ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আগে থেকে জানা ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।তিনি জানান, ৫ আগস্ট পরিস্থিতি দেখে তিনি যখন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন, ঠিক তখন তাকে জানানো হয় শেখ হাসিনা চলে যাচ্ছেন।
সম্প্রতি একটি ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। সেনাপ্রধান বলেন, শেখ হাসিনা দেশে থাকলে তার জীবনের ঝুঁকি ছিল। পরিস্থিতি খুবই উত্তপ্ত ছিল।
শেখ হাসিনাকে সেফ এক্সিট দেয়া ঠিক ছিল নাকি তাকে দেশে রেখে বিচার করা উচিত ছিল-এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওই সময়ে একটি উত্তপ্ত মুহূর্তে তাকে ওখানে রেখে দিলে সমস্যা হতো। আর প্রথম কথা হচ্ছে, আমিতো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছিলাম। তখন আমাকে কিছু ব্যক্তি বলেছে যে, উনিতো চলে যাচ্ছেন। উনি অলরেডি রান। এটা আমি জানতাম না যে, তিনি দেশ ছেড়ে যাচ্ছেন। তারপরও আমি মনে করি যে, উনি দেশে থাকলে উনার জীবন ঝুঁকি হতে পারত। কেউ চাইবে না যে একজনের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হোক। এটা মোটেই কাম্য নয়।
অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে সেনাবাহিনী সহযোগিতা করছে বলেও জানান সেনাপ্রধান।
১৬ বছরের জঞ্জাল ১৬ দিনে তো মিটবে সেনাবাহিনীর মধ্যে এখনো অনেকে স্বপদে রয়েছেন তাদের সরানো হচ্ছে না কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনো তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনেক ইস্যু আছে। যেগুলো তদন্ত হচ্ছে। এজন্য আমরা সময় নিচ্ছি, প্রমাণ লাগবে, প্রমাণিত না হলে কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। সেনাবাহিনী এখনো কেন ব্যারাকে ফিরে যাচ্ছে না, তাদের এখন মাঠে থাকা উচিত কিনা এ প্রশ্নের জবাবে জেনারেল ওয়াকার বলেন, আমরা তো যেতে চাই। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যেতে চাই। তবে সম্ভবত আমাদের আরও কিছুকাল থাকতে হবে। কারণ পুলিশ এখনো তাদের দায়িত্ব নেয়ার মতো অবস্থায় নেই। পুলিশ প্রায় অকার্যকর হয়ে গিয়েছিল। এখনো দায়িত্ব নেওয়ার মতো হয়নি। তারা দায়িত্ব নেয়ার মতো হলে অবশ্যই আমরা ফেরত চলে যাব।
তিনি বলেন, আমি আশাবাদী সবাই একসঙ্গে যদি কাজ করি তাহলে দেশ সংস্কার করা সম্ভব হবে। এবং আমরা একটি সুন্দর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যেতে পারবো। আমি এ সরকারকে সাহায্য করছি। এখান থেকে ফেরত যাওয়ার কোনো অবকাশ নেই। জনগণকে ধৈর্য ধরতে হবে।