স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, জুলাই বিপ্লবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে যারা আহত হয়েছেন তাদের কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে প্রথম পর্যায়ে ১০০ জনকে চাকরি দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার সকালে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান কার্যালয় ও অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) কার্যালয় পরিদর্শন শেষে এ তথ্য জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, তাঁর স্ত্রী ও ছেলের নামে থাকা ২২টি ফ্ল্যাট, ২টি বাড়িসহ সব প্লট ও জমি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন (গালিব) এই আদেশ দেন।
দুদক ও আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, তাঁর স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহীদ ও ছেলে চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সারাফতের স্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের আবেদন করেন দুদকের উপপরিচালক মাসুদুর রহমান। এই আবেদনের সপক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন দুদকের পিপি মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর। শুনানি নিয়ে আদালত তাঁদের নামে থাকা বাড়ি, ফ্ল্যাট, প্লট ও জমি ক্রোকের আদেশ দেন।
আদালতে জমা দেওয়া দুদকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের নামে রাজধানীর গুলশানসহ বিভিন্ন এলাকায় ১০টি ফ্ল্যাট রয়েছে। গুলশান-২–এ রয়েছে ২০ তলাবিশিষ্ট একটি বাড়ি। এর বাইরে পূর্বাচলে সাড়ে সাত কাঠার একটি প্লট রয়েছে। এ ছাড়া গাজীপুর ও বাড্ডায় তাঁর ২৫ কাঠার জমি রয়েছে।
চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহীদের নামে রাজধানীতে পাঁচটি ফ্ল্যাট রয়েছে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সাড়ে সাত কাঠা জমির ওপর চারতলা একটি বাড়িও রয়েছে তাঁর। এর বাইরে তাঁর নামে আরও ১৩ কাঠা জমির সন্ধান পেয়েছে দুদক।
চৌধুরী নাফিস ও আঞ্জুমান আরার ছেলে চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সারাফতের নামে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় থাকা সাতটি ফ্ল্যাট ক্রোক করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৮৮৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সেই অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। এ ছাড়া এই চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, তাঁর স্ত্রী ও ছেলের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাবর সম্পত্তির তথ্য পাওয়া গেছে। দুর্নীতির মাধ্যমে এসব সম্পত্তি অর্জন করা হয়েছে বলে দুদক জানতে পেরেছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আহতদের একেকজনের একেক সমস্যা রয়েছে। সবগুলো বিষয় বিবেচনা করা হচ্ছে। এর আগে এক হাজার শিক্ষার্থীকে ট্রাফিক ডিউটিতে নেওয়ার জন্য প্রোপোজাল লেটার দেওয়া হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা। যারা তিন থেকে চার ঘণ্টা ডিউটি করবেন। এখন পর্যন্ত ৪০০ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
উপদেষ্টা জানান, এর বাইরেও ট্রাফিক ডিউটিতে কাজ করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের নিয়োগের জন্য প্রপোজাল লেটার দেওয়া হয়। আশা করেছিলাম, তাদের অনেককে পাব। কিন্তু আশানুরূপ সাড়া পাইনি। আমরা ৫০০ জনকে দিয়ে শুরু করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন পর্যন্ত ৫০ জনের মতো পেয়েছি।