জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহত শাহজাহানের নবজাতক সন্তানের দায়িত্ব নিয়েছেন ভোলার জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে শিশুটিকে দেখতে ভোলা শহরের একটি বে-সরকারি ক্লিনিকে নবজাতককে দেখতে যেয়ে অভিভাবক হিসেবে শিশুটির পাশে থাকার কথা জানান তিনি।
জানা গেছে, ভোলার দৌলতখান উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের ছোটধলী গ্রামের মো. শাহজাহান ঢাকায় পাপোশ বিক্রি করতেন। গত ১৮ জুলাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে গুলিতে শহীদ হন তিনি। তখন তার স্ত্রীর গর্ভে ৪ মাসের অনাগত সন্তান।
এর আগে শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকালে শহরের এশিয়া ডক্টরস পয়েন্ট সিজারিয়ান অপারেশনের মধ্যে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। তার নাম রাখা হয়েছে। ওমর ফারুক।
এদিকে শিশুর জন্মের পর মা ফাতেমা বেগমের মুখে হাসি ফুটলেও সন্তানের বাবার কথা বলে কেঁদে ফেলেন তিনি। বাবার আদর্শে সন্তানকে বড় করার স্বপ্ন তার।
শাহজাহানের স্ত্রী ফাতেমা বেগম বলেন, শাহজাহানের স্বপ্ন ছিল ছেলে বা মেয়ে যা হোক না কেন তাকে মাদ্রাসায় পড়াবেন, মৌলভী বানাবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি তার। আজ সন্তান জন্ম নিলো কিন্তু ছেলের মুখ দেখে যেতে পারল না, কোলে নিতেও পারলো না। কি হবে সন্তানের। সরকারের কাছে দাবী সহযোগিতার মাধ্যমে আমাদের পাশে থাকুক।
এদিকে শহীদ পরিবারের ওই নবজাতককে দেখতে বৈষম্য বিরোধী সমন্বয়কদের নিয়ে ক্লিনিকে ছুটে যান ভোলার জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান। শিশুর মাকে ফুলের শুভেচ্ছা জানানো পাশাপাশি উপহার এবং আর্থিক সহায়তা করেন তিনি।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ভোলায় ৪৬ জন শহীদ হয়েছে, তারমধ্যে শাহজাহান অন্যতম। শুরু থেকেই আমরা শহীদ শাহজাহানের অসুস্থ স্ত্রীর পাশে ছিলাম, জেলা প্রশাসন থেকে অনুদান দেয়া হয়েছে। এখন নবজাতকের দায়িত্ব আমরা নিয়েছি, তাদের পাশে থাকবো। একই সাথে সরকারের সহযোগিতাও তাদের দেয়া হবে।
ভোলার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রাহিম ইসলাম ও কামরুন নাহার এনি বলেন, আমাদের শহীদ ভাইয়ের ছেলে পাশে আমরা রয়েছি, ভবিষ্যতেও তাদের খোঁজ খবর রাখবো।
সিজারিয়ান অপারেশন জন্ম নেয়া শিশু এবং তার মা শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন বলে জানান গাইনি চিকিৎসক ডা: আফরোজা বেগম। তিনি বলেন, আমরা তাদের পর্যবেক্ষণ করছি, আপাতত কোন সমস্যা নেই।