অবৈধভাবে অনুপ্রবেশসহ একাধিক অভিযোগে ভারতে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ৫ নেতাকে কারাগারে পাঠিয়েছে মেঘালয় রাজ্যের একটি আদালত। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) মেঘালয় রাজ্যের পশ্চিম জৈন্তিয়া হিলস জেলার এমলারিয়াং বিচারক আদালত তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে রোববার (৮ ডিসেম্বর) কলকাতার নিউ টাউন এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ৫ নেতাকে গ্রেপ্তার করে শিলং পুলিশ।
তারা হলেন- সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট জেলা পরিষদের অপসারিত সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান, সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি, সিলেট মহানগর যুবলীগের সহসভাপতি আব্দুল লতিফ রিপন, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য ইলিয়াছ আহমদ জুয়েল এবং সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার সিংচাপইড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ছাতক উপজেলা যুবলীগ নেতা সাহাব উদ্দিন সাহেল।
জোয়াই পুলিশ স্টেশনের সাব ইন্সপেক্টর জে কে মাজাও বলেন, ‘বাংলাদেশের ছয় নাগরিকসহ অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে ডাউকি পুলিশ স্টেশনে গত ১৬ আগস্ট একজন ট্রাক ড্রাইভার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ১৯ আগস্ট মামলা রুজু করা হয়। এই মামলায় গত রোববার ৫ জনকে কলকাতা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডাউকি থানায় তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার চারটি ধারা এবং বিদেশি আইনের ১৪ নম্বর ধারায় অভিযোগ করা হয়েছে।
জোয়াই আদালতের আইনজীবী রাম সিং জানান, তাদের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশ, ছিনতাই, জাতীয় সড়কে ডাকাতি, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত ও মারধরের অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগও আনা হয়েছে।
এর ভিত্তিতে তাদেরকে মঙ্গলবার আমলারিয়াং জুডিশিয়াল আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে বলেন, এজাহারে কারো নাম উল্লেখ না থাকলেও তদন্ত সাপেক্ষে এই ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৪ জন পলাতক রয়েছেন। পরে আদালত শুনানি শেষে গ্রেপ্তারকৃতদের জোয়াই কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সিলেট সীমান্তের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলং যান। অভিযুক্তরাও একই সময়ে শিলং যান। শিলং শহরে তারা প্রথমে পুলিশ বাজার এলাকার একটি হোটেলে অবস্থান নেন। পরে শহরের একটি এলাকায় বাসা ভাড়া নেন। ডিসেম্বরে শীতের প্রকোপ বাড়ায় গত ৫ নভেম্বর তারা শিলং থেকে কলকাতায় স্থানান্তরিত হন।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, তারা ভারতে প্রবেশের পর শিলংয়ের লাইমক্রা পুলিশ স্টেশনে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেন এবং ভারতে অবস্থানের অনুমোদন পান। হয়রানির উদ্দেশে তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশ, ছিনতাই ও গাড়ি ভাঙচুরের মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।
জোয়াই আদালতে আসামীদের পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃত সবাই রাজনৈতিক নেতা। বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় তারা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করতে বাধ্য হয়েছেন। আশা করি, আইনি প্রক্রিয়ায় তারা শিগগিরই মুক্তি পাবেন।