২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০৩:৫৬:৩৭ অপরাহ্ন
পানিবন্দি ৫৩৬২ পরিবার, সিরাজগঞ্জে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-০৭-২০২৪
পানিবন্দি ৫৩৬২ পরিবার, সিরাজগঞ্জে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত

গতি কিছুটা কমলেও সিরাজগঞ্জের সব পয়েন্টে বেড়েই চলেছে যমুনা নদীর পানি। ফলে প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।


তলিয়ে গেছে বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ তাঁত কারখানা, রাস্তাঘাট, হাট-বাজার। পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে সাড়ে ৪ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমির ফসল। ইতোমধ্যে জেলার ৫টি উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নের ৫ হাজার ৩৬২টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন বানভাসি মানুষগুলো।


শনিবার (৬ জুলাই) জেলার সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব মোহনপুর, কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের ছাতিয়ানতলী এলাকায় সরেজমিনে গেলে বানভাসিদের দুর্ভোগের চিত্র উঠে আসে। চার-পাঁচদিন ধরে এখানকার অনেকেই পানিবন্দি হয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। বানের পানি উঠে তাঁত কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্মহীন হয়ে ঘরে বসে রয়েছেন অনেক শ্রমিক।


পূর্ব মোহনপুর গ্রামের কৃষক নুরন্নবী, শাহ আলম, তাজেলসহ অনেকে বলেন, যমুনায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের এ অঞ্চলে বানের পানি ঢুকে পড়েছে। রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তলিয়ে গেছে। অনেকেই বাড়ি ছেড়ে আশপাশের গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকেই বাড়ির মধ্যে হাঁটু পানিতেই বসবাস করছেন। ছাতিয়ানতলী বাজারও ডুবে গেছে। ফলে এখানকার মানুষের হাট-বাজার করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তাঁতশ্রমিক ফারুক বলেন, চারদিন ধরে তাঁতের কাজ নেই। ঘরে বসে ঋণ করে সংসার চালাতে হচ্ছে। একই কথা বলেন ফরিদুলও।


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার কাজিপুর, সদর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নের চরাঞ্চলের গ্রামগুলো প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন মানুষ।


এদিকে শনিবার দুপুর ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৪৯ মিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে কাজিপুর মেঘাই পয়েন্টে রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ দশমিক ৩৯ মিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।


পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বন্যা পূর্ভাবাস সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বরাত দিয়ে বলেন, কয়েকদিন ধরেই যমুনার পানি দ্রুতগতিতে বেড়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা যমুনার পানি স্থিতিশীল থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।


জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবুল কুমার সূত্রধর বলেন, ইতোমধ্যে বানের পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে জেলার ৪ হাজার ৬৩০ হেক্টর ফসলি জমি। এসব জমির পাট, তিল, কলা ও মরিচ প্লাবিত হয়েছে। এখনও ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা যায়নি।


জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, জেলার ৫টি উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নের ৫ হাজার ৩৬২টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ২৩ হাজার ৮৩৬ জন। এসব মানুষের জন্য ৬০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আরও মজুদ রয়েছে ৪৪৪ মেট্রিক টন চাল, ১০ লাখ টাকা ও ৫০৫ প্যাকেট শুকনো খাবার।


শেয়ার করুন