বিধি ভেঙে পুকুর খননের হিড়িক পড়েছে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায়। এতে এক দিকে যেমন ফসলি জমি কমছে, তেমনি পানি নিষ্কাষন পথ বন্ধ হয়ে পড়ায় জলাবদ্ধতায় ঘটছে ফসলহানি। প্রভাবশালীদের এই কার্ম কান্ডে সর্বশান্ত হচ্ছেন এলাকার প্রান্তিক কৃষকরা, তবে এসব কৃষক এখন স্বস্তিতে। অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে চিরুনি অভিযান চালাচ্ছেন রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) স্বীকৃতি প্রামানিক ও সহকারী কমিশনার ভূমি মো: সুমন চৌধুরী। যেখানেই পুকুর খননের খবর পাচ্ছেন তাৎক্ষনিক পৌঁছে যাচ্ছেন সেখানেই। পুকুর খননকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
তাদের এই কাজে খুশি প্রান্তিক কৃষকরা। আর তাই সব সময় কৃতজ্ঞতায় ভাসিয়ে দিচ্ছেন উপজেলা প্রশাসনকে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুর্গাপুর উপজেলায় ৭ টি ইউনিয়নের মধ্যে অবৈধ পুকুর খননের বেশি হিড়িক ছিল ৪নং, দেলুয়াবাড়ি ইউনিয়নে ও ২নং, কিশমত গনকৈড় ইউনিয়নে ৩নং, পানানগর ইউনিয়নে। গত কয়েক দিনের মধ্যে ২০ টি অবৈধ পুকুর খননের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ও ২নং, কিশমত গনকৈড় ইউনিয়নের কয়ামজামপুর ও ৪নং, দেলুয়াবাড়ি ইউনিয়নের তরিকতপুর বিলে অবৈধ পুকুর খননকারীর বিরুদ্ধে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করা ও কৃষি সুরক্ষা আইনে নিয়মিত মামলা দায়ের করেন উপজেলা প্রশাসন। এছাড়া রাতুগ্রাম, নান্দিগ্রাম,
গোপালপাড়ায়, উজালখলসী, ৩নং, পানানগর ইউনিয়নের তেবিলা, রঘুনাথপুর, ভবানীপুর, নারায়ণপুর, গোনাজীপাড়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অবৈধ পুকুর খননে ব্যবহৃত ভেকু মেশিনের ব্যাটারি জব্দ করেছে এবং জরিমানা করা হয় বলে জানা যায়। এছাড়া ৪নং, দেলুয়াবাড়ি ইউনিয়নের আংরার বিল সহ বিভিন্ন জায়গায় তারা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অবৈধ পুকুর খনন কারিদের জেল ও জরিমানা সহ অবৈধ ভেকু মেশিন পুকুর থেকে উঠিয়ে দেন দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) স্বীকৃতি প্রামানিক ও সহকারী কমিশনার ভূমি মো: সুমন চৌধুরী বলে জানান স্থানীয় কৃষকেরা। এছাড়া আরও জানা যায়, ৭নং, জয়নগর ইউনিয়েনেও ঠিক একি রকম ভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দুইজন কে জেল দেন এবং অবৈধ ভেকু মেশিন পুকুর থেকে উঠিয়ে দেন। প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন উপজেলা প্রশাসন। উপজেলার ২নং, কিশমত গনকৈড় ইউনিয়নের আব্দুল হাকিম নামের এক কৃষক জানান, আমরা গত কয়েক দিন আগে ফসলি জমিতে অবৈধভাবে পুকুর খননের তথ্য (ইউএনও) স্যার কে জানালে তিনি সঙ্গে সঙ্গে এসে অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পুকুর খননে ব্যবহৃত অবৈধ ভেকু মেশিন পুকুর থেকে উঠিয়ে দেন এবং জরিমানা করেন। কৃষকগণ ইউএনও মহোদয়ের এ অগ্রণী ভূমিকা পালন করাতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) স্বীকৃতি প্রামাণিক বলেন, সরকারি আদেশ অমান্য করে যারা অবৈধ ভাবে পুকুর খনন করে তাদের আমরা বিভিন্ন ভাবে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জেল জরিমানা পুকুর খননের ব্যবহৃত ভেকু মেশিনের ব্যাটারি জব্দ করে পুকুর থেকে ভেকু মেশিন উঠিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে থাকি অবৈধ পুকুর খননের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যহত থাকবে বলে তিনি জানান। এ বিষয়ে রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, ফসলি জমি নষ্ট করে অবৈধ ভাবে পুকুর খনন বন্ধের জন্য প্রতিটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহকারী কমিশনার ভূমি দের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। অনুমতি ছাড়া অবৈধভাবে পুকুর খনন করা হলেই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোন ভাবেই কৃষি জমি নষ্ট করে পুকুর খনন করা যাবে না।