিত সার্বজনীন পেনশন স্কিম গ্রহনে মানুষের মাঝে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকুরিজীবী, শিক্ষক, ইমাম, সাংবাদিক, শ্রমিক, কৃষক, রিকশাচালক, দিনমজুর ও বিভিন্ন শ্রেণীপেশার সাধারণ মানুষ পেনশন স্কিম গ্রহণ করছে। খুব সহজে অনলাইনে কম্পিউটার ও বিকাশের দোকান, ব্যাংক, ডিজিটাল সেন্টার, উপজেলা আইসিটি অফিস, পোস্ট অফিস এর মাধ্যমে সহজেই হিসাব খোলা যায় এবং বিভিন্ন ব্যাংক, বিকাশ, নগদ সহ অনলাইনে টাকা পেমেন্ট করা যায়। কোন সমস্যায় পড়তে হয় না।
পবা উপজেলার হড়গ্রাম ইউনিয়নের ঝুজকাই (বাথানপাড়া) গ্রামের বাসিন্দা মোসা: শম্পা বেগম বলেন, আমি সমতা স্কিম গ্রহন করেছি। প্রতি মাসে পাঁচ’শ টাকা জমা করবো। জীবনের শেষ সময় কাজে লাগবে। আমার মনে হয়েছে এটি সরকারের একটি ভাল উদ্যোগ। যার যার অবস্থান থেকে ভবিষ্যতের জন্য সকলের এই স্কিম গ্রহন করা উচিত।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সালেহ্ মোহাম্মদ হাসনাত বলেন, সার্বজনীন পেনশন স্কিম একটি জাতীয় প্রকল্প। পেনশন স্কিম গ্রহনে উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের শ্রেণী পেশার মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ৪ টি স্কিমে অংশগ্রহণকারীদের অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন সেবা দিয়ে যাচ্ছে উপজেলা প্রশাসন। খুব সহজেই মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস, ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড ও ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা প্রদান করা যাবে। সাধারণ মানুষের মাঝে এটা নিয়ে ব্যাপক উৎসাহ দেখা গেছে। জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট www.upension.gov.bd চালু আছে। এখানে অনলাইনে হিসাব খোলা এবং দেখা যাবে। এসময় তিনি উপজেলার সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে সার্বজনীন পেনশন স্কিম গ্রহনের জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান।
সূত্র মতে, সার্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণকারী নাগরিকদের জন্য আজীবন পেনশন সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য সার্বজনীন পেনশন প্রকল্পের অধীনে ছয়টি পরিকল্পিত প্যাকেজের মধ্যে প্রগতি, সুরক্ষা, সমতা এবং প্রবাসী নামে চারটি প্যাকেজ প্রাথমিকভাবে চালু করা হয়েছে। স্কিমের আওতায়- প্রগতি প্যাকেজ বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য, সুরক্ষা স্ব-কর্মসংস্থান ব্যক্তিদের জন্য, নিন্ম-আয়ের লোকদের জন্য সমতা এবং প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য প্রবাসী প্যাকেজ গঠণ করা হয়েছে। আর বাকি দুটি প্যাকেজ পরে চালু করা হবে।
সূত্রে আরও জানা গেছে, ১৮ বছরের বেশি বয়সের যেকোনো নাগরিক ৬০ বছর বয়সে না পৌঁছানো পর্যন্ত স্কিম গ্রহণকৃত টাকা পরিশোধ করে অবসর জীবনের সময় পেনশন সুবিধা পেতে সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। স্কিম গ্রহণকৃত টাকা পরিশোধের পর তিনি মারা গেলে তার নমিনি বা উত্তরাধিকারী পেনশন পাবেন ১৫ বছর। এছাড়াও নমিনি চাইলে স্কিম গ্রহণকারীর মৃত্যু সনদ প্রদানপূর্বক তার জমাকৃত টাকা যাবতীয় সুবিধা ও লভ্যাংশসহ উত্তোলন করতে পারবে।