২৮ অক্টোবর ২০২৪, সোমবার, ১২:২৯:১০ অপরাহ্ন
গণতন্ত্রের প্রতি আস্থায় অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে না মার্কিন কংগ্রেস!
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-১০-২০২৪
গণতন্ত্রের প্রতি আস্থায় অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে না মার্কিন কংগ্রেস!

যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন মার্কিনিরা।  বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গণতন্ত্র পুনর্গঠনে সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্র একাধিকবার মডেল হিসেবে কাজ করেছে। 


মার্কিন নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া প্রার্থী কিন্তু বিজয়ী নাও হতে পারেন৷ মার্কিন গণতন্ত্রের আলাদা কিছু দিক রয়েছে, আর সেগুলো নিয়ে আছে নানা প্রশ্ন৷


একটি বৈশিষ্ট্য হল, সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েও প্রার্থী বিজয়ী হতে নাও পারেন। বর্তমান নির্বাচনি প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক এবং প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।  কংগ্রেসের উচ্চ কক্ষ সিনেট নিখুঁত গণতন্ত্রকে প্রতিফলিত করে না।  সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা কমে গেলেও তা অবাক হওয়ার মতো কিছু নয়। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটি দেশে এমনটা হয়তো কেউই আশা করেন না।


‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ পদ্ধতির মাধ্যমে এ নির্বাচন পরিচালিত হয়। অনেকের কাছে বিস্ময়ের সৃষ্টি করে। ভোটাররা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীর জন্য ভোট দেন। কিন্তু চূড়ান্ত ফলাফল নির্ধারণ হয় রাজ্য ভিত্তিক ইলেক্টোরদের মাধ্যমে। ফলে, একটি রাজ্যে একটি প্রার্থী যদি সব ভোট পায়, সেই রাজ্যটির সমস্ত ইলেক্টোরাল ভোট সেই প্রার্থীকে চলে যায়।


৫ নভেম্বরের নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে।  বিশ্বজুড়ে নজর থাকবে এ নির্বাচনের দিকে, কারণ এটি শুধু যুক্তরাষ্ট্রের নয়, বৈশ্বিক গণতন্ত্রের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।


জন এফ কেনেডি থেকে বারাক ওবামা পর্যন্ত সব রাজনীতিবিদেরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে একটি প্রদীপ্ত বাতিঘর হিসাবে তুলে ধরেছেন, সবার নজর কেড়েছেন। ১৯৬১ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে কেনেডি বলেছিলেন, বিশ্ব এখনও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং এর গণতন্ত্রের দিকে তাকিয়ে আছে এবং ‘প্রতিটি শাখায়, প্রতিটি স্তরে, জাতীয়, রাজ্য এবং স্থানীয় পর্যায়ে আমাদের সরকারগুলোকে হতে হবে বাতিঘর বা সিটি আপঅন আ হিল।’


২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি সারা বিশ্বের চোখ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের দিকে। সেদিন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের উসকানিতে ডানপন্থি চরমপন্থিরা ইউএস ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালায়। ২০২০ সালের নির্বাচনের পরে গণতান্ত্রিক ক্ষমতা হস্তান্তরকে বাধা দেওয়াই ছিল তাদের উদ্দেশ্য।


গত বছর শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় সংবাদ সংস্থা এপির একটি জনমত জরিপে দেখা গেছে, মাত্র ১০ শতাংশ মানুষ মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্র খুব ভালোভাবে চলছে৷


তাহলে, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে দেশটির গণতন্ত্রের অবস্থা কী?


গণতন্ত্রের প্রতি আস্থায় অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে না মার্কিন কংগ্রেস


ম্যাককোর্টনি ইনস্টিটিউট ফর ডেমোক্রেসির ডিরেক্টর এবং পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক মাইকেল বার্কম্যান বলেন, ‘আমার মনে হয়, এটা বলতেই পারি, অ্যামেরিকানদের এখন সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতি খুব বেশি আস্থা নেই।’


তিনি আরও বলেন, ‘তারা এমন একটি কংগ্রেসের দিকে তাকিয়ে আছেন, যা মোটেও ঠিক মতো কাজ করছে না এবং তারা এমন কিছু জটিল সমস্যা দেখছেন, যা সরকার আসলেই সমাধান করেনি৷ যেমন: আগ্নেয়াস্ত্রকেন্দ্রিক সহিংসতা ও জলবায়ু পরিবর্তন।’


নেতা নির্বাচনে নিজেদের অক্ষমতার কারণে, প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ রিপাবলিকান ২০২৩ সালের অক্টোবরে কয়েক সপ্তাহের জন্য কংগ্রেসকে পঙ্গু করে দিয়েছিল। কিন্তু এমন বাধা ছাড়াই কংগ্রেসের হাউস বা সিনেট থেকে আইন প্রণয়নের মতো জরুরি বিষয়গুলোও চলছে ধীরগতিতে।


যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের গভর্ন্যান্স স্টাডিজের সিনিয়র ফেলো ভ্যানেসা উইলিয়ামসন বলেন, ‘সিংহভাগ জনসমর্থন পেয়েও আইন পাস করা খুব কঠিন, কখনো কখনো অসম্ভব।’


শেয়ার করুন