সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও খাগড়াছড়ি জেলা ভারি বর্ষণ ও ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।
ভারত কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই বাঁধ খুলে দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্র্বতী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
অফাবৎঃরংবসবহঃ
বন্যাদুর্গতদের সহায়তায় পাঁচ দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় মতিঝিলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তিনি এ দাবি করেন।
এ অবস্থায় বন্যাদুর্গতদের সহায়তায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে নেমে পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন নাহিদ বলেন, জাতির ক্রান্তিলগ্নে আপনারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে নেমে পড়ুন। সব বাহিনী উদ্ধার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করুন। আপনাদের যেন আর নির্দেশনা দেওয়া না লাগে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক ও সব শ্রেণির মানুষকে তিনি এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় বন্যাদুর্গত এলাকায় দ্রুত সরকারি-বেসরকারি স্পিড বোট পাঠানোসহ পাঁচ দফা দাবির বাস্তবায়ন না হলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কার্যালয় থেকে যাবেন না বলে জানান তথ্য উপদেষ্টা।
এদিকে দুর্গত এলাকাগুলোতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা না করার অভিযোগে পাঁচ দফা দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভোর ৪টায় মতিঝিলে বিআইডব্লিউটিএ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করেন। এক ঘণ্টা অবস্থানের পর শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে চেয়ারম্যান একজন প্রতিনিধি পাঠান। এ সময় তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এসে নৌ-পরিবহণ কন্ট্রোল অফিসের কার্যক্রম বন্ধ পেয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন এবং জবাবদিহি নিশ্চিতের কথা জানান। পরে শিক্ষার্থীরা সাড়ে ৬টার দিকে অবস্থান ছেড়ে দেন।
কর্তৃপক্ষকে উদ্দেশে নাহিদ ইসলাম বলেন, অনতিবিলম্বে সরকারি-বেসরকারি সকল বোট দুর্গত এলাকায় নিয়োজিত করতে হবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আহ্বান করে বলুন প্রধান উপদেষ্টা থেকে নির্দেশ আছে। এক ঘণ্টার মধ্যে কন্ট্রোল রুম চালু করুন। জাতীয় সংকটের সময় দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
নাহিদ বলেন, আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই বাঁধ খুলে দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। বাংলাদেশের বিপক্ষে যদি কোনো রাষ্ট্র দাঁড়ায় তাহলে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা রুখে দেবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কার্যালয় থেকে যাবেন না বলেও শিক্ষার্থীদের নিশ্চয়তা দেন তিনি।
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রিফাত আহমেদ। দাবিসমূহ:
১. সরকারি-বেসরকারি যত স্পিড বোট আছে এই মুহূর্তে বন্যা কবলিত স্থানে পাঠাতে হবে।
২. ছোট ছোট লঞ্চ বিভিন্ন পোর্টে যেগুলো আছে খুব দ্রুতই বন্যাকবলিত এলাকায় পাঠাতে হবে।
৩.বন্যায় উদ্ধার কাজে নিয়োজিত সব যানবাহনকে কর্তৃপক্ষ থেকে জরুরিভাবে জ্বালানি সরবরাহ করতে হবে।
৪. সব বেসরকারি ট্রলার ও স্পিড বোটকে এই ক্রান্তিলগ্নে ফ্রি করে দিতে হবে।
৫. যতদিন এই দূর্যোগ অবস্থা বিরাজমান থাকবে ততদিন ২৪ ঘণ্টাই কন্ট্রোল রুম থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং প্রতিটি এলাকায় প্রতিনিধি পাঠাতে হবে।