ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের স্বনামধন্য খ্যাতনামা আইনজীবী মো. মাহাবুবুর রহমান ঐতিহ্যবাহী লিংকন্স ইন থেকে ‘বার অ্যাট ল’ ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
এর আগেই বার স্ট্যান্ডার্ডস বোর্ড তাকে প্র্যাকটিসিং ব্যারিস্টার হিসেবে অনুমোদন দেয়। তিনি দীর্ঘদিন সলিসিটর অ্যাডভোকেট হিসেবে ইউকের সব উচ্চপর্যায়ের আদালতে কৃতিত্বের সঙ্গে লিগ্যাল প্র্যাকটিস করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তিনি নিউ ওয়াক চেম্বার নামে একটি ব্যারিস্টার চেম্বারে টেনান্সি পেয়েছেন।
ব্যারিস্টার মাহাবুবুর রহমান তার মেধা এবং অধ্যবসায়ের মাধ্যমে ইউকের আইনাঙ্গনে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন, যা শুধু তার জন্য নয় বরং আইন অঙ্গনে তার সহকর্মী, বাংলাদেশি কমিউনিটি ও আইনের শিক্ষার্থীদের জন্যও একটি বড় অনুপ্রেরণা। তার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিশ্বব্যাপী ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে, এই প্রত্যাশা করেছেন তার সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাজ্যে চারটি ইনস অব কোর্ট থেকে কল-টু-দ্য বার ডিগ্রি প্রদান করা হয়। চারটি ইন হলো- লিংকনস্ ইন, গ্রেজ ইন, ইনার টেম্পল এবং মিডল টেম্পল। দ্য অনারেবল সোসাইটি অব লিংকনস্ ইন সবচেয়ে বড় এবং সদস্য সংখ্যা বেশি। দ্বিতীয় বৃহত্তম ইন হলো- ইনার টেম্পল।
মাহাবুবুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতিসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ইউকের ন্যাশনাল ইউনিয়ন অব জার্নালিস্ট, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সদস্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়াকালীন ২০০১ সালে তিনি সাংবাদিকতা পেশায় জড়িয়ে পড়েন। এরপর তিনি বাংলাদেশের দৈনিক আমার দেশ, বাংলাবাজার পত্রিকা, ইউকের প্রভাবশালী সংবাদপত্র দ্য গার্ডিয়ান এবং সর্বশেষ রয়টার্সে কাজ করেছেন। সাংবাদকিতা জীবনে তিনি যেমন বেশকটি পুরস্কার পেয়েছেন, তেমনি অনুসন্ধানী রিপোর্ট লিখতে গিয়ে জীবন হুমকির মধ্যে পড়ে।
২০১৩ সালে জাতিসংঘ সম্মেলন কভার করতে গিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভুয়া সাউথ সাউথ পুরস্কারের তথ্য ফাঁস করে তিনি আলোচিত হন এবং জীবন হুমকির মধ্যে পড়ে।এরপর তাকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়।
তিনি একজন পেশাদার সাংবাদিক থেকে আইন পেশায় যুক্ত হন ২০১৫ সালে। প্রথমে তিনি ইউকের সিটিজেন অ্যাডভাইস বু্যারোতে অ্যাডমিনিস্ট্রেটর হিসেবে কাজ করেন। এরপর তিনি লন্ডনের জেএস সলিসিটর ফার্মে প্যারা লিগাল হিসেবে কাজ করেন। তিনি লন্ডনের অন্যতম স্বনামধন্য ব্যারিস্টার চেম্বার গার্ডেন কোর্ট চেম্বারে খ্যাতিমান বিচারপতি ও ব্যারিস্টার মার্ক সায়েমসে্র সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন। কনসালটেন্ট সলিসিটর হিসেবে কাজ করেছেন আরেকটি স্বনামধন্য সলিসিটর ফার্ম ডিপলট সলিসিটর্সে।
আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ, মানবাধিকার, অ্যাসাইলাম ও ইমিগ্রেশন এবং মানি লন্ডারিং বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যারিস্টার মাহাবুবুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর ব্রিটেনের ওয়েস্ট মিনিস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি গ্র্যাজুয়েশন ডিপ্লোমা ইন ল’ এবং লিগ্যাল প্র্যাকটিস কোর্স সম্পন্ন করেন।
তিনি বিপিপি ইউনিভার্সিটি থেকে সিভিল আইনের ওপর হাইয়ার রাইটস্ অব অডিয়েন্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। এ ছাড়া তিনি ২০১৮ সালে সুইডেনের স্টক হোম ইউনিভার্সিটি এবং হেগের আন্তর্জাতিক ক্রিমিনাল কোর্টের যৌথ প্রজেক্টে কার্যবিধি এবং সমকালীন বিচারকার্যের ওপরে গবেষণা সম্পন্ন করেন। বেলজিয়ামের এন্টওয়ার্প বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ইউরোপীয়ান মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডাইভার্সিটি বিষয়ে কোর্স সম্পন্ন করেছেন।
ইংল্যান্ড ওন্ড ওয়েল্’র একজন প্র্যাকটিসিং সলিসিটর হিসেবে মাহাবুবুর রহমান ২০২১ সাল থেকেই ল’ সোসাইটি ও এসআরএ’র সদস্য। ২০১৮ সাল থেকে তিনি অনারেবল সোসাইটি অব লিংকনস্ ইন-এর সদস্য।