২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রবিবার, ০৩:২৩:৪৮ পূর্বাহ্ন
সামাজিক-অর্থনৈতিক জাগরণ ও রাজনৈতিক মুক্তি ছাড়া শান্তি-নিরাপত্তা অসম্ভব : ড. মুহাম্মদ ইউনূস
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-০৯-২০২৪
সামাজিক-অর্থনৈতিক জাগরণ ও রাজনৈতিক মুক্তি ছাড়া শান্তি-নিরাপত্তা অসম্ভব : ড. মুহাম্মদ ইউনূস

রাজনৈতিক মুক্তি এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক জাগরণ ব্যতীত শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে সাফল্য অর্জন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড . মুহম্মদ ইউনূস। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে আজ শুক্রবার ( ২৭ সেপ্টেম্বর ) বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় বাংলায় ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি তার বক্তব্যে এ মন মন্তব্য করেন ।


ড . মুহাম্মদ ইউনূস বলেন , ‘ জুলাই - আগস্টে বাংলাদেশে যে যুগান্তকারী পরিবর্তন সংঘটিত হয়েছে , তার প্রেক্ষিতেই আজ আমি বিশ্ব সম্প্রদায়ের এ মহান সংসদে উপস্থিত হতে পেরেছি। আমাদের গণ-মানুষের , বিশেষ করে তরুণ সমাজের , অফুরান শক্তি আমাদের বিদ্যমান রাষ্ট্র কাঠামো ও প্রতিষ্ঠানগুলোর আমূল রূপান্তরের এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে ।



আমাদের ছাত্র ও যুব সমাজের আন্দোলন প্রথমদিকে মূলত ছিল বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন। পর্যায়ক্রমে তা গণআন্দোলনে রূপ নেয়। এরপর সারা-পৃথিবী অবাক বিস্ময়ে দেখেছে কীভাবে সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ একনায়কতন্ত্র , নিপীড়ন , বৈষম্য , অবিচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাজপথ এবং সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমে দৃঢ়ভাবে রুখে দাঁড়িয়েছিল ।


আমাদের ছাত্রজনতা তাদের অদম্য সংকল্প ও প্রত্যয়ের মাধ্যমে একটি স্বৈরাচারী ও অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা থেকে আমাদের মুক্তি এনে দিয়েছে। তাদের এই সম্মিলিত সংকল্পের মধ্যেই আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ নিহিত , যা এ দেশটিকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের মাঝে একটি দায়িত্বশীল জাতির মর্যাদায় উন্নীত করবে বলে আমি বিশ্বাস করি ।



এই গণআন্দোলন রাজনৈতিক অধিকার ও উন্নয়নের সুবিধা বঞ্চিত বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। বাংলাদেশের মানুষ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশীদারিত্ব চেয়েছিল। আমাদের জনগণ একটি ন্যায্য , অন্তর্ভুক্তিমূলক ও কার্যকর গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে , যার জন্য আমাদের নতুন প্রজন্ম জীবন উৎসর্গ করেছিল। আমাদের এই তরুণরা যে প্রজ্ঞা , সাহস ও প্রত্যয় দেখিয়েছে তা আমাদের অভিভূত করেছে ।


বন্দুকের গুলি উপেক্ষা করেও বুক পেতে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল আমাদের এই তরুণরা। অবৈধ রাষ্ট্রক্ষমতার বিরুদ্ধে প্রবলভাবে সোচ্চার হয়েছিল আমাদের তরুণীরা। স্কুল পড়ুয়া কিশোর - কিশোরীরা নিঃশঙ্কচিত্তে উৎসর্গ করেছিল তাদের জীবন। শত শত মানুষ চিরতরে হারিয়েছে তাঁদের দৃষ্টিশক্তি। আমাদের মায়েরা , দিনমজুরেরা ও শহরের অগণিত মানুষ তাদের সন্তানদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নেমেছিল রাজপথে ।


শেয়ার করুন