সারাদেশের ন্যায় রাজশাহীতেও নিরাপত্তার দায়িত্ব এখন আনসার সদস্যরাই ভরসা। স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুলিশ সদস্যরা কোনো দায়িত্ব পালন না করায় রাজশাহীর থানা, গুরুত্বপুর্ন স্থাপনার নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে আসনার সদস্য। তবে আইনশৃংখলার পুরোটাই দেখভাল করছেন সেনা সদস্যরা।
রাজশাহী মহানগরীতে রয়েছে ১২টি থানা ও জেলায় রয়েছে ৮টি। এসব থানায় পুলিশ সদস্যদের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও এখন আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। মূলত ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগষ্ট স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশ নির্বিচারে গুলি বর্ষণের পর ৫ আগষ্ট বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা থানা ও পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালায়। ওইদিন থেকেই রাজশাহী মহাগর ও থানা পুলিশেরন সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনার পর রাজশাহীর সকল থানার পুলিশ পুলিশ লাইন্সে অবস্থান নেন। এতে অরক্ষিত হয়ে পড়ে থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি। এরই প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনী এসব থানার নিরাপত্তার দায়িত্বে আনসার সদস্যদের নিয়োজিত করেন। শুধু থানায় নয়, নগরীর নিরাপত্তার দায়িত্বেও তারাই এখন ভরসা।
এদিকে ৫ আগষ্ট থেকে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত থানার সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। থানায় দায়িত্বরতরা না থাকায় লোকজন কোনো ধরনের জিডি বা অভিযোগ করতে পারছেন না। এতে কিছুটা হলেও ভোগান্তি বেড়েছে। এ অবস্থা দ্রুত নিরসন করা দরকার বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ। তবে আজ পুলিশ থানায় যোগদান করতে পারে।
নগরীর বোয়ালিয়া থানায় সাধারণ ডায়রি করতে আসা শিক্ষার্থী নাজমুল হক জানান, তার সার্কিফিকেট হারিয়ে গেছে। তিনি বোয়ালিয়া থানায় জিডি করতে এসেছিলেন। থানার কোনো কার্যক্রম না থাকায় তাকে ফিরে যেতে হয়। তিনি বলেন, নিরাপত্তার জন্য দ্রুত থানার কার্যক্রম সচল করা প্রয়োজন। পথচারি নগরীর হেতেমখা এলাকার মাইনুল ইসলাম জানান, দেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছে। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মানুষ যে উল্লাস করেছেন তা স্বাধীনতার সময় এমনটা ছিল কিনা জানি না।
শিক্ষার্থীরা বুঝিয়ে দিয়েছেন দেশে কোনো স্বৈরশাসকের স্থান নেই। তিনি বলেন, আমার রাস্তাঘাটে রাত দিন চলাচল করি। কিন্তু নিরাপত্তার জন্য পুলিশ থাকলেও তাদের কার্যক্রম নেই। এতে রাতে চলতে ফিরতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। কারণ এই সুযোগে কিছু দু:স্ক্রৃতিকারীরা সুযোগ নিবে। এই সুযোগ দেয়া উচিৎ হবে না। তিনি বলেন সারা দেশেসহ রাজশাহীতেও দ্রুত পুলিশী কার্যক্রম শুরু করা দরকার।
অটোরিক্স চালক ময়েজ উদ্দিন বলেন, রাতে অটোরিকশা চালাতে ভয় লাগে। কারণ রাস্তায় পুলিশ থাকে না। তিনি বলেন, স্বৈরাচার সরকার পতনে পুলিশ শিক্ষার্থীদের উপর যে নির্যাতন চালিয়ে তা বলার ভাষা নেই। তারপরও দেশে পুলিশ দরকার আছে। তিনি বলেন, পুলিশের পোশাকের পরিবর্তন এনে দ্রুত আইনশৃংখলার কাজে তাদের লাগিয়ে দেয়া দরকার।