২৫ অক্টোবর ২০২৪, শুক্রবার, ০৮:২৬:১৮ অপরাহ্ন
রাষ্ট্রপতি অপসারণে জটিলতা কোথায়, ভিন্ন ভিন্ন মত বিশেষজ্ঞদের
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-১০-২০২৪
রাষ্ট্রপতি অপসারণে জটিলতা কোথায়, ভিন্ন ভিন্ন মত বিশেষজ্ঞদের

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদচ্যুতির দাবিতে আন্দোলন শুরুর পর চলছে নানা আলোচনা, বিশ্লেষণ। এ মুহূর্তে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ কিংবা অপসারণের ক্ষেত্রে কিছু সাংবিধানিক জটিলতা সামনে এসেছে। আচমকা রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের বিরোধিতা করে দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি বলছে এতে সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হবে।


রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ বা অপসারণের দাবি তুলে আন্দোলন শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন ছাত্ররা।


ওইদিনই উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে রাষ্ট্রপতির পদচ্যুতির বিষয়টি উঠেছে এবং রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে এর সমাধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।


বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করবেন স্পিকারের নিকট। আর তাকে অপসারণ করতে পারে নির্বাচিত সংসদ। এখন সংসদ বিলুপ্ত আবার স্পিকারও পদত্যাগ করেছেন। এ অবস্থায় রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দেশে রাজনৈতিক সংকট এবং সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি করবে এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা ভিন্ন ভিন্ন মত দিয়েছেন। 


রাষ্ট্রপতি পদটি বাংলাদেশে সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদ। গণঅভ্যুত্থান এবং পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনের পর অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রপতির থাকা না থাকার বিষয়টিকে রাজনৈতিক বিষয় হিসেবে দেখছে।


সরকারের পক্ষ থেকে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতির থাকবে কি থাকবে না এটি আইনি কিংবা সাংবিধানিক বিষয় নয় এটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। রাজনৈতিক সমঝোতা ও জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে এর সমাধান হতে পারে। রাষ্ট্রপতির ব্যাপারে সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে সরকার সবচে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে ‘রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা এবং শৃঙ্খলা।’


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান (কার্জন) বলেন, রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ বা পদত্যাগের কোনো সাংবিধানিক পথ খোলা নেই।


‘সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে, স্পিকার পদত্যাগ করেছেন। এদিকে সংবিধানও স্থগিত করা হয়নি। সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ বা অপসারণের সুযোগ না থাকায়, রাষ্ট্রপতিকে এখন অপসারণ করা হলে, সেটি সংবিধানের বাইরে গিয়ে করতে হবে, যেটি একটি খারাপ নজির হয়ে থাকবে।’


রাষ্ট্রপতির অপসারণ বা পদত্যাগ করলে কিছু জটিলতার দিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, ৫ অগাস্টের পরে এই রাষ্ট্রপতি এই অন্তবর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের শপথ করান এবং তিনি সংসদ ভেঙে দেন। যদি ৫ অগাস্টের পরে আগের সরকারের সংসদ, রাষ্ট্রপতি, স্পিকার সকলকে বাদ দিয়ে ডকট্রিন অব নেসেসিটির বরাত দিয়ে গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা নিয়ে সরকার গঠিত হতো, তাহলে আজ এ প্রশ্ন উঠত না।’

শেয়ার করুন