২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৫:৪৩:৪৮ অপরাহ্ন
গ্রামীণ ব্যাংকের বহিস্কৃত তিন কর্মকর্তার নামে রাজশাহীতে দুদকের মামলা
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-১১-২০২৪
গ্রামীণ ব্যাংকের বহিস্কৃত তিন কর্মকর্তার নামে রাজশাহীতে দুদকের মামলা

গ্রামীণ ব্যাংকের বহিস্কৃত তিন কর্মকর্তার নামে রাজশাহীতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দুটি মামলা দায়ের করেছে। বুধবার দুদকের রাজশাহী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাট দুটি করা হয়। মামলায় তিন আসামি রাজশাহীর চারঘাটে গ্রামীণ ব্যাংক শাখায় কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তারা বহিস্কৃত। আসামিরা হলেন, চারঘাটের নিমপাড়া শাখার সিনিয়র ব্যবস্থাপক ও পাবনা জেলার আটঘোরিয়া উপজেলারর অষ্টমণিষা গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে মেহেরাব হোসেন রিপন (৩৫) এবং একই কেন্দ্রের আরেক সিনিয়র ব্যবস্থাপক ও রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার নামোদরখালি গ্রামের রিয়াজউদ্দিনের ছেলে জুলহাস (৪০) ও একই শাখার শাখা ব্যবস্থাপক এবং পাবনা জেলার ফরিদপুর উপজেলার বিলবকির গ্রামের তাইজুল ইসলামের ছেলে এম মাসুদ রানা (৪৬)।


দুদক সূত্র মতে, গত ২০১১ সালের ১৭ আগস্ট গ্রামীণ ব্যাংকে চাকুরীতে যোগদান করেন মেহেরাব হোসেন রিপন। তিনি গত ৩০/১০/২০১৬ হতে ১৪/১০/২০১৯ পর্যন্ত নিমপাড়া, চারঘাট শাখায় সিনিয়র কেন্দ্র ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এসময়ে তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ ও প্রতারণার মাধ্যমে ৭ জন সদস্যের পাশ বইয়ে এন্ট্রি দিয়ে সহজ/বিঃবিঃ/পশু ঋণের এককালীন ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬৮৭/- টাকা, ১ জন সদস্যের পাশ বইয়ে এন্ট্রি দিয়ে সবুজ জিপিএস হিসাবের মাসিক কিস্তি বাবদ ১২ হাজার ১৬০/-টাকা, ৩ জন সদস্যের পাশ বইয়ে এন্ট্রি দিয়ে ব্যক্তিগত সঞ্চয়ের ৭১ হাজার টাকা আদায় করে কোনো টাকা ব্যাংকে জমা না করে আত্মসাতসহ অপর ১ জন সদস্যের পাশ বইয়ে এন্ট্রি দিয়ে সহজ/বিশেষ বিনিয়োগ ঋণের কিস্তির ৭৫০ টাকা কম জমা দিয়ে সর্বমোট ৪টি খাতে ১২ জন সদস্যের ২ লাখ১৮ হাজার ৫৯৭ টাকা আত্মসাৎ করার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। যা দন্ডবিধি ৪০৯/৪২০ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন-এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।এ ঘটনায় দুদকের রাজশাহী জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসেন বাদী হয়ে আজ বুধবাার মামলা দায়ের করেছেন।


এদিকে, আসামি মোঃ জুলহাস (৪০) গত ০৩/০১/২০১০ সালে গ্রামীণ ব্যাংকে চাকুরীতে যোগদান করেন। তিনি গত ০৬/১১/২০১৬ তারিখ হতে ১৭/০৯/২০১৯ পর্যন্ত নিমপাড়া, চারঘাট শাখায় সিনিয়র কেন্দ্র ব্যবস্থাপক (উচ্চতরমান) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এসময় তার বিরুদ্ধে নিজে লাভবান হওয়ার অসৎ অভিপ্রায়ে তিনি এককভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার, অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ ও প্রতারনার মাধ্যমে ২৫ জন সদস্যের পাশ বইয়ে এন্ট্রি দিয়ে সহজ/বিঃবিঃ/পশু ঋণের এককালীন ১০ লাখ ২৭ হাজার ৫৪৩ টাকা, ১৩ জন সদস্যের পাশ বইয়ে এন্ট্রি দিয়ে সবুজ জিপিএস হিসাবের মাসিক কিস্তি বাবদ ৪৩ হাজার ৮৮৬ টাকা, ৫ জন সদস্যের পাশ বইয়ে এন্ট্রি দিয়ে ব্যক্তিগত সঞ্চয়ের ৯০ হাজার ৪০০ টাকা আদায় করে ব্যাংকে জমা না করে আত্মসাত করেন। এছাড়াও অপর ১ জন সদস্যের পাশ বইয়ে এন্ট্রি দিয়ে সহজ/বিশেষ বিনিয়োগ ঋণের কিস্তির ৬ হাজার ৪৬৮ টাকা কম জমা দিয়ে সর্বমোট ৪টি খাতে ৪৪ জন সদস্যের ১১ লাখ ৬৮ হাজার ২৯৭ টাকা আত্মসাৎ করার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়।


অপরদিকে আসামি কে এম মাসুদ রানা (৪৬), ৩১/০৭/২০০৫ তারিখে গ্রামীণ ব্যাংকে চাকুরীতে যোগদান করেন। তিনি বিগত ০৭/০৮/২০১৬ তারিখ হতে ০৫/০৯/২০১৯ পর্যন্ত প্রিন্সিপাল অফিসার (শাখা ব্যবস্থাপক) গ্রামীণ ব্যাংক, নিমপাড়া চারঘাট শাখা, রাজশাহীতে কর্মরত ছিলেন। আসামি মোঃ জুলহাস তার সহায়তায় পরষ্পর যোগসাজসে ক্ষমতার অপব্যবহার, অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতারনা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ৩ জন সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে সহজ/পশু ঋণ/বিঃবি প্রস্তাব তৈরিপূর্বক এরিয়া অফিস হতে অনুমোদন করিয়ে ঋণ বিতরণ দেখিয়ে সদস্যদের কোনো টাকা প্রদান না করে ৮২ হাজার ২৬৪ টাকা আত্মসাৎ করার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়।আসামি মোঃ জুলহাস নিজে এককভাবে ১১ লাখা ৬৮ হাজার ২৯৭ টাকা এবং অপর আসামি কে এম মাসুদ রানার সহায়তায় পরষ্পর যোগসাজসে ৮২ হাজার ২৬৪ টাকাসহ সর্বমোট ১২ লাখ ৫০ হাজার ৫৬১ টাকা আত্মসাতের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়, যা দন্ডবিধি ৪০৯/৪২০/৪৬৭/১০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন-এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এ অবস্থা তাদের দুজনের বিরুদ্ধে রাজশাহী জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসেন বাদী হয়ে আজ বুধবাার পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন।


শেয়ার করুন